নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট কিংবা অফিসের সামনে পার্কিংয়ে থাকা মোটরসাইকেল টার্গেট করে দীর্ঘদিন ধরে তা চুরি করছিল একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র। বিশেষ একধরণের চাবি দিয়ে আটবছরে তারা চুরি করেছে সাতশ মোটরসাইকেল। তবে শেষমেশ পড়েছে ধরা। ডিবি পুলিশ দুজনকে ধরার পাশাপাশি উদ্ধার করেছে চুরি যাওয়া ১৩টি মোটরসাইকেল।
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিবিপ্রধান বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তরা) বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়িচুরি প্রতিরোধ দলের বিশেষ অভিযানে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোর চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গত শুক্রবার রাজধানীর ডেমরা ও চাঁদপুরের কচুয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন-খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদ ও জিসান আহমেদ ওরফে সম্রাট। তাদের হেফাজত থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে দুইটি ডিসকভার, তিনটি পালসার, দুইটি অ্যাপাচে, একটি প্লাটিনা, দুইটি টিভিএস, একটি সুজুকি, একটি র্যাপিডো ও একটি হিরো মোটরসাইকেল রয়েছে। ডিবিপ্রধান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্য খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত আট বছরে তারা ৫০০-৭০০ মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করে চাঁদপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করত। এই চক্রটি ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পার্কিংয়ে থাকা মোটরসাইকেল কৌশলে ‘মাস্টার-কী’ দিয়ে লক খুলে চুরি করে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার সাগরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য সহযোগীদের অবস্থান নির্ণয় করে চাঁদপুরে অভিযান পরিচালনা করে জিসান আহমেদ ওরফে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে কচুয়ার আকানিয়া বিশ্বরোড মোড় সংলগ্ন অরুনের গ্যারেজ থেকে ১৩ টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
এদিকে ২২ সেপ্টেম্বর ১৫টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোর চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি। তাদের দুইজন সেই চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। এরমধ্যে গ্রেপ্তার খালেকের নামে বিভিন্ন থানায় ১৫টি চুরির মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবি প্রধান। ডিবিপ্রধান বলেন, গত দুই মাসে ৫০টির মতো প্রাইভেট কার আর একশর কাছাকাছি মোটরসাইকেল আমরা উদ্ধার করেছি। এগুলোর বেশিরভাগই কোনো কাগজপত্র নেই। নকল কাগজ বানিয়ে মফস্বল এলাকায় এগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। এসময় ডিবিপ্রধান মফস্বল এলাকায় এই মোটরসাইকেলগুলো কেনার আগে কাগজপত্রগুলো বিআরটিসি থেকে যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে সবাইকে সিসি ক্যামেরার আওতায় এবং অফিসের সামনে দারোয়ানকে বলে যেতে অনুরোধ করেন ডিবিপ্রধান।
নকল চাবিতে ৮ বছরে ৭০০ মোটরসাইকেল চুরি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ