ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিত্যপণ্যের দামে জ্বালানি তেলের প্রভাব

  • আপডেট সময় : ০১:১৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর তার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে শাকসবজিসহ সবধরনের পণ্যের দাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, চাল ডাল তেল পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই-একটি ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়তি। মুদি দোকান থেকে শুরু করে মাছ বিক্রেতা; সবাই এক সুরে বলছেন, সব জিনিসের দাম বেড়েছে। পণ্যের বাজারে জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখে ভোক্তারা বিরূপ মন্তব্য করছেন। সীমিত আয়ের মানুষেরা ব্যয় সামাল দিতে এখন চাহিদার তুলনায় কমিয়ে বাজার করছেন। প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কম-বেশি বেড়েছে। টমেটোর দাম কেজিতে একলাফে বেড়েছে ৪০ টাকা। টমেটো এখন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এক সপ্তাহে ৪০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। বর্তমান দাম ২০০ টাকা কেজি। শুধু ব্রয়লার মুরগিই নয়, বেড়েছে পাকিস্তানি কক-মুরগির দামও। গত সপ্তাহেও পাকিস্তানি ককের দাম ছিল ২৪৫-২৫০ টাকার মধ্যেই। শুক্রবার (১২ আগস্ট) কক বিক্রি হয় ২৭০-২৭৫ টাকায়। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২০০ টাকা। তবে কেউ কেউ ১৯০ টাকা কেজিও বিক্রি করছেন। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি। রাজধানীর মানিক নগর এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুল ইসলাম বলেন, পাইকারিতে প্রতিদিনই ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। তাই বাধ্য হয়ে তারাও বেশি দামে বিক্রি করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এখন বাজারে এমনিতেই ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে গেছে। এদিকে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও। ডজনে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রথমবারের মতো ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম ১৪৫ টাকায় উঠেছে। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার ব্যবসায়ী রবিউল করিম বলেন, গত সপ্তাহে এক ডজন লাল ডিম ১২৫ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন ১৪৫ টাকা বিক্রি করছি। এছাড়া বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ও পাম-অয়েল কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বোতলজাত সরিষার তেলের লিটার বিক্রি ৩২০ টাকা। বেড়েছে পাম-অয়েলের দামও। গত সপ্তাহে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ১ কেজি পাম-অয়েল। শুক্রবার বিক্রি হয় ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।
টিসিবি বলছে, এক সপ্তাহে প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫.৩১ শতাংশ। অর্থাৎ গত সপ্তাহে যে প্যাকেট আটা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকার মতো। যে দেশি রসুন ৮০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন সেটি ৯০ টাকা। দেশি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকার মতো। আর আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকার মতো। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এই চিনি ৮২ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত।
সবজির বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ইলিশও।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিত্যপণ্যের দামে জ্বালানি তেলের প্রভাব

আপডেট সময় : ০১:১৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২

বিশেষ সংবাদদাতা : দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর তার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে শাকসবজিসহ সবধরনের পণ্যের দাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, চাল ডাল তেল পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই-একটি ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়তি। মুদি দোকান থেকে শুরু করে মাছ বিক্রেতা; সবাই এক সুরে বলছেন, সব জিনিসের দাম বেড়েছে। পণ্যের বাজারে জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখে ভোক্তারা বিরূপ মন্তব্য করছেন। সীমিত আয়ের মানুষেরা ব্যয় সামাল দিতে এখন চাহিদার তুলনায় কমিয়ে বাজার করছেন। প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কম-বেশি বেড়েছে। টমেটোর দাম কেজিতে একলাফে বেড়েছে ৪০ টাকা। টমেটো এখন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এক সপ্তাহে ৪০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। বর্তমান দাম ২০০ টাকা কেজি। শুধু ব্রয়লার মুরগিই নয়, বেড়েছে পাকিস্তানি কক-মুরগির দামও। গত সপ্তাহেও পাকিস্তানি ককের দাম ছিল ২৪৫-২৫০ টাকার মধ্যেই। শুক্রবার (১২ আগস্ট) কক বিক্রি হয় ২৭০-২৭৫ টাকায়। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২০০ টাকা। তবে কেউ কেউ ১৯০ টাকা কেজিও বিক্রি করছেন। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি। রাজধানীর মানিক নগর এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুল ইসলাম বলেন, পাইকারিতে প্রতিদিনই ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। তাই বাধ্য হয়ে তারাও বেশি দামে বিক্রি করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এখন বাজারে এমনিতেই ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে গেছে। এদিকে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও। ডজনে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রথমবারের মতো ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম ১৪৫ টাকায় উঠেছে। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার ব্যবসায়ী রবিউল করিম বলেন, গত সপ্তাহে এক ডজন লাল ডিম ১২৫ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন ১৪৫ টাকা বিক্রি করছি। এছাড়া বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ও পাম-অয়েল কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বোতলজাত সরিষার তেলের লিটার বিক্রি ৩২০ টাকা। বেড়েছে পাম-অয়েলের দামও। গত সপ্তাহে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ১ কেজি পাম-অয়েল। শুক্রবার বিক্রি হয় ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।
টিসিবি বলছে, এক সপ্তাহে প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫.৩১ শতাংশ। অর্থাৎ গত সপ্তাহে যে প্যাকেট আটা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকার মতো। যে দেশি রসুন ৮০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন সেটি ৯০ টাকা। দেশি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকার মতো। আর আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকার মতো। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এই চিনি ৮২ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত।
সবজির বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ইলিশও।