নারী ও শিশু ডেস্ক: ধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ। এটি শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও একজন নারীর ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই নির্মম অভিজ্ঞতা একজন নারীকে দীর্ঘমেয়াদে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। আতঙ্ক, লজ্জা, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, এমনকি আত্মহত্যার প্রচেষ্টাও হতে পারে। সামাজিক কটাক্ষ ও অবহেলার ভয় অনেক ভুক্তভোগীকেই নীরবে কষ্ট সহ্য করতে বাধ্য করে। ফলে তাদের মানসিক পুনর্বাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
ধর্ষণের শিকার নারীরা সাধারণত তীব্র মানসিক যন্ত্রণা ও ট্রমার ভেতর দিয়ে যান। আতঙ্কজনিত ব্যাধি, উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও দুঃস্বপ্নের শিকার হন অনেকে। সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, আইনগত প্রক্রিয়ার জটিলতা ও অপরাধীর শাস্তি না হওয়ার ভয় তাদের মানসিক অবস্থাকে আরও দুর্বল করে তোলে। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে তারা নিজেদের অসহায় ভাবতে থাকেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সমস্যায় পড়েন।
ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক পুনর্বাসনের জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তা হলো-
মানসিক চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং: ট্রমা কাটিয়ে উঠতে সাইকোলজিস্ট বা থেরাপিস্টের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি; বিশেষত ট্রমা-ফোকাসড থেরাপি তাদের মানসিক সুস্থতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।
পরিবারের সহায়তা: পরিবার যদি ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তিনি মানসিকভাবে শক্ত হতে পারেন। তাদের জন্য একটি নিরাপদ ও ভালোবাসাময় পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।
আইনি ও সামাজিক সহায়তা: ধর্ষণের শিকার নারীদের দ্রুত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কার্যকরী আইন প্রয়োগ এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো জরুরি।
পেশাগত ও সামাজিক পুনর্বাসন: অনেক ভুক্তভোগী কাজ বা শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তাদের কর্মসংস্থান ও পুনরায় শিক্ষালাভের সুযোগ দেওয়া উচিৎ। এতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।
ধর্ষণের শিকার নারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, তাদের মানসিক শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করা এবং সমাজে পুনর্বাসিত করতে উদ্যোগ নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই তারা নতুনভাবে জীবন শুরু করার সাহস পাবেন।