ঢাকা ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: তিন মামলায় আসামি সহস্রাধিক

  • আপডেট সময় : ১২:১১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত মঙ্গলবার সকাল থেকে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। খাবারের দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে সোমবার রাতে এক দফা সংঘর্ষ হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
মঙ্গলবার সকাল থেকে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। খাবারের দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে সোমবার রাতে এক দফা সংঘর্ষ হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১৪ শ মানুষকে আসামি করে তিনটি মামলা হয়েছে।
এর মধ্যে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা করেছেন নিউ মার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান। একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাওপোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছেন।
আর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়ার চাচা মো. সাঈদ দায়ের করেছেন একটি হত্যা মামলা।
নিউ মার্কেট থানার ওসি শ ম কাইয়ুম বলেন, বুধবার রাতেই মামলা তিনটি রেকর্ড করা হয়। মেহেদী হাসানের মামলায় আসামি ১৫০ থেকে ২০০ জন, সাঈদের মামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আর ইয়ামিন কবিরের করা মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে নিউ মার্কেটের অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী ও কর্মী এবং ৬০০-৭০০ কলেজ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে কাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে জানতে হাইলে ওসি বলেন, “তাদের নাম এসেছে উসকানি দাতা হিসেবে। বিস্তারিত এখন বলা যাচ্ছে না।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের রক্তক্ষয়ী ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল গত সোমবার রাতে নিউ মার্কেটের একটি খাবারের দোকানে ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র মারধরের শিকার হওয়ার পর।
দোকান মালিকরা জানান, দুই দোকানের কর্মীদের বচসা থেকে এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে।
তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ।
গত মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে নাহিদ মিয়া নামের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে রাস্তার ওপর কোপানো হয়।
এলিফ্যান্ট রোডের ডাটা টেক কম্পিউটার নামের একটি দোকানের ডেলিভারি অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন নাহিদ। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহিদের মাথার বাম পাশে পাশাপাশি চারটি কাটা জখম ছিল, জখমগুলো দুই থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি লম্বা। চারটি জখমে ২৩টি সেলাই দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
পিঠের বাম পাশে পাশাপাশি তিনটি কাটা জখম। যার প্রত্যেকটি পাঁচ ইঞ্চি করে লম্বা। বাঁ পায়ের গোড়ালির নিচে কাটা জখমেও পাঁচটি সেলাই লেগেছিল, এছাড়া উভয় পায়ের বিভিন্ন জায়গায় নীল-ফোলা কালা জখম ছিল। নাক, মুখের ছোলা জখম ছিল।
মঙ্গলবার সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে আহত মোরসালিন নামের এক দোকান কর্মচারীও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বৃহস্পতিবার ভোরে। এ বিষয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি থানায়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: তিন মামলায় আসামি সহস্রাধিক

আপডেট সময় : ১২:১১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত মঙ্গলবার সকাল থেকে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। খাবারের দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে সোমবার রাতে এক দফা সংঘর্ষ হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
মঙ্গলবার সকাল থেকে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। খাবারের দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে সোমবার রাতে এক দফা সংঘর্ষ হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১৪ শ মানুষকে আসামি করে তিনটি মামলা হয়েছে।
এর মধ্যে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা করেছেন নিউ মার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান। একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাওপোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছেন।
আর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়ার চাচা মো. সাঈদ দায়ের করেছেন একটি হত্যা মামলা।
নিউ মার্কেট থানার ওসি শ ম কাইয়ুম বলেন, বুধবার রাতেই মামলা তিনটি রেকর্ড করা হয়। মেহেদী হাসানের মামলায় আসামি ১৫০ থেকে ২০০ জন, সাঈদের মামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আর ইয়ামিন কবিরের করা মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে নিউ মার্কেটের অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী ও কর্মী এবং ৬০০-৭০০ কলেজ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে কাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে জানতে হাইলে ওসি বলেন, “তাদের নাম এসেছে উসকানি দাতা হিসেবে। বিস্তারিত এখন বলা যাচ্ছে না।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের রক্তক্ষয়ী ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল গত সোমবার রাতে নিউ মার্কেটের একটি খাবারের দোকানে ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র মারধরের শিকার হওয়ার পর।
দোকান মালিকরা জানান, দুই দোকানের কর্মীদের বচসা থেকে এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে।
তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ।
গত মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে নাহিদ মিয়া নামের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে রাস্তার ওপর কোপানো হয়।
এলিফ্যান্ট রোডের ডাটা টেক কম্পিউটার নামের একটি দোকানের ডেলিভারি অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন নাহিদ। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহিদের মাথার বাম পাশে পাশাপাশি চারটি কাটা জখম ছিল, জখমগুলো দুই থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি লম্বা। চারটি জখমে ২৩টি সেলাই দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
পিঠের বাম পাশে পাশাপাশি তিনটি কাটা জখম। যার প্রত্যেকটি পাঁচ ইঞ্চি করে লম্বা। বাঁ পায়ের গোড়ালির নিচে কাটা জখমেও পাঁচটি সেলাই লেগেছিল, এছাড়া উভয় পায়ের বিভিন্ন জায়গায় নীল-ফোলা কালা জখম ছিল। নাক, মুখের ছোলা জখম ছিল।
মঙ্গলবার সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে আহত মোরসালিন নামের এক দোকান কর্মচারীও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বৃহস্পতিবার ভোরে। এ বিষয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি থানায়।