ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো ‘প্রত্যাশা নেই’ বিএনপির

  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির রাষ্ট্রপতি পদে পরিবর্তন নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়া মো. সাহাবুদ্দিন দেশের রাজনৈতিক সংকটের কোনো সমাধান দিতে পারবেন বলেও মনে করছে না দলটি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আন্দোলন বেগবান করাই তাদের লক্ষ্য। মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার সকালে দেশের দ্বাবিংশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত সাহাবুদ্দিন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারক দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনারের দায়িত্বও পালন করে এসেছেন। সাহাবুদ্দিনের দায়িত্বগ্রহণের পর বিকালে ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
মন্তব্য নেই: বিদায়ী রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদকে ‘ভালো মানুষ’ বললেও রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিনের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে নারাজ ফখরুল বলেছেন, তার কাছে তাদের কোনো প্রত্যাশাও নেই। তিনি বলেন, “এবারকার রাষ্ট্রপতি নিয়োগটা জনগণের কাছে হঠাৎ করে, অপ্রত্যাশিতভাবে এসেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সম্পর্কে কোনো কমেন্ট করতে চাই না। “আমাদের রাষ্ট্রপতি নিয়ে আগ্রহটা কম। আমরা মূল জায়গাটায় যেতে চেয়েছি। আজকে নির্বাচন প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক নয়, নির্বাচনে আমরা বিরোধী যদি অংশগ্রহণ করতে না পারি, একটা নিরপেক্ষ সরকার যদি না হয়, তাহলে সব কিছু অর্থহীন হয়ে যাবে। সেই কারণে তার উপর জোর দিচ্ছি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই নামটা (মো. সাহাবুদ্দিন) জনগণের কাছে পরিচিতও ছিল না। ফলে এখানে একটা সংকট (চলমান সংকট) কাটিয়ে উঠার ব্যাপারে একটা প্রশ্ন আছে মানুষের কাছে- উনি কি ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন?”
নতুন রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাসীন দলের নেত্রীর ‘বেশি আস্থাভাজন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পত্র-পত্রিকায় যা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সিনিয়র লিডার যারা আছেন, তারা কেউ এই নিয়োগ বিষয়ে কিছু জানতেন না। সম্পূর্ণ এককভাবে তিনিই (প্রধানমন্ত্রী) এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
“বর্তমানে আওয়ামী লীগ সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে পারত। এখান থেকে বোঝা যায় যে, তার ও সরকারের ইচ্ছা একটাই, যেভাবে হোক সমস্ত রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা আবার আগামী নির্বাচন পার হতে চায়, আবার রাষ্ট্র ক্ষমতাকে দখলে রাখতে চায়।” তা মানে আপনারা তার ওপর আস্থাশীল না- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তাতে বটেই। এটা তো পরিষ্কার বলেছি আমরা।”
রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশাটা কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা তো আমরা আগেই বলেছি যে আমরা কিছুটা হতাশ হয়েছি যে আমরা যাকে চিনি না, যাকে জাতি জানে না, এ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলতেও পারব না।”
বঙ্গভবনের দরবার হলে সোমবার বাংলাদেশের দ্বাবিংশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন।
‘ক্ষমতা নেই’ শপথ নেওয়ার আগে সাহাবুদ্দিন একাধিকবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার অবস্থান থেকে যতটা ভূমিকা পালন করার, তিনি তা করবেন। তবে বিএনপি যেভাবে নির্বাচন চায়, সেরকম আয়োজনে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাহাবুদ্দিনের সাহসী ভূমিকা রাখবেনম এমনট মনে করছেন না ফখরুল। তিনি বলেন, “সংবিধানের বাইরে যাওয়ার উনার (সাহাবুদ্দিন) সুযোগও নাই, আর উনার সেই সাহস আছে বলে আমরা মনে করছি না।” রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাষ্ট্রপতি সংলাপের উদ্যোগে নিলে আপনারা যাবেন কি না- এ প্রশ্নে ফখরুল বলেন, “যদির তো কোনো উত্তর থাকে না। বিষয়টা হচ্ছে যে, সেই ধরনের কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে কি না? সরকারের বাইরে রাষ্ট্রপতির তো করার কোনো ক্ষমতাই নেই। “যদি সরকার চায়, তাহলে না রাষ্ট্রপতি চাইবেন। সরকার তো পরিষ্কার বলেই দিচ্ছে যে, এই নিয়ে (নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার) কোনো আলোচনা করব না, আলাপই করব না।। এখন আলোচনার কোনো প্রশ্নই হতে পারে না।” মো. সাহাবুদ্দিন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারবেন কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এমনিতে তো যারা রাষ্ট্রপতি হন, তারা দল থেকে নির্বাচিত হন। যেমন আবদুল হামিদ সাহেব ছিলেন দল (আওয়ামী লীগ) থেকে নির্বাচিত। আমাদের সময়ে বি চৌধুরী (এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী) সাহেব তাই হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে, দলীয় হয়ে উঠবেন কি না? এটা কিন্তু নির্ভর করবে, তিনি কীভাবে চিন্তা করছেন, তিনি রাষ্ট্রের সমস্যা সমাধান করবেন না কি দলের সমস্যা সমাধান করবেন, এটা তার (রাষ্ট্রপতি) বিষয়।” নতুন রাষ্ট্রপতি থেকে এরকম আশা করেন কি না- প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, “আমরা সেটা আশা করি না। কারণ দলকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আওয়ামী লীগকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

“সরকারকে এগ্রি করতে হবে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এবং রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হতে হবে। গোটা দেশের যে ক্রাইসিস, সেই ক্রাইসিসের সমাধান করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নাই।” বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্ষমতার ভারসাম্য’ আনবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ফখরুল। তিনি বলেন, “একজন ব্যক্তির হাতে সর্বময় ক্ষমতা এবং ট্রেন্ডটা বলে দেয় সে ডিক্টেটর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি বলে আমরা আমাদের ভিশন-২০৩০ রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ২৭ দফায় সেটা স্পষ্ট করে বলেছি। এটা আমরা আনার চেষ্টা করব।”
আন্দোলন বেগবান হবে: বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনারা দেখেছেন যে, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, আমাদের এই আন্দোলনে অলরেডি ১৭ জন প্রাণ দিয়েছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমাদের শত শত মানুষ এখনও কারাগারে আছে। “দি মুভমেন্ট ইজ অন। মাঝখানে রোজা-রমজানের জন্য হয়ত .ৃ তারমধ্যেও কিন্তু আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এখন মুভেমেন্ট আরও বেগবান হবে।” পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের আচরণের উপর নির্ভর করবে মুভমেন্টের ধরন কী হবে, জনগণই সেটা সিদ্ধান্ত নেবে।”
পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোক: প্রবীণ রাজনীতিক,ঐক্য ন্যাপের প্রধান পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। তিনি বলেন, “পঙ্কজ বাবুর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আমরা মনে করি যে, তিনি এদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতি করেছেন। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন এবং ছাত্রজীবন থেকে যখন রাজনৈতিক জীবনে আসেন, তখনও তিনি ওই সমাজ পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেছেন।” এক সময়ের বাম আন্দোলনের কর্মী ফখরুল বলেন, “আমাদের সঙ্গে তার অনেক রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে, রাজনীতিক হিসেবে নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত বরণ্যে ব্যক্তিত্ব। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।” পঙ্কজ ভট্টাচার্য ৮৪ বছর বয়সে রোববার রাতে মারা যান।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো ‘প্রত্যাশা নেই’ বিএনপির

আপডেট সময় : ০৪:৩২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির রাষ্ট্রপতি পদে পরিবর্তন নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়া মো. সাহাবুদ্দিন দেশের রাজনৈতিক সংকটের কোনো সমাধান দিতে পারবেন বলেও মনে করছে না দলটি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আন্দোলন বেগবান করাই তাদের লক্ষ্য। মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার সকালে দেশের দ্বাবিংশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত সাহাবুদ্দিন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারক দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনারের দায়িত্বও পালন করে এসেছেন। সাহাবুদ্দিনের দায়িত্বগ্রহণের পর বিকালে ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
মন্তব্য নেই: বিদায়ী রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদকে ‘ভালো মানুষ’ বললেও রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিনের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে নারাজ ফখরুল বলেছেন, তার কাছে তাদের কোনো প্রত্যাশাও নেই। তিনি বলেন, “এবারকার রাষ্ট্রপতি নিয়োগটা জনগণের কাছে হঠাৎ করে, অপ্রত্যাশিতভাবে এসেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সম্পর্কে কোনো কমেন্ট করতে চাই না। “আমাদের রাষ্ট্রপতি নিয়ে আগ্রহটা কম। আমরা মূল জায়গাটায় যেতে চেয়েছি। আজকে নির্বাচন প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক নয়, নির্বাচনে আমরা বিরোধী যদি অংশগ্রহণ করতে না পারি, একটা নিরপেক্ষ সরকার যদি না হয়, তাহলে সব কিছু অর্থহীন হয়ে যাবে। সেই কারণে তার উপর জোর দিচ্ছি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই নামটা (মো. সাহাবুদ্দিন) জনগণের কাছে পরিচিতও ছিল না। ফলে এখানে একটা সংকট (চলমান সংকট) কাটিয়ে উঠার ব্যাপারে একটা প্রশ্ন আছে মানুষের কাছে- উনি কি ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন?”
নতুন রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাসীন দলের নেত্রীর ‘বেশি আস্থাভাজন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পত্র-পত্রিকায় যা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সিনিয়র লিডার যারা আছেন, তারা কেউ এই নিয়োগ বিষয়ে কিছু জানতেন না। সম্পূর্ণ এককভাবে তিনিই (প্রধানমন্ত্রী) এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
“বর্তমানে আওয়ামী লীগ সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে পারত। এখান থেকে বোঝা যায় যে, তার ও সরকারের ইচ্ছা একটাই, যেভাবে হোক সমস্ত রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা আবার আগামী নির্বাচন পার হতে চায়, আবার রাষ্ট্র ক্ষমতাকে দখলে রাখতে চায়।” তা মানে আপনারা তার ওপর আস্থাশীল না- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তাতে বটেই। এটা তো পরিষ্কার বলেছি আমরা।”
রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশাটা কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা তো আমরা আগেই বলেছি যে আমরা কিছুটা হতাশ হয়েছি যে আমরা যাকে চিনি না, যাকে জাতি জানে না, এ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলতেও পারব না।”
বঙ্গভবনের দরবার হলে সোমবার বাংলাদেশের দ্বাবিংশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন।
‘ক্ষমতা নেই’ শপথ নেওয়ার আগে সাহাবুদ্দিন একাধিকবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার অবস্থান থেকে যতটা ভূমিকা পালন করার, তিনি তা করবেন। তবে বিএনপি যেভাবে নির্বাচন চায়, সেরকম আয়োজনে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাহাবুদ্দিনের সাহসী ভূমিকা রাখবেনম এমনট মনে করছেন না ফখরুল। তিনি বলেন, “সংবিধানের বাইরে যাওয়ার উনার (সাহাবুদ্দিন) সুযোগও নাই, আর উনার সেই সাহস আছে বলে আমরা মনে করছি না।” রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাষ্ট্রপতি সংলাপের উদ্যোগে নিলে আপনারা যাবেন কি না- এ প্রশ্নে ফখরুল বলেন, “যদির তো কোনো উত্তর থাকে না। বিষয়টা হচ্ছে যে, সেই ধরনের কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে কি না? সরকারের বাইরে রাষ্ট্রপতির তো করার কোনো ক্ষমতাই নেই। “যদি সরকার চায়, তাহলে না রাষ্ট্রপতি চাইবেন। সরকার তো পরিষ্কার বলেই দিচ্ছে যে, এই নিয়ে (নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার) কোনো আলোচনা করব না, আলাপই করব না।। এখন আলোচনার কোনো প্রশ্নই হতে পারে না।” মো. সাহাবুদ্দিন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারবেন কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এমনিতে তো যারা রাষ্ট্রপতি হন, তারা দল থেকে নির্বাচিত হন। যেমন আবদুল হামিদ সাহেব ছিলেন দল (আওয়ামী লীগ) থেকে নির্বাচিত। আমাদের সময়ে বি চৌধুরী (এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী) সাহেব তাই হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে, দলীয় হয়ে উঠবেন কি না? এটা কিন্তু নির্ভর করবে, তিনি কীভাবে চিন্তা করছেন, তিনি রাষ্ট্রের সমস্যা সমাধান করবেন না কি দলের সমস্যা সমাধান করবেন, এটা তার (রাষ্ট্রপতি) বিষয়।” নতুন রাষ্ট্রপতি থেকে এরকম আশা করেন কি না- প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, “আমরা সেটা আশা করি না। কারণ দলকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আওয়ামী লীগকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

“সরকারকে এগ্রি করতে হবে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এবং রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হতে হবে। গোটা দেশের যে ক্রাইসিস, সেই ক্রাইসিসের সমাধান করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নাই।” বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্ষমতার ভারসাম্য’ আনবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ফখরুল। তিনি বলেন, “একজন ব্যক্তির হাতে সর্বময় ক্ষমতা এবং ট্রেন্ডটা বলে দেয় সে ডিক্টেটর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি বলে আমরা আমাদের ভিশন-২০৩০ রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ২৭ দফায় সেটা স্পষ্ট করে বলেছি। এটা আমরা আনার চেষ্টা করব।”
আন্দোলন বেগবান হবে: বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনারা দেখেছেন যে, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, আমাদের এই আন্দোলনে অলরেডি ১৭ জন প্রাণ দিয়েছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমাদের শত শত মানুষ এখনও কারাগারে আছে। “দি মুভমেন্ট ইজ অন। মাঝখানে রোজা-রমজানের জন্য হয়ত .ৃ তারমধ্যেও কিন্তু আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এখন মুভেমেন্ট আরও বেগবান হবে।” পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের আচরণের উপর নির্ভর করবে মুভমেন্টের ধরন কী হবে, জনগণই সেটা সিদ্ধান্ত নেবে।”
পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোক: প্রবীণ রাজনীতিক,ঐক্য ন্যাপের প্রধান পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। তিনি বলেন, “পঙ্কজ বাবুর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আমরা মনে করি যে, তিনি এদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতি করেছেন। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন এবং ছাত্রজীবন থেকে যখন রাজনৈতিক জীবনে আসেন, তখনও তিনি ওই সমাজ পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেছেন।” এক সময়ের বাম আন্দোলনের কর্মী ফখরুল বলেন, “আমাদের সঙ্গে তার অনেক রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে, রাজনীতিক হিসেবে নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত বরণ্যে ব্যক্তিত্ব। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।” পঙ্কজ ভট্টাচার্য ৮৪ বছর বয়সে রোববার রাতে মারা যান।