নারী ও শিশু ডেস্ক: জেসমিন পাথেইয়া শুধু একজন শিল্পী কিংবা উদ্যোক্তা নন; তিনি ভারতের রাস্তায় নারীদের প্রতি হয়রানি এবং লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার এক সাহসী কণ্ঠস্বর। কলেজজীবনে নিজে রাস্তায় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। ওই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, পরিবর্তন আনার জন্য শুধু ক্ষোভ বা অভিযোগ যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন সচেতনতা, সংগঠিত প্রচেষ্টা ও সমাজের সমর্থন। এই উপলব্ধি থেকে ২০০৩ সালে শুরু করেন ‘ব্ল্যাংক নয়েজ’ নামের একটি সামাজিক আন্দোলন। এটি নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভুক্তভোগীদের সমর্থন দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
১৯৭৯ সালের ১১ নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন জেসমিন পাথেইয়া। তিনি বেঙ্গালুরুর সৃষ্টি স্কুল অব আর্ট, ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ফাইন আর্টসে স্নাতক সম্পন্ন করেন। কলেজজীবনে রাস্তায় নারীদের প্রতি হয়রানির অভিজ্ঞতা তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম: ব্ল্যাংক নয়েজ মূলত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নারীদের প্রতি হয়রানি, লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতা এবং ভিকটিম ব্লেমিংয়ের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই সংগঠন বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে সচল আছে ব্ল্যাংক নয়েজ। মূলত এই সংগঠন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। ব্ল্যাংক নয়েজের কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেক নারীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা কমানোর লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি: জেসমিন পাথেইয়া ও ব্ল্যাংক নয়েজ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছে। ২০১৫ সালে ‘টক টু মি’ প্রকল্পের জন্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড অব পাবলিক আর্ট লাভ করে। ২০১৭ সালে সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউর অব দ্য ইয়ার পুরস্কারে ভূষিত জেসমিন। এ ছাড়া তিনি অশোক ফেল ও টিইডি ফেল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
জেসমিন পাথেইয়া ব্ল্যাংক নয়েজের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে চান। তিনি একটি নিরাপদ এবং সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো এই আন্দোলনকে আরও বিস্তৃত করা এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সূত্র: ব্ল্যাংক নয়েজ ডট ওআরজি।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ