ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থা চাইছেন সি চিন পিং ও পুতিন

  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

সোমবার চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে), ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (মাঝে) এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং (ডানে) -ছবি রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: নতুন এক বৈশ্বিক ব্যবস্থার কথা শোনালেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনে তাঁরা নতুন এ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

সি–পুতিন প্রস্তাবিত বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা বৈশ্বিক দক্ষিণকে অগ্রাধিকার দেবে। এই বৈশ্বিক দক্ষিণ মূলত একটি ধারণা, যা আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে।

চীনের তিয়ানজিন শহরে গতকাল শেষ হয় দুই দিনের এসসিও সম্মেলন। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ বিশ্বের ২০টি দেশের নেতারা অংশ নেন। সম্মেলনে সি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘অস্থিরতার এই সময়ে বৈশ্বিক শাসন এক নতুন মোড়ের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।’ উল্লেখ্য, গাজা পরিস্থিতি, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অস্বস্তির মুখে এ সম্মেলন হচ্ছে। এসসিও গাজায় হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, সি ও পুতিনের নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ব্যবস্থাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। এসসিও সম্মেলনে অথনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে যৌথ বন্ড ছাড়া, পেমেন্ট সিস্টেম চালুসহ নানা প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সম্মেলনে সি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান অব্যাহত রাখতে হবে এবং প্রকৃত বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার চর্চা করতে হবে।’ তাঁর এ মন্তব্য ছিল বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যবস্থার প্রতি পরোক্ষ সমালোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে সি বলেন, ‘কয়েকটি দেশের নিজস্ব নিয়ম অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।’
চীন ও রাশিয়া বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নিজেদের অনুকূলে আনতে চাইছে। এবারের এসসিও আয়োজন করা হয়েছে মূলত চীনের বৈশ্বিক নেতৃত্বকে তুলে ধরতে। এবারের সম্মেলনটিকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোকে এককাট্টা করার চীনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সম্মেলনে সি ঘোষণা দেন, এ বছর এসসিও সদস্যদেশগুলোকে তিনি ২০০ কোটি ইউয়ান পাশাপাশি আগামী তিন বছরে এসসিও ব্যাংকিং কনসোর্টিয়ামকে ১ হাজার কোটি ইউয়ান ঋণ দেওয়া হবে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ একটি ভিডিও সামনে এনেছে। এতে সম্মেলনে সি ও পুতিনকে প্রাণবন্ত ও হাসিখুশি আলাপ করতে দেখা গেছে।

সির বক্তব্যের সুরেই সম্মেলনে পুতিন বলেছেন, ইউরেশিয়ায় এক নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করেছে এসসিও। এই নতুন ব্যবস্থা পুরোনো ইউরোকেন্দ্রিক ও ইউরো-অ্যাটলান্টিক মডেলগুলোর পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে। গত সোমবার এসসিও সম্মেলনে সি ও পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি পুতিনকে আলিঙ্গন করেন এবং সির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সানা/আপ্র/০২/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পরিবারভিত্তিক ব্যবসা

নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থা চাইছেন সি চিন পিং ও পুতিন

আপডেট সময় : ০৪:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: নতুন এক বৈশ্বিক ব্যবস্থার কথা শোনালেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনে তাঁরা নতুন এ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

সি–পুতিন প্রস্তাবিত বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা বৈশ্বিক দক্ষিণকে অগ্রাধিকার দেবে। এই বৈশ্বিক দক্ষিণ মূলত একটি ধারণা, যা আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে।

চীনের তিয়ানজিন শহরে গতকাল শেষ হয় দুই দিনের এসসিও সম্মেলন। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ বিশ্বের ২০টি দেশের নেতারা অংশ নেন। সম্মেলনে সি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘অস্থিরতার এই সময়ে বৈশ্বিক শাসন এক নতুন মোড়ের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।’ উল্লেখ্য, গাজা পরিস্থিতি, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অস্বস্তির মুখে এ সম্মেলন হচ্ছে। এসসিও গাজায় হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, সি ও পুতিনের নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ব্যবস্থাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। এসসিও সম্মেলনে অথনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে যৌথ বন্ড ছাড়া, পেমেন্ট সিস্টেম চালুসহ নানা প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সম্মেলনে সি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান অব্যাহত রাখতে হবে এবং প্রকৃত বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার চর্চা করতে হবে।’ তাঁর এ মন্তব্য ছিল বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যবস্থার প্রতি পরোক্ষ সমালোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে সি বলেন, ‘কয়েকটি দেশের নিজস্ব নিয়ম অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।’
চীন ও রাশিয়া বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নিজেদের অনুকূলে আনতে চাইছে। এবারের এসসিও আয়োজন করা হয়েছে মূলত চীনের বৈশ্বিক নেতৃত্বকে তুলে ধরতে। এবারের সম্মেলনটিকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোকে এককাট্টা করার চীনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সম্মেলনে সি ঘোষণা দেন, এ বছর এসসিও সদস্যদেশগুলোকে তিনি ২০০ কোটি ইউয়ান পাশাপাশি আগামী তিন বছরে এসসিও ব্যাংকিং কনসোর্টিয়ামকে ১ হাজার কোটি ইউয়ান ঋণ দেওয়া হবে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ একটি ভিডিও সামনে এনেছে। এতে সম্মেলনে সি ও পুতিনকে প্রাণবন্ত ও হাসিখুশি আলাপ করতে দেখা গেছে।

সির বক্তব্যের সুরেই সম্মেলনে পুতিন বলেছেন, ইউরেশিয়ায় এক নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করেছে এসসিও। এই নতুন ব্যবস্থা পুরোনো ইউরোকেন্দ্রিক ও ইউরো-অ্যাটলান্টিক মডেলগুলোর পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে। গত সোমবার এসসিও সম্মেলনে সি ও পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি পুতিনকে আলিঙ্গন করেন এবং সির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সানা/আপ্র/০২/০৯/২০২৫