নিজস্ব প্রতিবেদক : নিউ মার্কেটের দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সময় ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকা কলেজের ৫ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আকতার বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- কাইয়ুম, পলাশ মিয়া, মাহমুদ ইফরান, ফয়সল ইসলাম এবং জুনায়েদ। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন দুদিন আগে জানিয়েছিলেন, নাহিদ হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে তারা চিহ্নিত করেছেন, তারা সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্র। ঘটনার সময় কয়েকজন হেলমেট পরা ছিল। মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত রোবাবার ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়েছিল। তখন এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশ্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভিডিও বিশ্লেষণ করে কয়েকজনের নাম আগেই সংবাদমাধ্যমের খবরে এসেছিল। তারা সবাই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই এখন। ২০১৬ সালে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলও তারা আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। কলেজের ছাত্রলীগ এখন কয়েকটি ভাগে বিভক্ত।
গত ১৮ এপ্রিল ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে নিউ মার্কেটের দুই দোকানের কর্মীদের বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে। তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ। ওই সংঘর্ষ চলে পরদিনও। দিনভর সংঘর্ষের সময় ডেলিভারিম্যান নাহিদকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান। একইদিনে সংঘর্ষের সময় দুপুরের দিকে নুরজাহান মার্কেটের সামনে ইটের আঘাতে আহত হন মোরসালিন। দুদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়। নাহিদ হত্যার পাশাপাশি মোরসালিন হত্যা মামলার তদন্তভারও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। তবে মোরসালিনের খুনিদের এখনও শনাক্ত করতে পারেননি তদন্তকারীরা। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মোরসালিন হত্যা এখন পর্যন্ত ক্লুলেস।ৃ প্রাথমিকভাবে তথ্য-প্রমাণে এটাই নিশ্চিত হয়েছি যে, মোরসালিন ইটের আঘাতে মারা গেছেন। সুনির্দিষ্টভাবে ওই ইটটি কোথা থেকে এসেছে তা নির্দিষ্ট করা যায়নি।” সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলাসহ সংঘর্ষ এবং বোমাবাজির ঘটনায় মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের মামলায় নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ : নাহিদ হত্যায় ঢাকা কলেজের ৫ ছাত্র গ্রেপ্তার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ