ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

নারী কর্মকর্তাকে ‘থাপ্পড় দিয়ে’ এলাকাছাড়া করার হুমকি এমপি জলির

  • আপডেট সময় : ০২:২১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

পাবনা প্রতিনিধি : আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমন্ত্রণ জানাতে দেরি হওয়ায়’ পাবনার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ‘থাপ্পড় দিয়ে এলাকা ছাড়া করার’ হুমকি দিয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানেই বিষয়টি তুলে ধরেন। অবশ্য এর আগেই কানিজ আইরিন জাহান, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা এবং সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলির মধ্যে কথপোকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলিকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে আমন্ত্রণপত্র দিতে একটু দেরি হয়।
“সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন চিঠি কেন পাননি জানতে চেয়ে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা আমাকে ফোন করেন। জনতে চান, সংসদ সদস্যকে কেন চিঠি দেওয়া হয়নি?
কানিজ আইরিন জাহান বলেন, “আমি তখন তাকে জানাই যে, সব চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ঠিক এ সময় সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি ভাইস চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ফোন নিয়ে আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে, আমাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনা ছাড়া করবেন বলে ধমক দেন। আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে গালি দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে পাবনা থেকে তাড়াতে পারেন বলেও মন্তব করেন।”
এই কর্মকর্তা বলেন, “আমার কাজে অনিয়ম, ভুল-ক্রুটি পেলে তিনি (সংসদ সদস্য) বকা দিতে পারেন, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু থাপ্পড় দেওয়ার কথা বলতে পারেন না। আমার মা-বাবাও তো কখনও আমাকে থাপ্পড় দেননি।
“অথচ নারী দিবসে আমাকে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হল। আমি এখানে সরকারের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি, নারী দিবসের দিনে থাপ্পড় খেতে নয়। ঘটনার পর থেকে আমি মানসিকভাবে-শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।”
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা যখন এ অভিযোগ করছিলেন, সেই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মোখলেসুর রহমান। পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খানসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
পেছনে টানানো ব্যানারে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমীন জলির নাম রয়েছে। পাবনায় থাকলেও তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখাকেও দেখা যায়নি।
পরে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমীন জলি পাবনার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে বলেন, “আমি কালকে পার্টি অফিস থেকে ফোন দিছি দুইবার। আজকে নারী দিবস। ও আমার ফোন ধরে না। তিনবারের মাথায় যখন ধরল না, তখন শিরিন দিল দুইবার। ধরল না। তখন রেখা দিল দুইবার। তিনবারের বার ও ফোনডা ধরল রেখা আপার।
“রেখা আপা কথা বলতাছে, তখন ও (কর্মকর্তা) বলতাছে, ‘নাহ, আপাকে বলব, সেরকম প্রোগ্রাম না, ছোটখাটো।’ তখন ফোনডা আমি লিছি। লিয়ে বললাম, ‘আপনি আর কত নাটক করবেন? এগুলো কি আপনার চরিত্র! আপনি কী লাইগাইছেন?
“আমি একজন নারী সংসদ সদস্য, পাবনায় থাকা অবস্থায় কেন ইনভাইট করবেন না? সেটা আমি বিশেষ অতিথি হই আর তিন নম্বর অতিথি হই।
“আমার উপরে প্রিন্স (পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স) আছে, ও যদি থাকে প্রধান অতিথি হবে, আমি বিশেষ অতিথি হব। আমাকে যেখানে লিয়ে যাবেন সেখানে আমি থাকব। কিন্তু, আপনি কেন আমাকে ইনভাইট করলেন না, সেটা আগে বলেন? আপনি কী লাগাইছেন কী! তখন বলে, না আপা, এমন এমন লাগাইছেৃ ’
“তখন আমি বলছি, শোনেন, আপনার মত মানুষ এতদিন রয়েছে, পাবনার লোক ভাল বলে রয়েছে। আপনাকে আসলে থাপ্পড় দিয়ে এলাকাছাড়া করা উচিত। বুঝছ?”
সরকারি একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এমন আচরণ করায় ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে কি-না জানতে চাইলে সংসদ সদস্য বলেন, “আমার ক্ষমতার অপব্যবহার হবে কেন? আমার প্রতিটি মেয়েকে নিয়ে কন্টিনিউয়াসলি ইয়ে করতেছে। তুমি কী বুঝাতে চাচ্ছ আমাকে? আমার ক্ষমতার অপব্যবহার হবে কেন? ও (কর্মকর্তা) প্রত্যেকটা জিনিস লিয়ে কেন এরকম করছে।”
নারী দিবসের অনুষ্ঠানের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।”
ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, প্রথমে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে সংসদ সদস্য জলিকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সে বিষয়ে জানতে চান। তখন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানালে বাসায় কেন লোক পাঠানো হয়নি বা ফোন করা হয়নি তা জানতে চান।
এক পর্যায়ে, সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি সেই ফোন নিয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বলেন, “এই আপনি কী হয়েছেন? আপনি নারী হয়ে নারীদের সম্মান করেন না। আপনাকে এক থাপ্পড় মেরে পাবনা ছাড়া করব কিন্তু! আপানার খুব বেশি আস্পর্দা হয়েছে, প্রত্যেকটা মেয়ের সঙ্গে আপনি খারাপ ব্যবহর করেন! এই লিজ দিছি আপনাকে না? লিজ দিছি? ৃ মহিলা কোথাকার। সবকিছুর মধ্যে নিজেকে দুর্নীতির মধ্যে জড়াচ্ছেন, আপনে একটা অফিসার হয়ে।
“কালকে একটা নারী দিবস, আপনাকে বলে দিতে হবে না আমাকে ইনভাইট করবেন। ৃ মহিলা, আপনাকে এমপির বাসায় আসতে হবে, এসে দাওয়াত করতে হবে। কালকে যদি প্রোগ্রামে দাওয়াত না পাই, আপনাকে আমি পাবনা ছাড়া করার ব্যবস্থা করব। আপনাকে ছাড়া করতে আমার ১০ মিনিটের ব্যাপার।”
ভাইরাল হওয়া অডিওর বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংরক্ষিত আসনের এই নারী সংসদ সদস্য বলেন, “ও হচ্ছে ডেঞ্জারাস মহিলা বুঝলা, আর কিচ্ছু করতাছে না। প্রিন্সের ফোন রেকর্ড করে। রেখা আপার ফোন রেকর্ড করে। শিরিনের ফোন রেকর্ড করে। ও কন্টিনিউয়াস রেকর্ড করে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নারী কর্মকর্তাকে ‘থাপ্পড় দিয়ে’ এলাকাছাড়া করার হুমকি এমপি জলির

আপডেট সময় : ০২:২১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২

পাবনা প্রতিনিধি : আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমন্ত্রণ জানাতে দেরি হওয়ায়’ পাবনার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ‘থাপ্পড় দিয়ে এলাকা ছাড়া করার’ হুমকি দিয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানেই বিষয়টি তুলে ধরেন। অবশ্য এর আগেই কানিজ আইরিন জাহান, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা এবং সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলির মধ্যে কথপোকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলিকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে আমন্ত্রণপত্র দিতে একটু দেরি হয়।
“সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন চিঠি কেন পাননি জানতে চেয়ে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা আমাকে ফোন করেন। জনতে চান, সংসদ সদস্যকে কেন চিঠি দেওয়া হয়নি?
কানিজ আইরিন জাহান বলেন, “আমি তখন তাকে জানাই যে, সব চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ঠিক এ সময় সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি ভাইস চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ফোন নিয়ে আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে, আমাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনা ছাড়া করবেন বলে ধমক দেন। আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে গালি দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে পাবনা থেকে তাড়াতে পারেন বলেও মন্তব করেন।”
এই কর্মকর্তা বলেন, “আমার কাজে অনিয়ম, ভুল-ক্রুটি পেলে তিনি (সংসদ সদস্য) বকা দিতে পারেন, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু থাপ্পড় দেওয়ার কথা বলতে পারেন না। আমার মা-বাবাও তো কখনও আমাকে থাপ্পড় দেননি।
“অথচ নারী দিবসে আমাকে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হল। আমি এখানে সরকারের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি, নারী দিবসের দিনে থাপ্পড় খেতে নয়। ঘটনার পর থেকে আমি মানসিকভাবে-শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।”
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা যখন এ অভিযোগ করছিলেন, সেই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মোখলেসুর রহমান। পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খানসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
পেছনে টানানো ব্যানারে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমীন জলির নাম রয়েছে। পাবনায় থাকলেও তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখাকেও দেখা যায়নি।
পরে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমীন জলি পাবনার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে বলেন, “আমি কালকে পার্টি অফিস থেকে ফোন দিছি দুইবার। আজকে নারী দিবস। ও আমার ফোন ধরে না। তিনবারের মাথায় যখন ধরল না, তখন শিরিন দিল দুইবার। ধরল না। তখন রেখা দিল দুইবার। তিনবারের বার ও ফোনডা ধরল রেখা আপার।
“রেখা আপা কথা বলতাছে, তখন ও (কর্মকর্তা) বলতাছে, ‘নাহ, আপাকে বলব, সেরকম প্রোগ্রাম না, ছোটখাটো।’ তখন ফোনডা আমি লিছি। লিয়ে বললাম, ‘আপনি আর কত নাটক করবেন? এগুলো কি আপনার চরিত্র! আপনি কী লাইগাইছেন?
“আমি একজন নারী সংসদ সদস্য, পাবনায় থাকা অবস্থায় কেন ইনভাইট করবেন না? সেটা আমি বিশেষ অতিথি হই আর তিন নম্বর অতিথি হই।
“আমার উপরে প্রিন্স (পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স) আছে, ও যদি থাকে প্রধান অতিথি হবে, আমি বিশেষ অতিথি হব। আমাকে যেখানে লিয়ে যাবেন সেখানে আমি থাকব। কিন্তু, আপনি কেন আমাকে ইনভাইট করলেন না, সেটা আগে বলেন? আপনি কী লাগাইছেন কী! তখন বলে, না আপা, এমন এমন লাগাইছেৃ ’
“তখন আমি বলছি, শোনেন, আপনার মত মানুষ এতদিন রয়েছে, পাবনার লোক ভাল বলে রয়েছে। আপনাকে আসলে থাপ্পড় দিয়ে এলাকাছাড়া করা উচিত। বুঝছ?”
সরকারি একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এমন আচরণ করায় ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে কি-না জানতে চাইলে সংসদ সদস্য বলেন, “আমার ক্ষমতার অপব্যবহার হবে কেন? আমার প্রতিটি মেয়েকে নিয়ে কন্টিনিউয়াসলি ইয়ে করতেছে। তুমি কী বুঝাতে চাচ্ছ আমাকে? আমার ক্ষমতার অপব্যবহার হবে কেন? ও (কর্মকর্তা) প্রত্যেকটা জিনিস লিয়ে কেন এরকম করছে।”
নারী দিবসের অনুষ্ঠানের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।”
ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, প্রথমে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে সংসদ সদস্য জলিকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সে বিষয়ে জানতে চান। তখন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানালে বাসায় কেন লোক পাঠানো হয়নি বা ফোন করা হয়নি তা জানতে চান।
এক পর্যায়ে, সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি সেই ফোন নিয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বলেন, “এই আপনি কী হয়েছেন? আপনি নারী হয়ে নারীদের সম্মান করেন না। আপনাকে এক থাপ্পড় মেরে পাবনা ছাড়া করব কিন্তু! আপানার খুব বেশি আস্পর্দা হয়েছে, প্রত্যেকটা মেয়ের সঙ্গে আপনি খারাপ ব্যবহর করেন! এই লিজ দিছি আপনাকে না? লিজ দিছি? ৃ মহিলা কোথাকার। সবকিছুর মধ্যে নিজেকে দুর্নীতির মধ্যে জড়াচ্ছেন, আপনে একটা অফিসার হয়ে।
“কালকে একটা নারী দিবস, আপনাকে বলে দিতে হবে না আমাকে ইনভাইট করবেন। ৃ মহিলা, আপনাকে এমপির বাসায় আসতে হবে, এসে দাওয়াত করতে হবে। কালকে যদি প্রোগ্রামে দাওয়াত না পাই, আপনাকে আমি পাবনা ছাড়া করার ব্যবস্থা করব। আপনাকে ছাড়া করতে আমার ১০ মিনিটের ব্যাপার।”
ভাইরাল হওয়া অডিওর বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংরক্ষিত আসনের এই নারী সংসদ সদস্য বলেন, “ও হচ্ছে ডেঞ্জারাস মহিলা বুঝলা, আর কিচ্ছু করতাছে না। প্রিন্সের ফোন রেকর্ড করে। রেখা আপার ফোন রেকর্ড করে। শিরিনের ফোন রেকর্ড করে। ও কন্টিনিউয়াস রেকর্ড করে।