ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ধর্মনিরপেক্ষতা ও জামায়াত নিয়ে টুকুর বক্তব্য দলের নয়: বিএনপি

  • আপডেট সময় : ০১:৩৯:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩
  • ১২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিএনপি একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল’, ‘জামায়াতের সঙ্গে জোট অতীত’ ইত্যাদি মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দুকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা বিএনপির অবস্থান নয় জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গত ৮ নভেম্বর দ্য হিন্দুতে সাক্ষাৎকার প্রকাশের তৃতীয় দিন শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান দলটির মুখপাত্র। রিজভী বলেন, ‘‘সম্প্রতি ভারতীয় একটি ইংরেজি দৈনিক ‘দ্যা হিন্দু’ তে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সেক্যুলারিজম (ধর্ম নিরপেক্ষতা), পলিটিক্যাল ইসলাম (রাজনৈতিক ইসলাম) সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কিত যে মতামত প্রদান করেছেন, সেসব বক্তব্য এবং মতামত একান্তই তার নিজস্ব। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিএনপির মূল ভিত্তি হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। জনগণভিত্তিক গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নাম বিএনপি।” এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে টুকুর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের অবস্থান সম্পর্কে জানেন না দলের অন্য নেতারাও। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে তাকে দেখা যায়নি।
দ্য হিন্দুকে কী বলেছেন টুকু: দ্য হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টুকু বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে সমাবেশের দিন হাঙ্গামার পর গ্রেপ্তার অভিযানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। টুকুর দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে যে সহিংসতার অভিযোগ আনা হচ্ছে, এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারি এজেন্সিগুলোই এগুলো করছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘সত্যিকারের গণতান্ত্রিক চেতনা’ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনেছিলেন বলে দাবি করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, যদি শেখ হাসিনা এত আত্মবিশ্বাসীই হবেন, তাহলে কেন তিনি এখন এই দাবি মেনে নেবেন না।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ করে টুকু আরও জানান, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে না। দ্য হিন্দুর হয়ে সাক্ষাৎকারটি নেন কল্লোল ভট্টাচার্য। তিনি বিএনপি নেতাকে বলেন, “আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিরোধীদেরকে স্বাধীনতাবিরোধী এবং ইসলামপন্থীদের সঙ্গে জোট করার অভিযোগ করা হয়।”
জবাবে টুকু বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের সম্পর্কে বহু বছর ধরে অসত্য কথা বলে আসছে। জামায়াতের সঙ্গে আসাদের নির্বাচনী ঐক্য ছিল। গণতন্ত্রে নানা সময় এই ধরনের রাজনৈতিক জোট দেখা যায়। ভারতেও বিজেপি এবং বামপন্থীদের মধ্যে কোনো কোনো পয়েন্টে ঐক্য দেখা গেছে। “বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল এবং আমরা ‘রাজনৈতিক ইসলামে’ বিশ্বাস করি না। জামায়াতের সঙ্গে সেই জোট এখন অতীত। শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন, তাকে জবাব দেওয়া উচিত, তিনি এত বছর ক্ষমতায় থাকতেও কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেননি?”
বিএনপিকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তার দল ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ এর ব্যবহারের বিরোধী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ইসলামপন্থীদের প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতা এও বলেন, “১৯৭১ সালের মতোই ভারতের বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করা উচিত।”
এখন বাংলাদেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত দাবি করে টুকু বলেন, “বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি আশা করব, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ক্ষয়ের সময় ভারত চুপ করে থাকবে না।”
ভারতের ভূমিকায় হতাশার কথাও বলেন তিনি। বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা ভারতের পক্ষ থেকে এমন কোনো মন্তব্য দেখতে পাইনি যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসাও করেন টুকু। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছে। আমরা একে স্বাগত জানাই এবং আশা করব, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র ভারতও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলবে।”
‘জামায়াতবিরোধী’ বক্তব্য আগেও দিয়েছেন টুকু: গত বছরের আগস্টে যখন বিএনপি ও জামায়াতের জোট ভেঙে যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন উঠেছিল, সে সময়ও টুকুর বক্তব্যের প্রতিবাদ আসে বিএনপির পক্ষ থেকে।
আগস্টেই বিএনপির আমির শফিকুর রহমান একটি দলীয় আয়োজনে বলেছিলেন, বিএনপির সঙ্গে তাদের জোট ভেঙে গেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে যখন এ বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছিল না, তখন ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হাজারীবাগে বিএনপির এক জনসভায় টুকু বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেকের মুখে একটা বুলি হয়ে গেছে বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি এখন সময় এসেছে, আওয়ামী লীগ-জামায়াত, আওয়ামী লীগ-জামায়াত বলার।”
‘জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু’- এই মন্তব্য করে তিনি বলেছিলেন, “দুটো একসঙ্গে মিলবে ভালো। কেননা উনারা (সরকার) জামায়াতের নিবন্ধন ক্যানসেল করেন, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেন না। তাহলে কি আমি বলব, ওনাদের (জামায়াত-আওয়ামী লীগের) পরকীয়া চলছে?’
পরদিন জামায়াতের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, “টুকুর রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন তা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। এটি কোনো রাজনীতিবিদের ভাষা হতে পারে না। তার এ বক্তব্য স্বৈরাচারী শাসনকে প্রলম্বিত করার ক্ষেত্র তৈরি করবে।”
পরে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন তাদের জোট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শরিকরা যুগপৎ আন্দোলনে যাবে। এরপর বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে গেলেও জামায়াত দূরে দূরে ছিল। তবে গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও জামায়াত একই কর্মসূচি দিচ্ছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ধর্মনিরপেক্ষতা ও জামায়াত নিয়ে টুকুর বক্তব্য দলের নয়: বিএনপি

আপডেট সময় : ০১:৩৯:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিএনপি একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল’, ‘জামায়াতের সঙ্গে জোট অতীত’ ইত্যাদি মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দুকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা বিএনপির অবস্থান নয় জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গত ৮ নভেম্বর দ্য হিন্দুতে সাক্ষাৎকার প্রকাশের তৃতীয় দিন শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান দলটির মুখপাত্র। রিজভী বলেন, ‘‘সম্প্রতি ভারতীয় একটি ইংরেজি দৈনিক ‘দ্যা হিন্দু’ তে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সেক্যুলারিজম (ধর্ম নিরপেক্ষতা), পলিটিক্যাল ইসলাম (রাজনৈতিক ইসলাম) সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কিত যে মতামত প্রদান করেছেন, সেসব বক্তব্য এবং মতামত একান্তই তার নিজস্ব। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিএনপির মূল ভিত্তি হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। জনগণভিত্তিক গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নাম বিএনপি।” এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে টুকুর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের অবস্থান সম্পর্কে জানেন না দলের অন্য নেতারাও। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে তাকে দেখা যায়নি।
দ্য হিন্দুকে কী বলেছেন টুকু: দ্য হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টুকু বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে সমাবেশের দিন হাঙ্গামার পর গ্রেপ্তার অভিযানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। টুকুর দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে যে সহিংসতার অভিযোগ আনা হচ্ছে, এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারি এজেন্সিগুলোই এগুলো করছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘সত্যিকারের গণতান্ত্রিক চেতনা’ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনেছিলেন বলে দাবি করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, যদি শেখ হাসিনা এত আত্মবিশ্বাসীই হবেন, তাহলে কেন তিনি এখন এই দাবি মেনে নেবেন না।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ করে টুকু আরও জানান, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে না। দ্য হিন্দুর হয়ে সাক্ষাৎকারটি নেন কল্লোল ভট্টাচার্য। তিনি বিএনপি নেতাকে বলেন, “আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিরোধীদেরকে স্বাধীনতাবিরোধী এবং ইসলামপন্থীদের সঙ্গে জোট করার অভিযোগ করা হয়।”
জবাবে টুকু বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের সম্পর্কে বহু বছর ধরে অসত্য কথা বলে আসছে। জামায়াতের সঙ্গে আসাদের নির্বাচনী ঐক্য ছিল। গণতন্ত্রে নানা সময় এই ধরনের রাজনৈতিক জোট দেখা যায়। ভারতেও বিজেপি এবং বামপন্থীদের মধ্যে কোনো কোনো পয়েন্টে ঐক্য দেখা গেছে। “বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল এবং আমরা ‘রাজনৈতিক ইসলামে’ বিশ্বাস করি না। জামায়াতের সঙ্গে সেই জোট এখন অতীত। শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন, তাকে জবাব দেওয়া উচিত, তিনি এত বছর ক্ষমতায় থাকতেও কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেননি?”
বিএনপিকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তার দল ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ এর ব্যবহারের বিরোধী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ইসলামপন্থীদের প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতা এও বলেন, “১৯৭১ সালের মতোই ভারতের বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করা উচিত।”
এখন বাংলাদেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত দাবি করে টুকু বলেন, “বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি আশা করব, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ক্ষয়ের সময় ভারত চুপ করে থাকবে না।”
ভারতের ভূমিকায় হতাশার কথাও বলেন তিনি। বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা ভারতের পক্ষ থেকে এমন কোনো মন্তব্য দেখতে পাইনি যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসাও করেন টুকু। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছে। আমরা একে স্বাগত জানাই এবং আশা করব, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র ভারতও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলবে।”
‘জামায়াতবিরোধী’ বক্তব্য আগেও দিয়েছেন টুকু: গত বছরের আগস্টে যখন বিএনপি ও জামায়াতের জোট ভেঙে যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন উঠেছিল, সে সময়ও টুকুর বক্তব্যের প্রতিবাদ আসে বিএনপির পক্ষ থেকে।
আগস্টেই বিএনপির আমির শফিকুর রহমান একটি দলীয় আয়োজনে বলেছিলেন, বিএনপির সঙ্গে তাদের জোট ভেঙে গেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে যখন এ বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছিল না, তখন ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হাজারীবাগে বিএনপির এক জনসভায় টুকু বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেকের মুখে একটা বুলি হয়ে গেছে বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি এখন সময় এসেছে, আওয়ামী লীগ-জামায়াত, আওয়ামী লীগ-জামায়াত বলার।”
‘জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু’- এই মন্তব্য করে তিনি বলেছিলেন, “দুটো একসঙ্গে মিলবে ভালো। কেননা উনারা (সরকার) জামায়াতের নিবন্ধন ক্যানসেল করেন, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেন না। তাহলে কি আমি বলব, ওনাদের (জামায়াত-আওয়ামী লীগের) পরকীয়া চলছে?’
পরদিন জামায়াতের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, “টুকুর রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন তা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। এটি কোনো রাজনীতিবিদের ভাষা হতে পারে না। তার এ বক্তব্য স্বৈরাচারী শাসনকে প্রলম্বিত করার ক্ষেত্র তৈরি করবে।”
পরে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন তাদের জোট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শরিকরা যুগপৎ আন্দোলনে যাবে। এরপর বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে গেলেও জামায়াত দূরে দূরে ছিল। তবে গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও জামায়াত একই কর্মসূচি দিচ্ছে।