ক্রীড়া ডেস্ক : মেসি-দুঃখ ভুলে নতুন শুরুর যে ডাক দিয়েছিলেন কোচ রোনাল্ড কুমান, তাতে দারুণভাবে সাড়া দিল দল। প্রায় পুরোটা সময় খেলল প্রাণবন্ত ফুটবল। গত মৌসুমের বিবর্ণ ফুটবল ভুলে ছড়াল রোমাঞ্চ। শেষ দিকে তিন মিনিটে জোড়া গোল করে রিয়াল সোসিয়েদাদ লড়াই জমিয়ে তুললেও ফেভারিটদের আটকাতে পারেনি। নতুন দিনের বার্তা দিয়ে বার্সেলোনায় শুরু হলো মেসি পরবর্তী যুগ। লা লিগায় রোববার নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৪-২ গোলে জিতেছে কাতালান ক্লাবটি। তাদের জোড়া গোল করেন মার্টিন ব্রাথওয়েট, একটি করে করেন জেরার্দ পিকে ও সের্হি রবের্তো। ৫২৬ দিন পর কাম্প নউয়ে প্রিয় দলের খেলা দেখতে মাঠে এসেছিল বার্সেলোনা সমর্থকরা। তাদের মাঝে গ্যালারিতে ফিরতে পারার ভালোলাগা থাকলেও প্রিয় তারকা লিওনেল মেসিকে হারানোর কষ্টও ছিল। অনেকে পরে এসেছিলেন মেসি লেখা জার্সি। দলের গোছালো পারফরম্যান্সে সেই কষ্ট নিশ্চয় কিছুটা হলেও কমেছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে ১৩টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার আটটিই ছিল লক্ষ্যে। দ্বিতীয়ার্ধে গুছিয়ে ওঠা সোসিয়েদাদের ১১ শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।
আক্রমণাত্মক শুরু করা বার্সেলোনা ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল পেতে পারতো। তবে ব্রাথওয়েটের কাছের পোস্টে নেওয়া কোনাকুনি শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আলেক্স রেমিরো। দশম মিনিটে ওভারহেড কিকে চেষ্টা করেন অঁতোয়ান গ্রিজমান। শট লক্ষ্যে না থাকলেও প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরানোর জন্য ছিল যথেষ্ট। তিন মিনিট পর ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের হেড বাধা পায় ক্রসবারে। একচেটিয়া চাপ ধরে রাখার ফল মেলে ১৯তম মিনিটে। ডান দিক থেকে মেমফিস ডিপাইয়ে ফ্রি কিকে দারুণ হেডে দলকে এগিয়ে নেন পিকে। গ্যালারি থেকে ভেসে আসে পিকে, পিকে, পিকে আওয়াজ। বার্সেলোনার জার্সিতে এটি তার ৫০তম গোল, এর মধ্যে ২২টি হেডে। কুমানের (৮৮) পর দলটির দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে গোলের হাফ সেঞ্চুরি করলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। খানিক পর ব্যবধান বাড়তে পারতো। পরিশ্রমী ব্রাথওয়েটের বাঁ থেকে বাড়ানো বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন মেমফিস, তবে এগিয়ে গিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক। বিরতির ঠিক আগে আর হতাশ করেননি ডেনিশ ফরোয়ার্ড। ডান দিক থেকে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ক্রস ফাঁকায় পেয়ে কোনাকুনি হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাথওয়েট। ৫৯তম মিনিটে তার দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান আরও বাড়ায় বার্সেলোনা। জর্দি আলবার শট গোলরক্ষক ঠেকালেও বল হাতে রাখতে পারেননি। আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে জালে পাঠান ব্রাথওয়েট। লা লিগার ইতিহাসে প্রথম ডেনিশ ফুটবলার হিসেবে ম্যাচে জোড়া গোল করলেন তিনি। সহজ জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল বার্সেলোনা। ৮২তম মিনিটে হুলেন লোবেতো একটি গোল শোধ করলেও তেমন কোনো ভাবনার কারণ ছিল না। কিন্তু খানিক পরই মিকেল ওইয়ারসাবাল দুর্দান্ত ফ্রি কিকে স্কোরলাইন ৩-২ করলে উত্তেজনা ফেরে। তবে পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে রবের্তে্রা গোলে জয় একরকম নিশ্চিতই হয়ে যায়। ব্রাথওয়েটের ক্রস পেয়ে গোলটি করেন এই স্প্যানিয়ার্ড। শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে দারুণ শুরু করেছে আতলেতিকো মাদ্রিদও। দিনের প্রথম ম্যাচে তারা আনহেল কোররেয়ার জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানে হারায় সেল্তা ভিগোকে।
নতুন যুগে রঙিন শুরু বার্সেলোনার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ