নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর মনোহরদীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। এতে ১০ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আটজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। চোখে গুলি লাগা বিএনপির দুই সমর্থককে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের কিশোরগঞ্জের ভাগলপুর শিবপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে মনোহরদী উপজেলার হাফিজপুর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপির সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুকের অভিযোগ, বিএনপির মিছিলে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। এতে তাদের ২৭ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ ৩৮ জন আহত হয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুন, গুম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আব্দুর রহিম ও জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে মনোহরদী হেতেমদী ইটাখলা মাঠে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় মনোহরদী বেলাবো আসনের সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কিছুদুর এগোলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। ওইসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। একপযায়ে রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় ১০ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন অন্তত আটজন। মনোহরদী বেলাবো আসনের সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, আমরা মিছিল নিয়ে বের হওয়ার পরই পুলিশ অতর্কিত আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ২৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩৮ জন আহত হয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা ও দা নিয়ে মিছিল বের করেন। তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের ১০ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান এএসপি।
নোয়াখালীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবসহ ৪৯৪ জনের নামে মামলা : নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার একদিন বাদে গতকাল রোববার সোনাইমুড়ি থানার এসআই শাহ আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, মামলায় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির ৯৪ নেতাকর্মী নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ভোলায় ছাত্রদলের দুই নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে শনিবার সোনাইমুড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। বিকেলে খ- খ- মিছিল নিয়ে সভাস্থলে আসার পথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ব্যবহৃত একটি গাড়িসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়।