ঢাকা ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর গণপদযাত্রায় পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৩:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের সদস্যরা মঙ্গলবার শাহবাগ থেকে গণপদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের গণপদযাত্রায় বাধা দিয়েছে পুলিশ। পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে চড়াও হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বেলা পৌনে তিনটার দিকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়। ৯ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা করেন পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা। পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশে গেলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়।

এ সময় পুলিশের বাধা অতিক্রম করে পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান। তখন পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা শুরু করে। পুলিশের লাঠিপেটার মুখে মিছিলকারীরা শাহবাগের দিকে ফিরে যান।

ছবি সংগৃহীত

বিকেল পৌনে চারটার দিকে সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অদ্রিতা রায় পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের পূর্বঘোষিত গণপদযাত্রায় পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমরা এই ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ দাবি করেছিলাম। কিন্তু সে তো পদত্যাগ করল না, রমজান মাসে আমাদের ওপর হামলা করা হলো, মেয়েদের পোশাক ছেঁড়া হলো। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা গণ-আন্দোলন গড়ে তুলব।’

পুলিশের রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনারসহ পুলিশের পাঁচজন সদস্যকে আহত করেছেন। পুলিশ তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। পুলিশ কাউকে লাঠিপেটা করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

ছবি সংগৃহীত

ধর্ষকের প্রকাশ্য শাস্তিসহ ৬ দাবি শিক্ষার্থীদের: এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ১৭ মিনিট শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখার পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফিরে যান রাজধানীর ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। অবরোধ কর্মসূচি থেকে ধর্ষকের প্রকাশ্য শাস্তিসহ মোট ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

ছবি সংগৃহীত

অবরোধ চলাকালে সংবাদ সম্মেলনে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজের শিক্ষার্থী মো. নকীব সাদাত বলেন, এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল অন্যরকম। আমরা ভেবেছিলাম তাদের হাত ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু উল্টো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের পরিমাণও বেড়েছে। সেজন্য আমরা আজ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে আমরা ছয়টি দাবি ঠিক করেছি। এগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

দাবিগুলো হচ্ছে –

১. ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়।

২. ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

৩. যদি কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেফতার করা, মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করা এবং ভিকটিম ও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটিতেও অসামঞ্জস্য থাকলে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে ধর্ষিত নারী এবং পুরুষের স্পার্ম পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

৪. ধর্ষণের বিচার সালিশের মাধ্যমে করা যাবে না। এর বিচার নিশ্চিত করবে শুধুমাত্র রাষ্ট্র। সালিশি বিচার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি অনৈতিক পন্থায় প্রশাসন কর্তৃক যদি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামি ছাড়া পায়, তবে তদন্ত অনুযায়ী কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।

৫. অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ দ্বারা ধর্ষণের শিকার হলে সর্বোচ্চ ফাঁসি এবং অন্তত আমৃত্যু কারাদণ্ড কার্যকর করতে হবে।

৬. বর্তমানে চলমান সব ধর্ষণ মামলার বিচার আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহি করতে হবে।

অবরোধ কর্মসূচিতে ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালবাগ মডেল কলেজ, উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও হামদর্দ কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে রাজপথে নির্মাতারা: দেশজুড়ে চলমান বিভিন্ন সঙ্কটের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে নারী ও শিশুদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও ধর্ষণ। এ নিয়ে রীতিমত টালমাটাল দেশের পরিস্থিতি। বিশেষকরে, মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুরের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়া ৮ বছরের শিশু আছিয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত ঘটনায় বিস্মিত গোটা দেশ।

ছবি সংগৃহীত

ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে চলেছে ধর্ষণ। নারী ও শিশুদের ওপর হওয়া এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। সবার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড। রাস্তায় নেমে এসেছেন নির্মাতারা।

ধর্ষণের প্রতিবাদে ডিরেক্টরস গিল্ড মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। এসময় ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ উপস্থিত ছিলেন নাটকের শিল্পী ও নির্মাতারা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর গণপদযাত্রায় পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা

আপডেট সময় : ০৮:৪৩:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের গণপদযাত্রায় বাধা দিয়েছে পুলিশ। পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে চড়াও হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বেলা পৌনে তিনটার দিকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়। ৯ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা করেন পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা। পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশে গেলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়।

এ সময় পুলিশের বাধা অতিক্রম করে পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান। তখন পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা শুরু করে। পুলিশের লাঠিপেটার মুখে মিছিলকারীরা শাহবাগের দিকে ফিরে যান।

ছবি সংগৃহীত

বিকেল পৌনে চারটার দিকে সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অদ্রিতা রায় পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের পূর্বঘোষিত গণপদযাত্রায় পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমরা এই ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ দাবি করেছিলাম। কিন্তু সে তো পদত্যাগ করল না, রমজান মাসে আমাদের ওপর হামলা করা হলো, মেয়েদের পোশাক ছেঁড়া হলো। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা গণ-আন্দোলন গড়ে তুলব।’

পুলিশের রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনারসহ পুলিশের পাঁচজন সদস্যকে আহত করেছেন। পুলিশ তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। পুলিশ কাউকে লাঠিপেটা করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

ছবি সংগৃহীত

ধর্ষকের প্রকাশ্য শাস্তিসহ ৬ দাবি শিক্ষার্থীদের: এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ১৭ মিনিট শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখার পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফিরে যান রাজধানীর ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। অবরোধ কর্মসূচি থেকে ধর্ষকের প্রকাশ্য শাস্তিসহ মোট ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

ছবি সংগৃহীত

অবরোধ চলাকালে সংবাদ সম্মেলনে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজের শিক্ষার্থী মো. নকীব সাদাত বলেন, এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল অন্যরকম। আমরা ভেবেছিলাম তাদের হাত ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু উল্টো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের পরিমাণও বেড়েছে। সেজন্য আমরা আজ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে আমরা ছয়টি দাবি ঠিক করেছি। এগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

দাবিগুলো হচ্ছে –

১. ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়।

২. ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

৩. যদি কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেফতার করা, মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করা এবং ভিকটিম ও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটিতেও অসামঞ্জস্য থাকলে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে ধর্ষিত নারী এবং পুরুষের স্পার্ম পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

৪. ধর্ষণের বিচার সালিশের মাধ্যমে করা যাবে না। এর বিচার নিশ্চিত করবে শুধুমাত্র রাষ্ট্র। সালিশি বিচার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি অনৈতিক পন্থায় প্রশাসন কর্তৃক যদি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামি ছাড়া পায়, তবে তদন্ত অনুযায়ী কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।

৫. অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ দ্বারা ধর্ষণের শিকার হলে সর্বোচ্চ ফাঁসি এবং অন্তত আমৃত্যু কারাদণ্ড কার্যকর করতে হবে।

৬. বর্তমানে চলমান সব ধর্ষণ মামলার বিচার আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহি করতে হবে।

অবরোধ কর্মসূচিতে ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালবাগ মডেল কলেজ, উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও হামদর্দ কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে রাজপথে নির্মাতারা: দেশজুড়ে চলমান বিভিন্ন সঙ্কটের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে নারী ও শিশুদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও ধর্ষণ। এ নিয়ে রীতিমত টালমাটাল দেশের পরিস্থিতি। বিশেষকরে, মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুরের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়া ৮ বছরের শিশু আছিয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত ঘটনায় বিস্মিত গোটা দেশ।

ছবি সংগৃহীত

ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে চলেছে ধর্ষণ। নারী ও শিশুদের ওপর হওয়া এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। সবার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড। রাস্তায় নেমে এসেছেন নির্মাতারা।

ধর্ষণের প্রতিবাদে ডিরেক্টরস গিল্ড মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। এসময় ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ উপস্থিত ছিলেন নাটকের শিল্পী ও নির্মাতারা।