ঢাকা ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড়: দ্রুতবিচার ও ফাঁসির দাবি

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশ

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং মাগুরায় ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নানা স্লোগান দিতে থাকেন -পোস্টার ছবিটি তৈরি করেছেন মেহেদী হাসান

বিশেষ সংবাদদাতা: মাগুরায় আট বছর বয়সি শিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের ওপর সহিংসতা, হেনস্তা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশের মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে বয়ে চলেছে তীব্র নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড়। এরইমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনগুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দও বিক্ষোভে নেমে পড়েছেন। আর শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে মাগুরা জেলা আদালত চত্বর ঘেরাও করে ছাত্র-জনতা।
রোববার (৯ মার্চ) একইসাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব কর্মসূচি চলে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-ঘেরাওয়ের বিস্তারিত খবর তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে-

ধর্ষকের বিচার ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলার সামনে রোববার বেলা ১১টা থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা প্রমুখ।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রসায়ন, ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। তারা নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং ধর্ষকের ফাঁসি দাবি করেছেন।

শিক্ষার্থীরা মুখে ও কপালে লাল কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ করেন। ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধর্ষকদের হবে না’, এ রকম নানা দাবি লেখা ছিল শিক্ষার্থীদের পোস্টারে; কণ্ঠেও একই স্লোগান।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখতে চান তারা। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তারা।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় দেশব্যাপী ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও গতকাল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও একই কর্মসূচি রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গত শনিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবি জানান।
ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে রাজশাহী, খুলনা, সিলেটের শাহজালাল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও।

ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে ঢাবিতে ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ-সমাবেশ: ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, সারা দেশে যৌন হয়রানি ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে ক্লাস বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল বাশার বলেন, ‘আপনি (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) রাত ৩টায় বাইরে ঘুরে আমাদের সিরিয়াসনেস দেখাবেন না। আমরা রাস্তায় আপনার সিরিয়াসনেস দেখতে চাই। আমাদের মা-বোনদের নিরাপদ দেখতে চাই, আমরা এত প্যাঁচ দেখতে চাই না।

আইনের দোহাই নয়, ধর্ষকের শাস্তি দিতে ১০ দিনের বেশি লাগার কথা নয়: আইনের দোহাই দিয়ে ধর্ষণের ঘটনার বিচার বিলম্বিত করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহকারী প্রক্টর ও লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া। তিনি বলেন, আমরা শুধু আইনের কথা বলি, রুলসের (আইন) দোহাই দেই। কিন্তু এ রেপিস্টদের (ধর্ষক) শাস্তি দিতে ১০ দিনের বেশি সময় লাগার কথা নয়। ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে পারলে ধর্ষণের ঘটনা কমে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
রোববার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া।
লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান বলেন, আমাদের প্রতিবাদ প্রতিনিয়ত জানাতে হবে। এটা কীটের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। এটাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
বিভাগের আরেক অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির বলেন, ধর্ষকরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। পশুরা অন্তত তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে এসব করে না। কিন্তু আমাদের ছোট মেয়েটাকেও (মাগুরায় ধর্ষণের শিকার) তারা ছাড় দেয়নি। আমরা যেন এ ঘটনাগুলো ভুলে না যাই। আমরা ভুলে যাই বলেই ধর্ষকরা কিছুদিন পরপর তাদের কুৎসিত রূপ দেখানোর সাহস পায়।
এদিকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, সারাদেশে যৌন হয়রানি ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট কর্মসূচিও করছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান বলেন, আমাদের প্রতিবাদ প্রতিনিয়ত জানাতে হবে। এটা কীটের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। এটাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।

মাগুরায় ‘শিশু ধর্ষকের’ ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও: আট বছর বয়সি শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা।
বোরবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়।
সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন।
তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।

রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। হাসপাতালে পরিদর্শন শেষে সেখানে দাঁড়িয়ে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। অন্যদিকে, ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শিশুর মা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন শনিবার।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, এ মামলায় মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের ভাই রাতুল শেখ (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। চারজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম। মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরেনি।

ধর্ষকের ফাঁসি দাবিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় কুড়িল-বাড্ডা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভের পর ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এতে ইউআইটিএস, ডিআইইউসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নো মোর রেপিস্ট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকের ফাঁসি দে’, ‘কণ্ঠে আবার লাগাও জোর, ধর্ষকদের কবর খোড়’, ‘আমার বোন আইসিইউতে, রেপিস্ট কেন বাহিরে’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। মাগুরায় ৮ বছরের শিশুর ওপর পৈশাচিক বর্বরতা চালানো হয়েছে। সারাদেশে এ নিয়ে তোলপাড় হলেও ধর্ষককে গ্রেফতার দেখাতেই দুইদিন সময়ে নিয়েছে পুলিশ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা বলেন, জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছিল। রাজপথে রক্ত দিয়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন সেই বাংলাদেশে ধর্ষকদের ঠাঁই হবে না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে দৃশ্যমান বিচারের মুখোমুখি না করা হলে রাজপথ ছাড়বে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশ

নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড়: দ্রুতবিচার ও ফাঁসির দাবি

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশ

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

বিশেষ সংবাদদাতা: মাগুরায় আট বছর বয়সি শিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের ওপর সহিংসতা, হেনস্তা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশের মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে বয়ে চলেছে তীব্র নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড়। এরইমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনগুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দও বিক্ষোভে নেমে পড়েছেন। আর শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে মাগুরা জেলা আদালত চত্বর ঘেরাও করে ছাত্র-জনতা।
রোববার (৯ মার্চ) একইসাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব কর্মসূচি চলে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-ঘেরাওয়ের বিস্তারিত খবর তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে-

ধর্ষকের বিচার ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলার সামনে রোববার বেলা ১১টা থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা প্রমুখ।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রসায়ন, ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। তারা নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং ধর্ষকের ফাঁসি দাবি করেছেন।

শিক্ষার্থীরা মুখে ও কপালে লাল কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ করেন। ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধর্ষকদের হবে না’, এ রকম নানা দাবি লেখা ছিল শিক্ষার্থীদের পোস্টারে; কণ্ঠেও একই স্লোগান।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখতে চান তারা। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তারা।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় দেশব্যাপী ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও গতকাল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও একই কর্মসূচি রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গত শনিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবি জানান।
ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে রাজশাহী, খুলনা, সিলেটের শাহজালাল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও।

ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে ঢাবিতে ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ-সমাবেশ: ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, সারা দেশে যৌন হয়রানি ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে ক্লাস বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল বাশার বলেন, ‘আপনি (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) রাত ৩টায় বাইরে ঘুরে আমাদের সিরিয়াসনেস দেখাবেন না। আমরা রাস্তায় আপনার সিরিয়াসনেস দেখতে চাই। আমাদের মা-বোনদের নিরাপদ দেখতে চাই, আমরা এত প্যাঁচ দেখতে চাই না।

আইনের দোহাই নয়, ধর্ষকের শাস্তি দিতে ১০ দিনের বেশি লাগার কথা নয়: আইনের দোহাই দিয়ে ধর্ষণের ঘটনার বিচার বিলম্বিত করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহকারী প্রক্টর ও লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া। তিনি বলেন, আমরা শুধু আইনের কথা বলি, রুলসের (আইন) দোহাই দেই। কিন্তু এ রেপিস্টদের (ধর্ষক) শাস্তি দিতে ১০ দিনের বেশি সময় লাগার কথা নয়। ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে পারলে ধর্ষণের ঘটনা কমে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
রোববার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের প্রভাষক শেহরিন আমিন ভূইয়া।
লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান বলেন, আমাদের প্রতিবাদ প্রতিনিয়ত জানাতে হবে। এটা কীটের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। এটাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
বিভাগের আরেক অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির বলেন, ধর্ষকরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। পশুরা অন্তত তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে এসব করে না। কিন্তু আমাদের ছোট মেয়েটাকেও (মাগুরায় ধর্ষণের শিকার) তারা ছাড় দেয়নি। আমরা যেন এ ঘটনাগুলো ভুলে না যাই। আমরা ভুলে যাই বলেই ধর্ষকরা কিছুদিন পরপর তাদের কুৎসিত রূপ দেখানোর সাহস পায়।
এদিকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, সারাদেশে যৌন হয়রানি ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট কর্মসূচিও করছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান বলেন, আমাদের প্রতিবাদ প্রতিনিয়ত জানাতে হবে। এটা কীটের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। এটাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।

মাগুরায় ‘শিশু ধর্ষকের’ ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও: আট বছর বয়সি শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা।
বোরবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়।
সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন।
তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।

রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। হাসপাতালে পরিদর্শন শেষে সেখানে দাঁড়িয়ে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। অন্যদিকে, ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শিশুর মা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন শনিবার।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, এ মামলায় মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের ভাই রাতুল শেখ (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। চারজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম। মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরেনি।

ধর্ষকের ফাঁসি দাবিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় কুড়িল-বাড্ডা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভের পর ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এতে ইউআইটিএস, ডিআইইউসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নো মোর রেপিস্ট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকের ফাঁসি দে’, ‘কণ্ঠে আবার লাগাও জোর, ধর্ষকদের কবর খোড়’, ‘আমার বোন আইসিইউতে, রেপিস্ট কেন বাহিরে’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। মাগুরায় ৮ বছরের শিশুর ওপর পৈশাচিক বর্বরতা চালানো হয়েছে। সারাদেশে এ নিয়ে তোলপাড় হলেও ধর্ষককে গ্রেফতার দেখাতেই দুইদিন সময়ে নিয়েছে পুলিশ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা বলেন, জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছিল। রাজপথে রক্ত দিয়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন সেই বাংলাদেশে ধর্ষকদের ঠাঁই হবে না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে দৃশ্যমান বিচারের মুখোমুখি না করা হলে রাজপথ ছাড়বে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।