ক্রীড়া প্রতিবেদক : সবচেয়ে ভয়ের সময়টা আস্থার সঙ্গে খেলে কাটিয়ে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকার। তাদের ব্যাটে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের জয়টা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু নাটকীয়তার তখনও বেশ বাকি। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচের চিত্র পাল্টে দিলেন নাঈম হাসান। দারুণ সহায়তা মিলল তানভির ইসলামের কাছ থেকে। তাদের ঘূর্ণিতে নাটকীয় জয় পেল ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডে ১০ রানে জিতেছে ইমরুল কায়েসের দল। ১৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ ও শেষ দিন ১৮৮ রানে থমকে গেছে মধ্যাঞ্চলের ইনিংস। পূর্বাঞ্চলের এটি প্রথম জয়, মধ্যাঞ্চলের প্রথম হার।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বুধবার ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ১১২ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি শুভাগত হোম চৌধুরির দল।
৪৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে পূর্বাঞ্চলের জয়ের নায়ক নাঈম। ব্যাটে-বলে এই ম্যাচে দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন তরুণ এই স্পিনার। প্রথম ইনিংসে নেন ৭০ রানে ২ উইকেট। অপরাজিত ৪০ রানের পর খেলেন ৬৮ রানের চমৎকার ইনিংস।
১ উইকেটে ৮৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে মধ্যাঞ্চল। শেষ দিনের উইকেটও ছিল বেশ সবুজ। দিনের শুরুতে আদ্রতাও ছিল। মিঠুন ও সৌম্যকে বিচ্ছিন্ন করতে পেসারদের ব্যবহার করেন ইমরুল।
প্রথম ঘণ্টায় মিলেনি কোনো সাফল্য। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান মধ্যাঞ্চলের দুই ব্যাটসম্যান। ৩৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা সৌম্য পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৯২ বলে। মিঠুনের ফিফটি আসে ৭৭ বলে।
প্রথম ঘণ্টায় কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৪ রান যোগ করে মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় ঘণ্টায় নাঈম ও তানভিরের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ায় পূর্বাঞ্চল।
সৌম্যকে এলবিডব্লিউ করে শিকার শুরু করেন নাঈম। ভাঙেন ১২০ রানের জুটি। সৌম্যর ১৩৯ বলে খেলা ৭৩ রানের ইনিংসে ১১ চারের পাশে ছক্কা একটি। এরপর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি মধ্যাঞ্চল।
৯৮ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৬০ রান করা মিঠুনকেও এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন নাঈম। পরে দ্রুত বিদায় করেন তাইবুর রহমানকে। শুভাগতকে কট বিহাইন্ড করার পর শূন্য রানে আবু হায়দারকে বিদায় করেন বাঁহাতি স্পিনার তানভির।
কিপার ব্যাটসম্যান জাকের আলি ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে দ্রুত বিদায় করে ম্যাচ পূর্বাঞ্চলের দিকে ঘুরিয়ে দেন অফ স্পিনার নাঈম। সঙ্গে একাদশবারের মতো নেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট।
২৪ রানের মধ্েয ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা মধ্যাঞ্চল প্রতিরোধ গড়ে সালমান হোসেন ও রবিউল ইসলামের ব্যাটে। ধীরে ধীরে এই দুই ব্যাটসম্যান দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন লক্ষ্েযর দিকে।
লাঞ্চের পর সালমানকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন নাঈম। পরের ওভারে রবিউলকে এলবিডব্লিউ করে পূর্বাঞ্চলকে অসাধারণ এক জয় এনে দেন তানভির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২৪৫
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২২৭
পূর্বাঞ্চল ২য় ইনিংস: ১৮০
মধ্যাঞ্চল ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৯৯, আগের দিন ৮৭/১) ৫৯.১ ওভারে ১৮৮ (মিঠুন ৬০, সৌম্য সরকার ৭৩, সালমান ১৮, তাইবুর ৪, শুভাগত ৪, জাকের ১, আবু হায়দার ০, মৃত্যুঞ্জয় ১, রবিউল ১৪, মুরাদ ০* ; পায়েল ৬-০-২৫-০, তানভির ২৩.১-৩-৫৩-৩, এনামুল ৯-১-৫৬-১, নাঈম ২০-৮-৪৮-০, আশরাফুল ১-০-৬-০)
ফল: পূর্বাঞ্চল ১০ রানে জয়ী
নাঈমের ঘূর্ণিতে মধ্যাঞ্চলকে স্তব্ধ করে পূর্বাঞ্চলের দুর্দান্ত জয়
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ