প্রত্যাশা ডেস্ক: যেকোনো কিছুতেই আসক্তি ভালো নয়। এর মধ্যে ধূমপানে আসক্তিকে বেশ খারাপই বলা চলে। অনেকে শারীরিক নানা জটিলতা বা চিকিৎসকের পরামর্শে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু চাইলেই কি আর ছাড়া যায়। এক অর্থে ধূমপান ত্যাগ সবচেয়ে কঠিন কাজ। এ জন্য দরকার প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি ও ত্যাগের মানসিকতা। অনেক চেষ্টা-তদবির করার পরও খুব কমসংখ্যক মানুষই ধূমপানের আসক্তি সফলভাবে ত্যাগ করতে পারেন।
এ রকমই এক ব্যক্তি হচ্ছেন তুরস্কের ইব্রাহিম ইউসেল। প্রায় ১১ বছর আগে ধূমপান ত্যাগের চেষ্টা করতে গিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। তখন টেলিভিশনসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি শুরু হয়। কারণ, ধূমপান ত্যাগ করতে তিনি অভিনব এক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন। মাথায় কায়দা করে তিনি খাঁচা পরেছিলেন।
তুর্কি এই ব্যক্তি ধূমপান ত্যাগ করতে হেলমেটের মতো ধাতব খাঁচা বানিয়ে নিয়েছিলেন।
২০১৩ সালে তুরস্কের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেগুলোতে বলা হয়েছিল, ২৬ বছর ধরে ইব্রাহিম ধূমপান করছিলেন। প্রতিদিন তাঁর দুই প্যাকেট সিগারেট লাগত। তিনি বেশ কয়েক দফায় ধূমপান ত্যাগ করার চেষ্টা করেছিলেন। প্রতিবছরই তিনি তিন সন্তানের জন্মদিন এবং নিজের বিবাহবার্ষিকীতে পরিবারকে ধূমপান ত্যাগের প্রতিশ্রুতি দিতেন। কিন্তু কয়েক দিন পর আবার ধূমপান শুরু করতেন।
মাথায় খাঁচা পরিহিত ইব্রাহিমের নানা ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি-ভিডিওতে তাঁর স্ত্রীকে খাঁচা লাগিয়ে দিতে বা খুলতে দেখা গেছে। তবে এই ব্যক্তি ধূমপান ত্যাগ করতে পেরেছেন কি না, তার অকাট্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ইব্রাহিম ইউসেল নামের এই তুর্কি ভদ্রলোক ১৩ বছর আগে যখন ধূমপান ছাড়তে মাথায় এই খাঁচা পরা শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৪২ বছর। তাঁর স্ত্রী হচ্ছেন একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর কাছে ওই খাঁচার চাবি রয়েছে। কেবল খাবারের সময় তিনি খাঁচার তালা খুলে দেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ধূমপানের কারণে প্রতিবছর ৮০ লাখ মানুষ মারা যায়। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে ধূমপানের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। তামাক কোম্পানিগুলো এসব দেশে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এবং তামাক বাজারজাত করে থাকে।
যাঁরা ধূমপান করেন না, তামাক তাঁদের জন্যও ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। কেউ ধূমপান করার সময় তাঁর আশপাশে থাকা মানুষের ওপরও ধূমপানের খারাপ প্রভাব পড়ে থাকে। এতে বছরে সারা বিশ্বে বছরে ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্বের মোট শিশুর অর্ধেক বাতাসে তামাকের দূষিত ধোঁয়ার নিশ্বাস নিয়ে থাকে। এভাবে প্রতিবছর ধূমপানের ধোঁয়ায় ক্ষতির শিকার ৬৫ হাজার শিশু মারা যায়। গর্ভবতী নারীরা ধূমপান করলে গর্ভের শিশুর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়ে থাকে।