ঢাকা ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত

  • আপডেট সময় : ০৬:১১:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যশা ডেস্ক: নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি গ্রামে রাতের বেলায় ‘বোকো হারাম’ নামে পরিচিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গোলযোগের মধ্যে সম্প্রতি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা ফিরে আসার পর এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ ঘটল।

বোর্নো রাজ্যের বামার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার দিনগত গভীর রাতে এই হামলা ঘটে। গভর্নর বাবাগানা জুলুম শনিবার সন্ধ্যায় স্থানটি পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহতের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং তাদের বাড়িঘর ছেড়ে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা নিরাপত্তা উন্নত করার এবং তাদের হারিয়ে যাওয়া খাবার ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী জিনিসপত্র সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছি।’

বামার স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান মোদু গুজ্জা বলেছেন, এক ডজনেরও বেশি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১০০ জনেরও বেশি লোক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের বোকো হারামের বিশেষজ্ঞ গবেষক তাইও আদেবায়ো বলেন, শুক্রবার রাতে বোকো হারামের একদল যোদ্ধা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নাইজেরিয়ার স্থানীয় যোদ্ধাদের দল বোকো হারাম ২০০৯ সালে পশ্চিমা শিক্ষার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের নিজস্ব ধ্যানধারার ইসলামী ব্যবস্থা আরোপ করার জন্য অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, এই সংঘাত নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর ফলে প্রায় ৩৫ হাজার বেসামরিক লোক নিহৎ এবং ২০ লক্ষেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

২০২১ সালে এই দলের দীর্ঘদিনের নেতা আবুবকর শেকাউয়ের মৃত্যুর পর বোকো হারাম দুটি উপদলের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

একটি উপদল দায়েশ গোষ্ঠীর সমর্থিত এবং এটি ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স বা আইএসডব্লিউএপি নামে পরিচিত। এটি সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে।

অন্য দল জামা’আতু আহলিস সুন্না লিদ্দা’ওয়াতি ওয়াল-জিহাদ বা জেএএস ক্রমবর্ধমানভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করছে এবং মুক্তিপণের জন্য ডাকাতি ও অপহরণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হচ্ছে।

এক দশক আগে বামার স্থানীয় সরকার এলাকাটি বেশ কয়েকটি বোকো হারামের আক্রমণের কবলে পড়েছিল। এর ফলে অনেক বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এলাকায় সামরিক অভিযানের পর সরকার বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের বাস্তুচ্যুত মানুষকে পুনর্বাসিত করেছে। সম্প্রতি জুলাই মাসে দারুল জামাল গ্রামে লোকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।

দারুল জামালের বাসিন্দা কানা আলী বলেছেন, শুক্রবার রাতের আক্রমণের পর ঘনিষ্ঠ পরিবারের বন্ধুদের মৃত্যুর বিষয়টি তাকে ‘চিরতরে সম্প্রদায় ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত’ নিতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু গভর্নর এখনো আমাদেরকে থাকার জন্য অনুরোধ করছেন, কারণ আমাদের সুরক্ষিত করার জন্য আরও সুরক্ষা প্রদান করা হবে।’

ওআ/আপ্র/০৭/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত

আপডেট সময় : ০৬:১১:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যশা ডেস্ক: নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি গ্রামে রাতের বেলায় ‘বোকো হারাম’ নামে পরিচিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গোলযোগের মধ্যে সম্প্রতি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা ফিরে আসার পর এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ ঘটল।

বোর্নো রাজ্যের বামার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার দিনগত গভীর রাতে এই হামলা ঘটে। গভর্নর বাবাগানা জুলুম শনিবার সন্ধ্যায় স্থানটি পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহতের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং তাদের বাড়িঘর ছেড়ে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা নিরাপত্তা উন্নত করার এবং তাদের হারিয়ে যাওয়া খাবার ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী জিনিসপত্র সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছি।’

বামার স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান মোদু গুজ্জা বলেছেন, এক ডজনেরও বেশি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১০০ জনেরও বেশি লোক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের বোকো হারামের বিশেষজ্ঞ গবেষক তাইও আদেবায়ো বলেন, শুক্রবার রাতে বোকো হারামের একদল যোদ্ধা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নাইজেরিয়ার স্থানীয় যোদ্ধাদের দল বোকো হারাম ২০০৯ সালে পশ্চিমা শিক্ষার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের নিজস্ব ধ্যানধারার ইসলামী ব্যবস্থা আরোপ করার জন্য অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, এই সংঘাত নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর ফলে প্রায় ৩৫ হাজার বেসামরিক লোক নিহৎ এবং ২০ লক্ষেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

২০২১ সালে এই দলের দীর্ঘদিনের নেতা আবুবকর শেকাউয়ের মৃত্যুর পর বোকো হারাম দুটি উপদলের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

একটি উপদল দায়েশ গোষ্ঠীর সমর্থিত এবং এটি ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স বা আইএসডব্লিউএপি নামে পরিচিত। এটি সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে।

অন্য দল জামা’আতু আহলিস সুন্না লিদ্দা’ওয়াতি ওয়াল-জিহাদ বা জেএএস ক্রমবর্ধমানভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করছে এবং মুক্তিপণের জন্য ডাকাতি ও অপহরণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হচ্ছে।

এক দশক আগে বামার স্থানীয় সরকার এলাকাটি বেশ কয়েকটি বোকো হারামের আক্রমণের কবলে পড়েছিল। এর ফলে অনেক বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এলাকায় সামরিক অভিযানের পর সরকার বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের বাস্তুচ্যুত মানুষকে পুনর্বাসিত করেছে। সম্প্রতি জুলাই মাসে দারুল জামাল গ্রামে লোকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।

দারুল জামালের বাসিন্দা কানা আলী বলেছেন, শুক্রবার রাতের আক্রমণের পর ঘনিষ্ঠ পরিবারের বন্ধুদের মৃত্যুর বিষয়টি তাকে ‘চিরতরে সম্প্রদায় ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত’ নিতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু গভর্নর এখনো আমাদেরকে থাকার জন্য অনুরোধ করছেন, কারণ আমাদের সুরক্ষিত করার জন্য আরও সুরক্ষা প্রদান করা হবে।’

ওআ/আপ্র/০৭/০৯/২০২৫