ঢাকা ১২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ নেতা-কর্মী রিমান্ডে

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের গ্রেপ্তার ১০ নেতা-কর্মীকে এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেনের আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে প্রত্যেকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান। যাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মধ্য নরসিংহপুর এলাকার মো. আবদুল সাত্তার (২২), নারায়ণগঞ্জ সদর থানার আলীরকেট ইউনিয়নের ডিক্রিরচর এলাকার মো. মজিবুর রহমান (৫২), শহরের পালপাড়ার রঞ্জন কুমার দেবনাথ (৩৬), রূপগঞ্জ থানার সিংলাবো এলাকার রাজিব (৩৮), সোনারগাঁ মেঘনাঘাট এলাকার মো. জনি (৩৮), বন্দর থানার মদনপুর উত্তর এলাকার মো. বাদল (৩৩), আড়াইহাজার থানার রামচন্দ্রী এলাকার মো. আবুল কালাম ভূঁইয়া (৪৮), সোনারগাঁ বউবাজার মেঘনাঘাট এলাকার রিমন (২২), ইমন (১৮) ও আড়াইহাজার ময়নাবাজ এলাকার মো. সোহান (১৫)।
রিজভীর করা মামলার আবেদন খারিজ করলেন আদালত : নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ সুপারসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ২১৩ ধারা মোতাবেক আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকল গণমাধ্যম বলেছে, পুলিশ গুলি করেছে। সেই সব ঘটনা দরখাস্তে উল্লেখ করে প্রমাণসহ আদালতে দাখিল করেছি আমরা। তবে সেটিকে আমলে না নিয়ে খারিজ করে দেওয়াটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এখানে কারও চাপ উপেক্ষা করতে না পেরে তিনি বেআইনিভাবে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের এই আদেশ আইনের পরিপন্থী। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে শোভাযাত্রা শুরুর আগে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় রাইফেল দিয়ে গুলি করতে দেখা যায় ডিবির এসআই মাহফুজুর রহমানকে। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় এর আগে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় একই আদালতে আজ সকালে ৪২ জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০–১০০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকার আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে আসার পথে সরকারি ইন্ধনে মামলার বিবাদীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাধা দেন। একপর্যায়ে হাজারো নেতা-কর্মী সমবেত হলে আসামিরা নিজেদের আইনগত দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারতে শুরু করেন। এরপর বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেন। আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান তাঁর হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে যুবদল কর্মী শাওন লুটিয়ে পড়েন। বিবাদীরা এলোপাতাড়ি গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে ছাত্রদল নেতা ফারুক আহম্মেদের বুক ঝাঁঝরা হয়। তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া আরও প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এটা স্পষ্ট যে বিবাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন, যা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি থেকে স্পষ্ট। মামলার আবেদনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেনসহ ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ নেতা-কর্মী রিমান্ডে

আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের গ্রেপ্তার ১০ নেতা-কর্মীকে এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেনের আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে প্রত্যেকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান। যাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মধ্য নরসিংহপুর এলাকার মো. আবদুল সাত্তার (২২), নারায়ণগঞ্জ সদর থানার আলীরকেট ইউনিয়নের ডিক্রিরচর এলাকার মো. মজিবুর রহমান (৫২), শহরের পালপাড়ার রঞ্জন কুমার দেবনাথ (৩৬), রূপগঞ্জ থানার সিংলাবো এলাকার রাজিব (৩৮), সোনারগাঁ মেঘনাঘাট এলাকার মো. জনি (৩৮), বন্দর থানার মদনপুর উত্তর এলাকার মো. বাদল (৩৩), আড়াইহাজার থানার রামচন্দ্রী এলাকার মো. আবুল কালাম ভূঁইয়া (৪৮), সোনারগাঁ বউবাজার মেঘনাঘাট এলাকার রিমন (২২), ইমন (১৮) ও আড়াইহাজার ময়নাবাজ এলাকার মো. সোহান (১৫)।
রিজভীর করা মামলার আবেদন খারিজ করলেন আদালত : নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ সুপারসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ২১৩ ধারা মোতাবেক আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকল গণমাধ্যম বলেছে, পুলিশ গুলি করেছে। সেই সব ঘটনা দরখাস্তে উল্লেখ করে প্রমাণসহ আদালতে দাখিল করেছি আমরা। তবে সেটিকে আমলে না নিয়ে খারিজ করে দেওয়াটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এখানে কারও চাপ উপেক্ষা করতে না পেরে তিনি বেআইনিভাবে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের এই আদেশ আইনের পরিপন্থী। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে শোভাযাত্রা শুরুর আগে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় রাইফেল দিয়ে গুলি করতে দেখা যায় ডিবির এসআই মাহফুজুর রহমানকে। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় এর আগে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় একই আদালতে আজ সকালে ৪২ জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০–১০০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকার আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে আসার পথে সরকারি ইন্ধনে মামলার বিবাদীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাধা দেন। একপর্যায়ে হাজারো নেতা-কর্মী সমবেত হলে আসামিরা নিজেদের আইনগত দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারতে শুরু করেন। এরপর বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেন। আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান তাঁর হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে যুবদল কর্মী শাওন লুটিয়ে পড়েন। বিবাদীরা এলোপাতাড়ি গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে ছাত্রদল নেতা ফারুক আহম্মেদের বুক ঝাঁঝরা হয়। তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া আরও প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এটা স্পষ্ট যে বিবাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন, যা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি থেকে স্পষ্ট। মামলার আবেদনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেনসহ ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল।