ঢাকা ০২:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশয়

  • আপডেট সময় : ০১:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১২২ বার পড়া হয়েছে

খুলনা সংবাদদাতা : খুলনা বিভাগে চলতি মৌসুমে মাত্র এক মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও সংগ্রহের এই চিত্র নাজুক। এতে আমন মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকার কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে, খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারি কার্যাদেশের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের নির্ধারিত সময়ের পর মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল আকারে সংগ্রহ করা হবে।
জানা যায়, খুলনা বিভাগের হাট-বাজার এখন সরগরম ধান বেচা কেনায়। দৈনন্দিন চাহিদা ও আসন্ন চাষাবাদের অর্থ জোগাড়ে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের গোলায় থাকা আমন ধান হাটে বিক্রি করছেন। তবে, হাটে ধানের যোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় ধানের দাম কমে গেছে। এতে লোকসানের কবলে পড়ছেন কৃষকরা। এদিকে, সরকারিভাবে সংগ্রহের জন্য ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাও কৃষকের উৎপাদন মূলের চেয়ে কম। ফলে খাদ্য বিভাগের কাছে ধান সরবরাহে আগ্রহ নেই কৃষদের। খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের কাছে আমন মৌসুমে ধান বিক্রি করার জন্য খুলনা বিভাগে নিবন্ধিত কৃষক রয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ১১০ জন। চলতি আমন মৌসুমে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪০ হাজার ৪৬৯ টন ধান। কিন্তু সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার সাত দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ মেট্রিক টন ধান। সে কারণে ধান সংগ্রহের নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কৃষকদের মধ্যে। অন্যদিকে খুলনা বিভাগে ৭৩৪ জন মিলারের কাছ থেকে ৬৫ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন চালের । যার মধ্যে ৬০ ভাগ চাল সরবরাহ করেছে মিল মালিকরা। মিলাররা বলছেন, মোটা ধানের উৎপাদন ও প্রাপ্তি কম, সরকারি ও বাজার দরে ব্যবধান ন্যূনতম ৫টাকা। ফলে চাল সরবরাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কৃষক কার্ত্তিক বিশ্বাস বলেন, ‘গত সপ্তাহেও বটিয়াঘাট হাটে একমণ ধানের দাম ছিল ১ হাজার ৫০০টাকা। এখন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে একমণ ধানের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকার বেশি দিচ্ছে না। মণ প্রতি ২০০ টাকা কমে যাওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খুলনা জেলা ও মহানগর রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারিভাবে যে মোটা চাল সংগ্রহ করা হয় বর্তমানে সেই চালের উৎপাদন কম। ফলে আমাদের বেশি দামে চিকন চাল কিনে সরবরাহ করতে হচ্ছে। এ কারণে মিল মালিকরা লোকসানের মুখে পড়েছে। সরকার শুধু মোটা চাল সংগ্রহ না করে ন্যায্যমূল্যে চিকন চাল সংগ্রহ করলে মিল মালিকরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এতে সরকারের সংগ্রহ ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। খুলনা খাদ্য অধিদপ্তরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকার কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আমাদের মূল লক্ষ্য, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত হয় আমরা সেদিকেও জোর দিয়েছি। যে পরিমাণ সংগ্রহ ঘাটতি থাকবে সেই পরিমাণ সরকারি কার্যাদেশের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রাপূরণের নির্ধারিত সময়ের পর মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল আকারে সংগ্রহ করা হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ম না মেনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ১৫ গাড়িচালকের নামে ঝিলমিলে প্লট বরাদ্দ

ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশয়

আপডেট সময় : ০১:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

খুলনা সংবাদদাতা : খুলনা বিভাগে চলতি মৌসুমে মাত্র এক মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও সংগ্রহের এই চিত্র নাজুক। এতে আমন মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকার কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে, খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারি কার্যাদেশের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের নির্ধারিত সময়ের পর মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল আকারে সংগ্রহ করা হবে।
জানা যায়, খুলনা বিভাগের হাট-বাজার এখন সরগরম ধান বেচা কেনায়। দৈনন্দিন চাহিদা ও আসন্ন চাষাবাদের অর্থ জোগাড়ে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের গোলায় থাকা আমন ধান হাটে বিক্রি করছেন। তবে, হাটে ধানের যোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় ধানের দাম কমে গেছে। এতে লোকসানের কবলে পড়ছেন কৃষকরা। এদিকে, সরকারিভাবে সংগ্রহের জন্য ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাও কৃষকের উৎপাদন মূলের চেয়ে কম। ফলে খাদ্য বিভাগের কাছে ধান সরবরাহে আগ্রহ নেই কৃষদের। খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের কাছে আমন মৌসুমে ধান বিক্রি করার জন্য খুলনা বিভাগে নিবন্ধিত কৃষক রয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ১১০ জন। চলতি আমন মৌসুমে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪০ হাজার ৪৬৯ টন ধান। কিন্তু সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার সাত দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ মেট্রিক টন ধান। সে কারণে ধান সংগ্রহের নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কৃষকদের মধ্যে। অন্যদিকে খুলনা বিভাগে ৭৩৪ জন মিলারের কাছ থেকে ৬৫ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন চালের । যার মধ্যে ৬০ ভাগ চাল সরবরাহ করেছে মিল মালিকরা। মিলাররা বলছেন, মোটা ধানের উৎপাদন ও প্রাপ্তি কম, সরকারি ও বাজার দরে ব্যবধান ন্যূনতম ৫টাকা। ফলে চাল সরবরাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কৃষক কার্ত্তিক বিশ্বাস বলেন, ‘গত সপ্তাহেও বটিয়াঘাট হাটে একমণ ধানের দাম ছিল ১ হাজার ৫০০টাকা। এখন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে একমণ ধানের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকার বেশি দিচ্ছে না। মণ প্রতি ২০০ টাকা কমে যাওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খুলনা জেলা ও মহানগর রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারিভাবে যে মোটা চাল সংগ্রহ করা হয় বর্তমানে সেই চালের উৎপাদন কম। ফলে আমাদের বেশি দামে চিকন চাল কিনে সরবরাহ করতে হচ্ছে। এ কারণে মিল মালিকরা লোকসানের মুখে পড়েছে। সরকার শুধু মোটা চাল সংগ্রহ না করে ন্যায্যমূল্যে চিকন চাল সংগ্রহ করলে মিল মালিকরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এতে সরকারের সংগ্রহ ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। খুলনা খাদ্য অধিদপ্তরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকার কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আমাদের মূল লক্ষ্য, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত হয় আমরা সেদিকেও জোর দিয়েছি। যে পরিমাণ সংগ্রহ ঘাটতি থাকবে সেই পরিমাণ সরকারি কার্যাদেশের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রাপূরণের নির্ধারিত সময়ের পর মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল আকারে সংগ্রহ করা হবে।