নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেমঘটিত কারণে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমন রহমানের সঙ্গে রাশেদুল ইসলাম রাসুর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এ কারণে রাসু ও অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ইমনকে খুন করে এবং পরে লাশ তুরাগ নদীতে ফেলে দেয় বলে র্যাবের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন এ কথা জানান। তিনি বলেন, বুধবার ভোরে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার আবাদপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আত্মগোপনে থাকা হত্যাকা-ের পরিকল্পনাকারী রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসু, তার সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মনকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার কালামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাসুর নিজ বাড়ির শয়ন কক্ষের বিছানার নিচ থেকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দা এবং বিপুল চন্দ্র বর্মনের কাছ থেকে ১ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা ও হত্যাকা-ের স্বীকার ইমন একই স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশুনা করতেন। গত কয়েক বছর ধরে তারা পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত। এছাড়াও আসামিরা ২/৩ বছর আগ থেকে একই সাথে মাদক ক্রয় এবং সেবনের সাথে জড়িত। তারা বন্ধু হলেও ইমনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল।
আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ইমনের সঙ্গে রাসুর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে রাসু তার ৪ জন সহযোগীসহ ইমনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৭ জুলাই রাতে ইমনকে তার বাড়ির পশ্চিম পাশে বট গাছতলায় আসতে বলে। সেখানে রাসু, বিপুলসহ অন্যান্য হত্যাকারীরা আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ইমন গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রসুলপুর বটগাছতলায় পৌঁছামাত্রই রাসু ইমনকে তার প্রেমিকাকে গালিগালাজ করার কারণ জিজ্ঞাসা করে। বাকবিত-ার এক পর্যায়ে রাসুর সঙ্গে থাকা দা দিয়ে ইমনকে কোপ দেয় এবং তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইমনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে ইমন নিস্তেজ হয়ে গেলে হত্যাকারীরা তার লাশ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
তিনি জানান, ১৬ জুলাই বিকেলে ঢাকা জেলার সাভারের আমিন বাজার কেবলার চর এলাকার তুরাগ নদীতে একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে মৃতদেহের রহস্য এবং প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনে র্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে। ৭ জুলাই রাতে ইমন কালিয়াকৈরের বাসায় রাতের খাবার খেয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। প্রথমে ঘটনাটি স্বাভাবিক মনে হলেও ইমনের বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি করে। ৫দিন পর পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুজি করে ইমনের সন্ধান না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি ডায়েরি করে।
নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী ইমন হত্যার নেপথ্যে প্রেম নিয়ে বিরোধ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ