ঢাকা ০৯:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

নগর মাতলো নবান্নে

  • আপডেট সময় : ০২:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন ধানের খৈ, মুড়ি-মোয়া আর বাহারি পিঠার পসরা সাজিয়ে গান-কবিতায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে হল নগরের নবান্ন উৎসব।
গতকাল বুধবার সকালে একাডেমির উন্মুক্ত চত্বরে ২৪তম বারের মত এ আয়োজন করে নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদ। উৎসবে যোগ দিয়ে নবান্নকে ঘিরে বাঙালির সুখ-সমৃদ্ধির প্রত্যাশা করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, নবান্ন উৎসব বাঙালিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে। নবান্ন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্য উৎসব। কৃষিভিত্তিক সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন নবান্ন।
“আমি খুব ভালো পুলি পিঠা বানাতে পারি। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে ঢেঁকি ছিল। ছোটবেলায় ঢেঁকির সেই স্মৃতি কখনোই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।”
অনুষ্ঠানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহিদুর রাশিদ ভূঁইয়া বলেন, “দেশে একসময় আমন ধানই সবচেয়ে বেশি আবাদ করা হত। আর সে ধান ঘরে তোলা হত হেমন্তে এসে। ফলে এ ঋতু ছিল মানুষের আনন্দ উৎসবের এক ঋতু। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে সে আনন্দ পরিপূর্ণ রূপ পেত।”
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “আমাদের পূর্ব পুরুষেরা কৃষক ছিলেন। এই কথাটি আমরা যেন ভুলে যাচ্ছি। শহরের তরুণরা জানে না, গ্রামের বৈচিত্র্যময় পিঠাপুলির কথা। আমরা সেই ঐতিহ্য ও শেকড়ের কথা বলতে চাই তরুণদের, তাদের নিয়ে যেতে চাই শেকড়ে৷ পাশাপাশি এই ঋতুভিত্তিক এ উৎসবের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় ভিত্তি দিতে চাই।”
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদের সহ-সভাপতি কাজী মদিনাসহ অন্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দুটি পর্বে ভাগ করা হয়। সকালের পর্বে একক সংগীত পরিবেশন করেন সালমা আকবর, মহাদেব ঘোষ, আবু বকর সিদ্দিক, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, অনিমা মুক্তি গোমেজ, সালমা আকবর।
দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন- রূপা চক্রবর্তী, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, আহকামউল্লাহ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম, দিব্য, কথক নৃত্য সম্প্রদায়, স্পন্দন, নৃত্যজন ও সৃষ্টিশীল একাডেমি। এছাড়া শিশু সংগঠন শিল্পবৃত্তের পরিবেশনাও ছিলো নবান্ন উৎসব মঞ্চে।
বিকালের পর্বে শিশু সংগঠনের আবৃত্তি, গান ও নাচ পরিবেশন করা হয়। ঢাকার মন্দির সাংস্কৃতিক পাঠশালা, দনিয়া সবুজ কুঁড়ি কচি কাঁচার মেলা, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, তারার মেলা সংগীত একাডেমি বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নেয়। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করে স্বপ্নবিকাশ কলাকেন্দ্র ও নৃত্যমঞ্চ। একক সংগীত পরিবেশন করেন শান্তা সরকার, দেলোয়ার বাউল, সময় বড়ুয়া, সুরাইয়া পারভীন, মাহজাবিন রহমান শাওলী, আবিদা রহমান সেতু, রাকিব খান লুবা, মোহাম্মদ মারুফ হোসেন, আতাউর রহমান, শ্রাবণী গুহ রায়, ফারজানা ইভা, অবিনাশ বাউ, সঞ্জয় কবিরাজ, ফেরদৌসী কাকলি, বিশ্বজিৎ রায়, মনিরা ইসলাম গুরুপ্রিয়া, নবনীতা জায়ীদ চৌধুরী, মেহেদী ফরিদ, তামান্না নিগার তুলি।
দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি, পঞ্চায়েত, সমস্বর, বুলবুল একাডেমি অফ ফাইন আর্টস-বাফা, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, দৃষ্টি, সুরনন্দন নজরুল চর্চা কেন্দ্র ও ভিন্নধারা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন- রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন নিপু, ফয়জুল আলম পাপ্পু, বেলায়েত হোসেন, নায়লা তারান্নুম কাকলি, লাবনী পুতুল, আজিজুল বাসার মাসুম,আহসান উল্লাহ তমাল, তামান্না সারোয়ার নিপা, তামান্না তিথি ও ফয়সল আহমদ। দলীয় নৃত্য পরিবেশনায় থাকবে ধৃতি নর্তনালয়, ভাবনা, পরম্পরা নৃত্যালয়, কালারস্ অফ হিলস, নুপুরের ছন্দ, সিনথিয়া ডান্স একাডেমি ও সুরনন্দন বিদ্যাপীঠ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

নগর মাতলো নবান্নে

আপডেট সময় : ০২:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন ধানের খৈ, মুড়ি-মোয়া আর বাহারি পিঠার পসরা সাজিয়ে গান-কবিতায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে হল নগরের নবান্ন উৎসব।
গতকাল বুধবার সকালে একাডেমির উন্মুক্ত চত্বরে ২৪তম বারের মত এ আয়োজন করে নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদ। উৎসবে যোগ দিয়ে নবান্নকে ঘিরে বাঙালির সুখ-সমৃদ্ধির প্রত্যাশা করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, নবান্ন উৎসব বাঙালিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে। নবান্ন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্য উৎসব। কৃষিভিত্তিক সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন নবান্ন।
“আমি খুব ভালো পুলি পিঠা বানাতে পারি। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে ঢেঁকি ছিল। ছোটবেলায় ঢেঁকির সেই স্মৃতি কখনোই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।”
অনুষ্ঠানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহিদুর রাশিদ ভূঁইয়া বলেন, “দেশে একসময় আমন ধানই সবচেয়ে বেশি আবাদ করা হত। আর সে ধান ঘরে তোলা হত হেমন্তে এসে। ফলে এ ঋতু ছিল মানুষের আনন্দ উৎসবের এক ঋতু। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে সে আনন্দ পরিপূর্ণ রূপ পেত।”
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “আমাদের পূর্ব পুরুষেরা কৃষক ছিলেন। এই কথাটি আমরা যেন ভুলে যাচ্ছি। শহরের তরুণরা জানে না, গ্রামের বৈচিত্র্যময় পিঠাপুলির কথা। আমরা সেই ঐতিহ্য ও শেকড়ের কথা বলতে চাই তরুণদের, তাদের নিয়ে যেতে চাই শেকড়ে৷ পাশাপাশি এই ঋতুভিত্তিক এ উৎসবের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় ভিত্তি দিতে চাই।”
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদের সহ-সভাপতি কাজী মদিনাসহ অন্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দুটি পর্বে ভাগ করা হয়। সকালের পর্বে একক সংগীত পরিবেশন করেন সালমা আকবর, মহাদেব ঘোষ, আবু বকর সিদ্দিক, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, অনিমা মুক্তি গোমেজ, সালমা আকবর।
দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন- রূপা চক্রবর্তী, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, আহকামউল্লাহ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম, দিব্য, কথক নৃত্য সম্প্রদায়, স্পন্দন, নৃত্যজন ও সৃষ্টিশীল একাডেমি। এছাড়া শিশু সংগঠন শিল্পবৃত্তের পরিবেশনাও ছিলো নবান্ন উৎসব মঞ্চে।
বিকালের পর্বে শিশু সংগঠনের আবৃত্তি, গান ও নাচ পরিবেশন করা হয়। ঢাকার মন্দির সাংস্কৃতিক পাঠশালা, দনিয়া সবুজ কুঁড়ি কচি কাঁচার মেলা, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, তারার মেলা সংগীত একাডেমি বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নেয়। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করে স্বপ্নবিকাশ কলাকেন্দ্র ও নৃত্যমঞ্চ। একক সংগীত পরিবেশন করেন শান্তা সরকার, দেলোয়ার বাউল, সময় বড়ুয়া, সুরাইয়া পারভীন, মাহজাবিন রহমান শাওলী, আবিদা রহমান সেতু, রাকিব খান লুবা, মোহাম্মদ মারুফ হোসেন, আতাউর রহমান, শ্রাবণী গুহ রায়, ফারজানা ইভা, অবিনাশ বাউ, সঞ্জয় কবিরাজ, ফেরদৌসী কাকলি, বিশ্বজিৎ রায়, মনিরা ইসলাম গুরুপ্রিয়া, নবনীতা জায়ীদ চৌধুরী, মেহেদী ফরিদ, তামান্না নিগার তুলি।
দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি, পঞ্চায়েত, সমস্বর, বুলবুল একাডেমি অফ ফাইন আর্টস-বাফা, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, দৃষ্টি, সুরনন্দন নজরুল চর্চা কেন্দ্র ও ভিন্নধারা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন- রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন নিপু, ফয়জুল আলম পাপ্পু, বেলায়েত হোসেন, নায়লা তারান্নুম কাকলি, লাবনী পুতুল, আজিজুল বাসার মাসুম,আহসান উল্লাহ তমাল, তামান্না সারোয়ার নিপা, তামান্না তিথি ও ফয়সল আহমদ। দলীয় নৃত্য পরিবেশনায় থাকবে ধৃতি নর্তনালয়, ভাবনা, পরম্পরা নৃত্যালয়, কালারস্ অফ হিলস, নুপুরের ছন্দ, সিনথিয়া ডান্স একাডেমি ও সুরনন্দন বিদ্যাপীঠ।