ফারজানা কাশেমী : বুকের বাম পাঁজর এক অস্পর্শ অনুভূতি। ভাললাগা, ভালবাসা, শোক, দুঃখ, রাগ, মান,অভিমান যেন সব ধারনের গহিন স্থল। আবেগ, অনুভূতি,সুখ, দুঃখ, মায়া,মমতা সব প্রকাশ অতি যতেœ লালিত হয়। পরম আরাধ্যে প্রতিটি জীবন এই অস্পর্শ অনুভূতির সঞ্চারক। হাজারো জানা অজানা কারণের অসংখ্য অনুভূতির স্পন্দন অনুভব করে বুকের বাম পাঁজর। কখনো স্বপ্নময় স্বপ্নের দোলাচলে স্পন্দিত হয়। আবার ঘূর্নিপাকের অতলে বিপর্যয় ক্রমান্বয়ে নিমজ্জিত হয়। আহারে মানব জীবন! এই অল্প আয়োজনের সমাহারে কত বিচিত্র আচ্ছাদন। উপলব্ধি, উদ্বেগ ,উপেক্ষা। যেন প্রসেচ্ছনের এক অবিরাম ক্রিয়া কৌশল।
বিশ্বাসে, নির্ভরতায়, ভাললাগায়, ভালোবাসায় আশার সঞ্চারে একজন মানুষ অন্য মানুষকে সহ মানুষ ভাবে। আপন ভাবতে চায়। পরম আপন অনুভব করে। ক্ষণিকের দোলাচলে সকল স্পন্দন, অনুভূতি যেন মুহূর্তে নিঃশেষ। বিপরীত চিত্রের এক উপস্থাপন। কখনো সময়ের প্রয়োজনে বা স্বার্থের জন্য অথবা অলিক মোহ। ভিন্নতর আকর্ষনের এক ধ্রুপদী অভিনবত্বে অনুভূতির পরিবর্তন হয়। সময়ের স্রোতশীল ধারায় নিতান্ত বাস্তবতায় মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়। গতিশীল ধারায় পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন বা বিয়োজন যুগ উপযোগী চাহিদা সর্বোস। সময়ের তালে সামনে পথচলার দিক নিদর্শনে মানুষ কে এগিয়ে যেতে হয় বেঁচে থাকার নিয়মে। স্রোতশীল নিয়মতান্ত্রিক জীবনে পরিবর্তন কখনো কাক্ষিত। যোজন বা বিয়োজনের নিয়মে অভ্যাস নামক ধারাবাহিকতার পরিবর্তন সময়ের প্রয়োজন সাদৃশ্য। মানুষ নামক জীবের আর্বিভাব ও ডারইনের বির্বতন তত্ত্ব অনুসারে মানুষ পরিবর্তনের রুপান্তরিত রুপ। জীবনে বেচে থাকার জন্য, সময়ের ব্যবধানে হাজারো পরিবর্তনের অনুঘটক হয় মানুষ। শিশু,কৈশোর, তারুণ্য,যৌবন বার্ধক্য সব পরিবর্তন এক জীবনের বৈচিত্র রুপ। তাই সময় তার সময়ের অনুসাংগিক চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন প্রবাহমান জীবনের অংশ। পরিবর্তন কে গড্ডালিকা প্রবাহ সাদৃশ্য তুল্য হয় না।
যাপিত জীবনের নিয়মে পরিবর্তনের মাত্রা গুরুত্ববহ নিয়ামক। সময়ের ধারায় নিজের অস্তিত্ব কে ধারণ ও বহন করে মানিয়ে নেওয়াই পরিবর্তন। নিজের বোধ, বুদ্ধি, বিবেক,চিন্তা, ধারা বির্সজন পরিবর্তনের অংশ হয় না। কারো মন রঞ্জন, মনোপুতো উপস্থাপন স্বকীয়তা অস্বীকার করা, নতি স্বীকার কখনো পরিবর্তনের কাক্ষিত লক্ষ্য হিসেবে সমাদৃত হয় না। স্বেচ্ছায় যেই বৈশিস্ট্য সমূহে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় তাই পরিবর্তন।
পরিবর্তন হেতু যদি কোন সম্পর্ক ভেঙে যায়, তা আসলে ভালবাসার সম্পর্ক কখনোই ছিলনা। কারো বুকের বাম পাঁজর যদি পরিবর্তন অর্জিত না হওয়ার জন্য পরিবর্তিত হয় তা ভালবাসার হিসেবে সমাদৃত হয় না। ভালবাসার জন্য পরিবর্তন হতে হয় না। যা ভুল, অশুদ্ধ, অগোছালো, তা মেনে নেওয়া ভালবাসা। ভালবাসা মানে নিজের স্বকীয়তা অস্বীকার করা নয়। কারো কাক্ষিত ভালবাসার জন্য নিজের পরিবর্তন মানে শুধু সময়ের সাথে খোলস পরিবর্তন । নিজের ভাললাগা, ইচ্ছে, অনিচ্ছা সবটুকু বির্সজন দেওয়া নামাত্বর ভালবাসা হিসেবে গন্য হয় না,সময়ের উপকরণ হিসেবে তুল্য হয়।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ
নিজেকে ভালবাসুন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ