ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে মানুষই ব্যবস্থা নেবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • আপডেট সময় : ০৫:০৯:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

বুধবার হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজায় নৌ পুলিশের সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যখন তখন রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনে যে জনদুর্ভোগ হয়, তাতে ব্যবস্থা নিতে গেলে সমালোচনার শিকার হয় আনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে কারণে তিনি অপেক্ষায় আছেন, ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেবে’।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজায় নৌ পুলিশের সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তরায় দুটি থানায় হামলা হয়েছে, হামলা হয়েছে কাশিমপুর কারাগারেও। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এগুলোর কোনো প্রতিকারই করতে পারছে না। কেন এমন হচ্ছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিকার যে করতে পারছে না তা নয়। উত্তরার ঘটনা নিয়ে আমরা আলাপ করছি। আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এটার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কারাগারে হামলার ক্ষেত্রেও ‘একই কর্ম প্রক্রিয়া’ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আসামি ধরতে গেলে তারা উল্টা হামলার শিকার হচ্ছেন। মঙ্গলবার উত্তরায় থানায় হামলার মত ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “মাঠ পর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে ক্লিয়ার। এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।

আপনারা এখন যেভাবে প্রশ্ন করছেন আগে কিন্তু এভাবে প্রশ্ন করতে পারতেন না। আপনারা যা প্রশ্ন করছেন আমরা উত্তর দিচ্ছি। আপনারা যা লেখেন আমরা বলতেছি। পুলিশের ক্ষেত্রেও তারা যেন মানবিক হয়, সেজন্য আইজি সাহেব তাদের ট্রেনিংয়েও চেইঞ্জ করতেছেন।

তবে এসব করতে সময় লাগবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে বললেন আর কালকে হয়ে যাবে বিষয়টা তো এরকম না। আর এই ধরেন উত্তরার মত দুই একটা ঘটনা তো ঘটবেই। কিন্তু আপনাদের দেখতে হবে আমরা এসবের ক্ষেত্রে অ্যাকশন নিচ্ছে কিনা।

আন্দোলনের নামে কারণে-অকারণে রাস্তাঘাট বন্ধ করায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। কিন্তু পুলিশ কী করছে? সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্যই কি এসব হচ্ছে? উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, এক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি চাচ্ছি। আপনি একটা সত্যি কথা বলেছেন প্রথমে। কারণে অকারণে বিভিন্ন রাস্তাঘাট বন্ধ করছে এটা যদি আপনারা ভালোভাবে প্রচার করেন। সে সময় কিন্তু জনগণই অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। এখনই কিন্তু মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। গতরাতে দেখেন গ্রামীণফোনের হেড অফিস ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করে রাখছে।

সবার ধৈর্যের যে সীমা আছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ধৈর্যের সীমা শেষ করে দিচ্ছে তারা। জনগণের কিন্তু একটা ধৈর্যের বাঁধ আছে, সেটা ভেঙে গেলে জনগণই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আবার যদি আমরা কোনো সময় অ্যকশনে যাই তাহলে আপনারা বলেন পুলিশ আবার আগের পুলিশের মতো হয়ে গেছে।

উপদেষ্টা বলেন, যারা আন্দোলন করছে, রাস্তাঘাট বন্ধ না করে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়গুলো জানাতে পারে। এই যে ছাত্ররা এসব করছে, তাদের তো স্কুল কলেজের মাঠ আছে তারা সেখানে করতে পারে।

রেড নোটিস জারির প্রক্রিয়া শুরু: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১০৫ জন আসামি। তার মধ্যে ৩৬ জনের মতো গ্রেফতার হয়েছেন। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ‘যথেষ্ট তৎপর না হওয়ার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা হয়েছে আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি। আর মেইন জন (শেখ হাসিনা) যে, আপনারা জানেন তিনি তো বাংলাদেশেই নাই। যারা দেশে নাই তাদের ফেরত আনতে আমরা চেষ্টা করতেছি যেহেতু পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে আমাদের একটা ট্রিটি আছে।

পলাতকদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারির চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলমকে বলার অনুরোধ করেন। পাশে থাকা আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কিছু আসামির বিষয়ে আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিসের (জারির) অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এটা প্রসেস করছেন এবং আমার বিশ্বাস অচিরেই এটা ইস্যু হবে। রেড নোটিসগুলো ইস্যু হলে তখন হোস্ট কান্ট্রির পুলিশের একটা নৈতিক দায়ভার আসবে তাদেরকে অ্যারেস্ট করার।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মব বন্ধ না করলে ডেভিল হিসেবে ট্রিট করবো: উপদেষ্টা মাহফুজ

ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে মানুষই ব্যবস্থা নেবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৫:০৯:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যখন তখন রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনে যে জনদুর্ভোগ হয়, তাতে ব্যবস্থা নিতে গেলে সমালোচনার শিকার হয় আনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে কারণে তিনি অপেক্ষায় আছেন, ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেবে’।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজায় নৌ পুলিশের সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তরায় দুটি থানায় হামলা হয়েছে, হামলা হয়েছে কাশিমপুর কারাগারেও। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এগুলোর কোনো প্রতিকারই করতে পারছে না। কেন এমন হচ্ছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিকার যে করতে পারছে না তা নয়। উত্তরার ঘটনা নিয়ে আমরা আলাপ করছি। আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এটার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কারাগারে হামলার ক্ষেত্রেও ‘একই কর্ম প্রক্রিয়া’ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আসামি ধরতে গেলে তারা উল্টা হামলার শিকার হচ্ছেন। মঙ্গলবার উত্তরায় থানায় হামলার মত ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “মাঠ পর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে ক্লিয়ার। এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।

আপনারা এখন যেভাবে প্রশ্ন করছেন আগে কিন্তু এভাবে প্রশ্ন করতে পারতেন না। আপনারা যা প্রশ্ন করছেন আমরা উত্তর দিচ্ছি। আপনারা যা লেখেন আমরা বলতেছি। পুলিশের ক্ষেত্রেও তারা যেন মানবিক হয়, সেজন্য আইজি সাহেব তাদের ট্রেনিংয়েও চেইঞ্জ করতেছেন।

তবে এসব করতে সময় লাগবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে বললেন আর কালকে হয়ে যাবে বিষয়টা তো এরকম না। আর এই ধরেন উত্তরার মত দুই একটা ঘটনা তো ঘটবেই। কিন্তু আপনাদের দেখতে হবে আমরা এসবের ক্ষেত্রে অ্যাকশন নিচ্ছে কিনা।

আন্দোলনের নামে কারণে-অকারণে রাস্তাঘাট বন্ধ করায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। কিন্তু পুলিশ কী করছে? সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্যই কি এসব হচ্ছে? উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, এক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি চাচ্ছি। আপনি একটা সত্যি কথা বলেছেন প্রথমে। কারণে অকারণে বিভিন্ন রাস্তাঘাট বন্ধ করছে এটা যদি আপনারা ভালোভাবে প্রচার করেন। সে সময় কিন্তু জনগণই অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। এখনই কিন্তু মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। গতরাতে দেখেন গ্রামীণফোনের হেড অফিস ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করে রাখছে।

সবার ধৈর্যের যে সীমা আছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ধৈর্যের সীমা শেষ করে দিচ্ছে তারা। জনগণের কিন্তু একটা ধৈর্যের বাঁধ আছে, সেটা ভেঙে গেলে জনগণই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আবার যদি আমরা কোনো সময় অ্যকশনে যাই তাহলে আপনারা বলেন পুলিশ আবার আগের পুলিশের মতো হয়ে গেছে।

উপদেষ্টা বলেন, যারা আন্দোলন করছে, রাস্তাঘাট বন্ধ না করে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়গুলো জানাতে পারে। এই যে ছাত্ররা এসব করছে, তাদের তো স্কুল কলেজের মাঠ আছে তারা সেখানে করতে পারে।

রেড নোটিস জারির প্রক্রিয়া শুরু: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১০৫ জন আসামি। তার মধ্যে ৩৬ জনের মতো গ্রেফতার হয়েছেন। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ‘যথেষ্ট তৎপর না হওয়ার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা হয়েছে আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি। আর মেইন জন (শেখ হাসিনা) যে, আপনারা জানেন তিনি তো বাংলাদেশেই নাই। যারা দেশে নাই তাদের ফেরত আনতে আমরা চেষ্টা করতেছি যেহেতু পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে আমাদের একটা ট্রিটি আছে।

পলাতকদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারির চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলমকে বলার অনুরোধ করেন। পাশে থাকা আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কিছু আসামির বিষয়ে আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিসের (জারির) অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এটা প্রসেস করছেন এবং আমার বিশ্বাস অচিরেই এটা ইস্যু হবে। রেড নোটিসগুলো ইস্যু হলে তখন হোস্ট কান্ট্রির পুলিশের একটা নৈতিক দায়ভার আসবে তাদেরকে অ্যারেস্ট করার।