ঢাকা ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসায় ক্যানসারমুক্ত চিকিৎসক

  • আপডেট সময় : ১০:৪২:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : মস্তিষ্কের ক্যানসার আক্রান্ত অস্ট্রেলীয় চিকিৎসক পরীক্ষামূলক এক নতুন পদ্ধতিতে নিজের চিকিৎসা করছেন। তিনি যে ধরনের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত, তাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ে মারা যান। তবে নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই আক্রান্ত চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।
ক্যানসার নিয়ে নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে স্কোলিয়ারের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের এক ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। এতে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এক বছরের কম বাঁচেন।
গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে স্কোলিয়ার বলেছেন, আবারও এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে টিউমারটি ফিরে আসেনি। এক্স পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি!!!’
চিকিৎসক স্কোলিয়ার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রোগতত্ত্ববিদ। ক্যানসারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর স্কোলিয়ার এবং তাঁর সহকর্মী ও বন্ধু জর্জিনা লংকে অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। মেলানোমা ইনস্টিটিউট অস্ট্রেলিয়ার সহপরিচালকেরা এক দশক ধরে ইমিউনোথেরাপি নিয়ে গবেষণা করছেন। এ পদ্ধতিতে শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) ব্যবহার করে ক্যানসার কোষকে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে ক্যানসারের শেষ ধাপে থাকা রোগীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উল্লেখজনক সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অর্ধেক এখন নিরাময় পাচ্ছে। আগে এ হার ১০ শতাংশের কম ছিল। স্কোলিয়ারের মস্তিষ্কের ক্যানসার সারানোর চেষ্টায় এ পদ্ধতিই ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক লংসহ চিকিৎসকদের একটি দল। অধ্যাপক স্কোলিয়ার হলেন মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রথম রোগী, যাঁর চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। মেলানোমা ইনস্টিটিউট অস্ট্রেলিয়াতে অধ্যাপক লং এবং তাঁর চিকিৎসক দল গবেষণা করে দেখেছে, কয়েকটি ওষুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইমিউনোথেরাপি দেওয়া হলে তা অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করে। টিউমার অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। গত বছর স্কোলিয়ারকে অস্ত্রোপচার-পূর্ববর্তী এ থেরাপি দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্কোলিয়ারই হলেন প্রথম রোগী, যাঁকে টিউমারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিশেষ ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে ওষুধের ক্যানসার শনাক্ত করার ক্ষমতা বেড়েছে। স্কোলিয়ারের চিকিৎসায় যে সাফল্য পাওয়া গেছে, তাতে চিকিৎসাজগতে আশার সঞ্চার হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, লং ও স্কোলিয়ারের এ প্রচেষ্টা হয়তো প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় তিন লাখ মানুষের জন্য সহায়ক হবে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসায় ক্যানসারমুক্ত চিকিৎসক

আপডেট সময় : ১০:৪২:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : মস্তিষ্কের ক্যানসার আক্রান্ত অস্ট্রেলীয় চিকিৎসক পরীক্ষামূলক এক নতুন পদ্ধতিতে নিজের চিকিৎসা করছেন। তিনি যে ধরনের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত, তাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ে মারা যান। তবে নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই আক্রান্ত চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।
ক্যানসার নিয়ে নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে স্কোলিয়ারের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের এক ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। এতে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এক বছরের কম বাঁচেন।
গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে স্কোলিয়ার বলেছেন, আবারও এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে টিউমারটি ফিরে আসেনি। এক্স পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি!!!’
চিকিৎসক স্কোলিয়ার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রোগতত্ত্ববিদ। ক্যানসারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর স্কোলিয়ার এবং তাঁর সহকর্মী ও বন্ধু জর্জিনা লংকে অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। মেলানোমা ইনস্টিটিউট অস্ট্রেলিয়ার সহপরিচালকেরা এক দশক ধরে ইমিউনোথেরাপি নিয়ে গবেষণা করছেন। এ পদ্ধতিতে শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) ব্যবহার করে ক্যানসার কোষকে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে ক্যানসারের শেষ ধাপে থাকা রোগীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উল্লেখজনক সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অর্ধেক এখন নিরাময় পাচ্ছে। আগে এ হার ১০ শতাংশের কম ছিল। স্কোলিয়ারের মস্তিষ্কের ক্যানসার সারানোর চেষ্টায় এ পদ্ধতিই ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক লংসহ চিকিৎসকদের একটি দল। অধ্যাপক স্কোলিয়ার হলেন মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রথম রোগী, যাঁর চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। মেলানোমা ইনস্টিটিউট অস্ট্রেলিয়াতে অধ্যাপক লং এবং তাঁর চিকিৎসক দল গবেষণা করে দেখেছে, কয়েকটি ওষুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইমিউনোথেরাপি দেওয়া হলে তা অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করে। টিউমার অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। গত বছর স্কোলিয়ারকে অস্ত্রোপচার-পূর্ববর্তী এ থেরাপি দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্কোলিয়ারই হলেন প্রথম রোগী, যাঁকে টিউমারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিশেষ ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে ওষুধের ক্যানসার শনাক্ত করার ক্ষমতা বেড়েছে। স্কোলিয়ারের চিকিৎসায় যে সাফল্য পাওয়া গেছে, তাতে চিকিৎসাজগতে আশার সঞ্চার হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, লং ও স্কোলিয়ারের এ প্রচেষ্টা হয়তো প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় তিন লাখ মানুষের জন্য সহায়ক হবে।