ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

ধোনির শেষের ঝড়ে ফাইনালে চেন্নাই

  • আপডেট সময় : ১১:০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : রবিন উথাপা ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ঝড়ো ফিফটির পরও হার চোখ রাঙাচ্ছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। বারবার রঙ পাল্টানো ম্যাচে শেষ ওভারে পার্থক্য গড়ে দিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে উঠল চেন্নাই। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার প্রথম কোয়ালিফায়ারে ধোনির দল জিতেছে ৪ উইকেটে। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ২ বল বাকি থাকতে। টম কারানের করা শেষ ওভারে পরপর তিনটি চারে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ধোনি। চেন্নাই অধিনায়ক ৬ বলে খেলেন অপরাজিত ১৮ রানের ছোট্ট ঝড়ো ইনিংস। দারুণ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে রুতুরাজ এবার করেন ৫০ বলে ৭০ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। উথাপা ৪৪ বলে করেন ৬৩।
দিল্লির প্রথম চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে পৃথ্বী শ ছাড়া বলার মতো কিছু করতে পারেননি আর কেউ। ৩৪ বলে ৩ ছক্কা ৭ চারে তিনি খেলেন ৬০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। পাঁচ নম্বরে নেমে ৩৫ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাভ পান্ত। ২৪ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংস উপহার দেন শিমরন হেটমায়ার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৫০ বলে দুজন যোগ করেন ৮৩ রান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পৃথ্বীর ব্যাটেই উড়ন্ত সূচনা পায় দিল্লি। তরুণ ব্যাটসম্যান তৃতীয় ওভারে দিপক চাহারের পাঁচ বলের মধ্যে মারেন চারটি বাউন্ডারি। পঞ্চম ওভারে দুটি ছক্কায় ওড়ান শার্দুল ঠাকুরকে। ওই ওভারে ৪২ রানে তার ক্যাচ নিতে পারেননি ধোনি। জীবন পেয়ে পৃথ্বী ফিফটি তুলে নেন ২৭ বলে, রবীন্দ্র জাদেজাকে কাট করে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে। নিজের পরের ওভারে জাদেজাই থামান তাকে। ছক্কার চেষ্টার বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি। এরপরই পান্ত ও হেটমায়ারের ওই জুটি। তাদের ব্যাটে দেড়শ ছাড়ানো পুঁজি পায় দিল্লি। রান তাড়ায় প্রথম ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে ফাফ দু প্লেসির স্টাম্প এলোমেলো করে দেন আনরিক নরকিয়া। মুখোমুখি প্রথম বলে দারুণ শটে চার মেরে রানের খাতা খোলেন উথাপা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ঝড় বয়ে যায় আভেশ খানের ওপর দিয়ে। তার পাঁচ বলের মধ্যে উথাপা মারেন দুটি করে চার ও ছক্কা। ফিফটি তুলে নেন তিনি ৩৫ বলে।
শেষ ৭ ওভারে ৯ উইকেট হাতে রেখে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ৬২ রান। ম্যাচ নাটকীয় মোড় নেয় কারানের পরের ওভারে। বাউন্ডারিতে শ্রেয়াস আইয়ারের অসাধারণ এক ক্যাচে বিদায় নেন উথাপা। শেষ বলে ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন শার্দুল। পরের ওভারে রান আউটে বিদায় নেন আম্বাতি রায়ডুও। ৩৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে রুতুরাজ এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। তার ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭০ রানের ঝড় থামান আভেশ। একটা পর্যায়ে চেন্নাইয়ের সামনে সমীকরণ দাঁড়ায় ৮ বলে ১৯। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে আভেশকে ছক্কায় উড়িয়ে ব্যবধান কমান ধোনি। শেষ ওভারে ১৩ রানের প্রয়োজনে প্রথম বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মইন আলি। পরের দুই বলে ধোনির ব্যাট থেকে আসে দুটি বাউন্ডারি। এরপর কারান দেন ওয়াইড। আবার চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন ধোনি। এবার এমনিতে ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না ধোনি। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্বে এই দিল্লির বিপক্ষেই তার ২৭ বলে ১৮ রানের ইনিংস আলোচনার খোরাক জোগায় প্রচুর। তবে এবার তিনি আরও একবার প্রমাণ করলেন তার কার্যকারিতা। ক্রিকেটার হিসেবে এবারই শেষ আইপিএল, এমন আভাস দেওয়া চেন্নাই অধিনায়কই শেষ পর্যন্ত দলকে নিলেন ফাইনালে। এই নিয়ে আইপিএলে ১২ আসরে অংশ নিয়ে ৯ বারই ফাইনালে উঠল চেন্নাই, প্রতিবারই ধোনির নেতৃত্বে। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি মাঝে দুই আসরে ছিল না নিষেধাজ্ঞার কারণে। ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাচ্ছে দিল্লি। সোমবার এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৭২/৫ (পৃথ্বী ৬০, ধাওয়ান ৭, শ্রেয়াস ১, আকসার ১, পান্ত ৫১, হেটমায়ার ৩৭, টম কারান ০; দিপক চাহার ৩-০-২৬-০, হেইজেলউড ৪-০-২৯-২, শার্দুল ৩-০-৩৬-০, জাদেজা ৩-০-২৩-১, মইন ৪-০-২৭-১, ব্রাভো ৩-০-৩১-১) চেন্নাই সুপার কিংস: ১৯.৪ ওভারে ১৭৩/৬ (রুতুরাজ ৭০, দু প্লেসি ১, উথাপা ৬৩, শার্দুল ০, রায়ডু ১, মইন ১৬, ধোনি ১৮, জাদেজা ০*; নরকিয়া ৪-০-৩১-১, আভেশ ৪-০-৪৭-১, রাবাদা ৩-০-২৩-০, আকসার ৩-০-২৩-০, টম কারান ৩.৪-০-২৯-৩, অশ্বিন ২-০১৯-০)
ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রুতুরাজ গায়কোয়াড়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ধোনির শেষের ঝড়ে ফাইনালে চেন্নাই

আপডেট সময় : ১১:০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক : রবিন উথাপা ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ঝড়ো ফিফটির পরও হার চোখ রাঙাচ্ছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। বারবার রঙ পাল্টানো ম্যাচে শেষ ওভারে পার্থক্য গড়ে দিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে উঠল চেন্নাই। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার প্রথম কোয়ালিফায়ারে ধোনির দল জিতেছে ৪ উইকেটে। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ২ বল বাকি থাকতে। টম কারানের করা শেষ ওভারে পরপর তিনটি চারে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ধোনি। চেন্নাই অধিনায়ক ৬ বলে খেলেন অপরাজিত ১৮ রানের ছোট্ট ঝড়ো ইনিংস। দারুণ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে রুতুরাজ এবার করেন ৫০ বলে ৭০ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। উথাপা ৪৪ বলে করেন ৬৩।
দিল্লির প্রথম চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে পৃথ্বী শ ছাড়া বলার মতো কিছু করতে পারেননি আর কেউ। ৩৪ বলে ৩ ছক্কা ৭ চারে তিনি খেলেন ৬০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। পাঁচ নম্বরে নেমে ৩৫ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাভ পান্ত। ২৪ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংস উপহার দেন শিমরন হেটমায়ার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৫০ বলে দুজন যোগ করেন ৮৩ রান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পৃথ্বীর ব্যাটেই উড়ন্ত সূচনা পায় দিল্লি। তরুণ ব্যাটসম্যান তৃতীয় ওভারে দিপক চাহারের পাঁচ বলের মধ্যে মারেন চারটি বাউন্ডারি। পঞ্চম ওভারে দুটি ছক্কায় ওড়ান শার্দুল ঠাকুরকে। ওই ওভারে ৪২ রানে তার ক্যাচ নিতে পারেননি ধোনি। জীবন পেয়ে পৃথ্বী ফিফটি তুলে নেন ২৭ বলে, রবীন্দ্র জাদেজাকে কাট করে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে। নিজের পরের ওভারে জাদেজাই থামান তাকে। ছক্কার চেষ্টার বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি। এরপরই পান্ত ও হেটমায়ারের ওই জুটি। তাদের ব্যাটে দেড়শ ছাড়ানো পুঁজি পায় দিল্লি। রান তাড়ায় প্রথম ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে ফাফ দু প্লেসির স্টাম্প এলোমেলো করে দেন আনরিক নরকিয়া। মুখোমুখি প্রথম বলে দারুণ শটে চার মেরে রানের খাতা খোলেন উথাপা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ঝড় বয়ে যায় আভেশ খানের ওপর দিয়ে। তার পাঁচ বলের মধ্যে উথাপা মারেন দুটি করে চার ও ছক্কা। ফিফটি তুলে নেন তিনি ৩৫ বলে।
শেষ ৭ ওভারে ৯ উইকেট হাতে রেখে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ৬২ রান। ম্যাচ নাটকীয় মোড় নেয় কারানের পরের ওভারে। বাউন্ডারিতে শ্রেয়াস আইয়ারের অসাধারণ এক ক্যাচে বিদায় নেন উথাপা। শেষ বলে ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন শার্দুল। পরের ওভারে রান আউটে বিদায় নেন আম্বাতি রায়ডুও। ৩৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে রুতুরাজ এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। তার ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭০ রানের ঝড় থামান আভেশ। একটা পর্যায়ে চেন্নাইয়ের সামনে সমীকরণ দাঁড়ায় ৮ বলে ১৯। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে আভেশকে ছক্কায় উড়িয়ে ব্যবধান কমান ধোনি। শেষ ওভারে ১৩ রানের প্রয়োজনে প্রথম বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মইন আলি। পরের দুই বলে ধোনির ব্যাট থেকে আসে দুটি বাউন্ডারি। এরপর কারান দেন ওয়াইড। আবার চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন ধোনি। এবার এমনিতে ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না ধোনি। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্বে এই দিল্লির বিপক্ষেই তার ২৭ বলে ১৮ রানের ইনিংস আলোচনার খোরাক জোগায় প্রচুর। তবে এবার তিনি আরও একবার প্রমাণ করলেন তার কার্যকারিতা। ক্রিকেটার হিসেবে এবারই শেষ আইপিএল, এমন আভাস দেওয়া চেন্নাই অধিনায়কই শেষ পর্যন্ত দলকে নিলেন ফাইনালে। এই নিয়ে আইপিএলে ১২ আসরে অংশ নিয়ে ৯ বারই ফাইনালে উঠল চেন্নাই, প্রতিবারই ধোনির নেতৃত্বে। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি মাঝে দুই আসরে ছিল না নিষেধাজ্ঞার কারণে। ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাচ্ছে দিল্লি। সোমবার এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৭২/৫ (পৃথ্বী ৬০, ধাওয়ান ৭, শ্রেয়াস ১, আকসার ১, পান্ত ৫১, হেটমায়ার ৩৭, টম কারান ০; দিপক চাহার ৩-০-২৬-০, হেইজেলউড ৪-০-২৯-২, শার্দুল ৩-০-৩৬-০, জাদেজা ৩-০-২৩-১, মইন ৪-০-২৭-১, ব্রাভো ৩-০-৩১-১) চেন্নাই সুপার কিংস: ১৯.৪ ওভারে ১৭৩/৬ (রুতুরাজ ৭০, দু প্লেসি ১, উথাপা ৬৩, শার্দুল ০, রায়ডু ১, মইন ১৬, ধোনি ১৮, জাদেজা ০*; নরকিয়া ৪-০-৩১-১, আভেশ ৪-০-৪৭-১, রাবাদা ৩-০-২৩-০, আকসার ৩-০-২৩-০, টম কারান ৩.৪-০-২৯-৩, অশ্বিন ২-০১৯-০)
ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রুতুরাজ গায়কোয়াড়।