আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের পাতাল ট্রেনে ঘুমিয়ে থাকা এক নারীর গায়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওই নারী ব্রুকলিনের কনি আইল্যান্ড-স্টিলওয়েল অ্যাভিনিউ সাবওয়ে স্টেশনে থেমে থাকা একটি এফ ট্রেনের ভেতরে বসে ছিলেন, সম্ভবত তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি শান্তভাবে তার কাছে এসে লাইটার দিয়ে তার পরনের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার আগে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ হয়নি আর তাদের বিশ্বাস, এরা দুইজন পরস্পরকে চিনতেন না। স্টেশনে টহলরত পুলিশ কর্মকর্তারা আগুন দেখে ছুটে আসলে ওই ব্যক্তি ট্রেনের কামরা থেকে নেমে যান।
এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, “তারা (পুলিশ) গিয়ে দেখেন ট্রেনের কামরার ভেতরে দাঁড়ানো এক ব্যক্তির সারা শরীরে আগুন জ্বলছে।” সামাজিক মাধ্যমে এক আতঙ্কিত প্রত্যক্ষদর্শীর প্রকাশিত মোবাইলে ফোনের ভিডিওতে দেখা গেছে, জ্বলন্ত ওই নারীর কাছ থেকে কয়েক পা দূরে এক ব্যক্তি প্ল্যাটফর্মের একটি বেঞ্চে বসে আছেন। ওই ব্যক্তির পরনে ছাইরঙা হুডি। রোববার দিনের পরবর্তী সময় পুলিশ যাকে গ্রেপ্তার করেছে তার পরনেও একই পোশাক ছিল, জানিয়েছে রয়টার্স। বেঞ্চে বসা যে লোকটি দেখছিল সেই হামলাকারী কি না জানতে চাইলে পুলিশ বলেছে, পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই নারীকে সাহায্য করতে ছুটে যায় তখন ওই ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন ধরে নেওয়ার মতো কোনো কারণ ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, কর্মকর্তারা অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। কিন্তু ওই নারীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রোববার দিনের পরের সময়ে এক ব্যক্তি পাতাল ট্রেনে ওঠার পর সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এই সন্দেহভাজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখনও নিহতের পরিচয় এবং হামলার কারণ অনুসন্ধান করছে। নিউ ইয়র্কের পাতাল ট্রেনে এ ধরনের সহিংস অপরাধ নতুন নয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত নগরীটির পাতালট্রেনে নয়টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, ২০২৩ সালের একই সময়ে পাঁচটি হত্যার ঘটনা ঘটে।