ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ধপাস পতনের আগে যেভাবে বেড়েছে মুরাদের সম্পদ

  • আপডেট সময় : ০২:১১:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক : মুরাদ হাসান যখন প্রথমবার সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ালেন, চিকিৎসা পেশা থেকে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন তিন লাখ টাকার সামান্য বেশি। দশ বছর পরে সেটা বেড়ে হয় ১৪ লাখ, যার বেশিরভাগটা আসে ব্যবসা থেকে।
অডিও কেলেঙ্কারিতে প্রতিমন্ত্রিত্ব আর দলীয় পদ হারানো সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানের অনেক কিছুই এখন আলোচনায় আসছে। ২০০৮ ও ২০১৮ সালে দুই দফা নির্বাচন করার সময় ইসিতে জমা দেওয়া তার হলফনামা থেকে দেখা যাচ্ছে, দশ বছরের ব্যবধানে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। তবে তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে আরও বে
৪৭ বছর বয়সী মুরাদ জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান তালুকদারের ছেলে। মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা, পরে জামালপুরে আওয়ামী লীগের পদে বসেন।
আওয়ামী লীগের টিকেটে নবম সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে প্রথমবার এমপি হন মুরাদ। পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পান মুরাদ। ২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে জিতে প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু আড়াই বছরের মাথায় তাকে পদ হারাতে হয় নারীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের অডিও ফাঁস হওয়ার জেরে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেশও ত্যাগ করেছেন মুরাদ, গেছেন কানাডায়; সেখানে তার কোনো সম্পদ আছে কি না, তার কোনো উল্লেখ কোনো নথিতে নেই।
আয় বেড়ে ৩ গুণ : দুই নির্বাচনের হলফনামাতেই মুরাদ নিজের পেশার ঘরে লিখেছেন ‘চিকিৎসা’। ২০০৮ সালে তিনি আয় দেখিয়েছিলেন ৩,০৯,৬০০ টাকা, যার পুরোটাই ‘চাকরি থেকে’ থেকে আসত। আর কোনো খাত থেকে কোনো আয় তার ছিল না।
২০০৮ সালের হলফনামায় মুরাদের বার্ষিক আয় বেড়ে হয় ১৩ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৩ টাকা। পেশার ঘরে কোনো পরিবর্তন না এলেও চাকরি থেকে আয়ের ঘর দেখা যায় ফাঁকা। তার বদলে ব্যবসা থেকে বছরে ১২ লাখ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৩ টাকা এবং কৃষি থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয় সেখানে।
বেড়েছে টাকা, গয়না : ২০০৮ সালের হলফনামা বলছে, সে সময় মুরাদ হাসানের হাতে নগদ ২ লাখ ২২ হাজার ২১৩ টাকা ছিল। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগে ছিল ৫৪ হাজার ৯২১ টাকা। দশ বছর পর তিনি যখন আবার নির্বাচন করতে গেলেন, তখন তার হাতে নগদ টাকার কোনো হিসাব তিনি দেননি। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫ টাকা সঞ্চয়, শেয়ারে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৩১ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন। আগেরবার মুরাদ কোনো গয়নার মালিক ছিলেন না। তবে ২০১৮ সালের হলফনামায় তার নামে ২৫ ভরি সোনা থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে, এর দাম দেখানো হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।
পুরনো গাড়ির সঙ্গে দামী আরেকটি : হলফনামার তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে মুরাদের ৮ লাখ টাকা দামের একটি টয়োটা মাইক্রোবাস ছিল। ১০ বছর পর সেই গাড়ির সঙ্গে যোগ হয় ৭০ লাখ টাকার একটি নতুন কার। প্রথমবার এমপি হওয়ার আগে তার বাসায় ছিল ৪০ হাজার টাকার টিভি ও ফ্রিজ। কম্পিউটার ও ওভেন ছিল আরও ৪০ হাজার টাকার। খাট, সোফা, ডাইনিং সেট, চেয়াল টেবিল যা বাসায় ছিল, তার দাম দেখানো হয়েছিল ১ লাখ টাকা। আর দশ বছর পর প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সময় তার বাসায় ৮০ হাজার টাকা দামের টিভি ও ফ্রিজ এবং লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ ছিল। আসবাবপত্র ছিল আড়াই লাখ টাকার। এর বাইরে ৩ লাখ টাকার পিস্তল ও শটগানেরও মালিক তিনি তখন, যা দশ বছর আগে ছিল না। এ ছাড়া জমি বিক্রি থেকে ২০ লাখ টাকা; পুঁজি হিসেবে ৬ লাখ টাকা এবং ঋণ হিসেবে দেওয়া ১৫ লাখ টাকার হিসাবও তিনি ২০১৮ সালের হলফনামায় দিয়েছেন।
জমি, বাড়ি বাড়-বাড়ন্ত : মুরাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের নির্বাচন করার সময় তিনি ছিলেন ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৭.৩০ শতাংশ অকৃষি জমির মালিক। কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট তার সে সময় ছিল না।
২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি নিজের নামে সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে ১০ বিঘা কৃষি জমি এবং ২ কাঠা ও ১.২ বিঘা অকৃষি জমি দেখিয়েছেন, যা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি থাকার তথ্যও দিয়েছেন, যার দাম ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা।
স্ত্রীর সম্পদ আরও বেশি : ২০০৮ সালের নির্বাচনে মুরাদের হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদের ঘটগুলো ছিল শূন্য। স্ত্রীর নামে সে সময় কেবল ‘বিয়েতে উপহার’ হিসেবে পাওয়া ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের কথা লেখা হয়েছিল, দাম লেখা হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরের দশ বছরে মুরাদ হাসানের নিজের সম্পদ যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের সম্পদের পরিমাণ। ২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ তার স্ত্রীর নামে ১৫০ ভরি গয়নার তথ্য দিয়েছেন, এবার উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন ‘পৈত্রিক ও বিয়ে সূত্রে’।
২০০৮ সালে জাহানারা এহসানের কোনো সঞ্চয় বা বিনিয়োগ ছিল না। ২০১৮ সালে হলফনামার ওই ঘরে ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য। প্রথম দফায় পাঁচ বছর এমপি থেকে এবং পরের পাঁচ বছর ব্যবসা-বাণিজ্য করে একটি বাড়ির মালিকও হতে পারেননি মুরাদ। তবে এই সময়ে তার স্ত্রীর নামে পুরানা পল্টনে ছয় তলা একটি বাড়ি হয়েছে। বেইলী হাইটসে (নওশান হাইটস কলোনী) একটি ফ্ল্যাটও হয়েছে তার। এ ছাড়া মুরাদের ওপর ‘নির্ভরশীলদের’ একজন শান্তিনগরের কনকর্ড টুইন টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এর সবগুলোই দান থেকে পাওয়া বলে মুরাদের ভাষ্য।
মুরাদ এখন কোথায়? অডিও কেলেঙ্কারির পর প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় পদ খোয়ানো পর দেশ ছেড়ে কানাডার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু দেশটিতে ঢুকতে পারেননি তিনি। টরন্টোর পিয়ারসনস বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তিনি সবশেষ কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার স্থানীয় একটি পত্রিকার তথ্যমতে, তাকে টরন্টোর পিয়ারসনস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরব আমিরাতের একটি বিমানে তুলে দেয়া হয়। অন্য আরেক সূত্রে যানা যাচ্ছে, কানাডার টরন্টোতে ঢুকতে না পেরে তিনি মন্ট্রিয়লে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন। সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, কানাডা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিমানে তুলে দেওয়ার পর তিনি আরব আমিরাতের দুবাই নামেন। এমন একাধিক তথ্যের কোনোটিই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলে প্রশ্ন উঠেছে ডা. মুরাদ এখন কোথায়? বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার একটি ছবি পাওয়া গেলেও এরপর থেকে তার আর কোনো ছবি মেলেনি কোথাও।
একটি সূত্র বলছে, কানাডায় প্রবেশ করতে না পারলেও অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন মুরাদ হাসান। ঢাকার কানাডীয় হাইকমিশনার গণমাধ্যমকে জানান, করোনাকালীন কানাডা ভ্রমণের যথাযথ অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকায় দেশটিতে প্রবেশাধিকার পাননি মুরাদ। তাকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে একমাত্র এখতিয়ার দেশটির ইমিগ্রেশন ও বর্ডার এজেন্সির।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডীয় হাইকমিশনার বেনোই প্রেফনটেইন একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে জানান, মুরাদ হাসানের বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তবে করোনাকালীন ভ্রমণের বিষয়ে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আছে, যা দেশটিতে ভ্যালিড (বৈধ) ভিসা থাকা সব ভ্রমণকারীর জন্য প্রযোজ্য। তবে কোনো ব্যক্তির ভিসা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে দেশটির ইমিগ্রেশন ও বর্ডার এজেন্সি। এর আগে কানাডা থেকে প্রকাশিত ‘নতুন দেশ’ নামের একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমের খবর বলা হয়, বিমানবন্দরে নামার পর ডা. মুরাদকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর দেশটির প্রবেশের অনুমিত না দিয়ে মধ্যপ্রচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে মুরাদকে কানাডায় ঢুকতে দিতে আপত্তি জানিয়ে কানাডায় বসবাসকারী কিছু বাংলাদেশির একটি চিঠি বিমানবন্দরে তাকে আটকানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলেও জানা গেছে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশের একটি বিমানে উঠিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও মুরাদ হাসান বর্তমানে মন্ট্রিয়লে অবস্থান করছেন। মন্ট্রিয়ল কানাডার কুইবেক প্রদেশের বৃহত্তম এবং উত্তর আমেরিকার নবম বৃহত্তম শহর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে অশালীন বক্তব্য, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনায় পড়েন ডা. মুরাদ। বিএনপির পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে অডিও কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়, যেখানে ডা. মুরাদ তাকে হোটেল সোনারগাঁয়ে ডাকেন। যেতে না চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া এবং ধর্ষণের হুমকি দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। এরপর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাকে।
তুমুল সমালোচনা শুরুর পর গত সোমবার থেকে অনেকটা আত্মগোপনে চলে যান মুরাদ হাসান। ওই দিন চট্টগ্রামের একটি পাঁচতারকা হোটেলে অবস্থান নেন তিনি। পরদিন ভোররাতে ঢাকায় ফিরে আসেন।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চুপিসারে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তিনি। রাত ১টা ২১ মিনিট নাগাদ সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৮৫৮৫ ফ্লাইটে করে দুবাই যান। সেখান থেকে তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা হন। নতুন দেশের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমিরেটসের ফ্লাইটে ডা. মুরাদ দেশটির স্থানীয় সময় ১টা ৩১ মিনিটে টরেন্টো পিয়ারসন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। বিপুল সংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলে তাকে জানানো হয়। দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুরাদ হাসানকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গণমাধ্যমে খবর ছাড়া ডা. মুরাদের বিষয় কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। এদিকে করোনা মহামারির কারণে যেকোনো ভিসায় কানাডা ভ্রমণের আগে বিশেষ অনুমতি নেওয়ার নিয়ম চালু আছে দেশটিতে। যেখানে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্টসহ, বেশ কিছু অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। অডিও ও বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী চাপে থাকা মুরাদ হাসান স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশ থেকে করোনা পরীক্ষা করে যেতে পেরেছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ধপাস পতনের আগে যেভাবে বেড়েছে মুরাদের সম্পদ

আপডেট সময় : ০২:১১:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১


নিজস্ব প্রতিবেদক : মুরাদ হাসান যখন প্রথমবার সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ালেন, চিকিৎসা পেশা থেকে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন তিন লাখ টাকার সামান্য বেশি। দশ বছর পরে সেটা বেড়ে হয় ১৪ লাখ, যার বেশিরভাগটা আসে ব্যবসা থেকে।
অডিও কেলেঙ্কারিতে প্রতিমন্ত্রিত্ব আর দলীয় পদ হারানো সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানের অনেক কিছুই এখন আলোচনায় আসছে। ২০০৮ ও ২০১৮ সালে দুই দফা নির্বাচন করার সময় ইসিতে জমা দেওয়া তার হলফনামা থেকে দেখা যাচ্ছে, দশ বছরের ব্যবধানে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। তবে তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে আরও বে
৪৭ বছর বয়সী মুরাদ জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান তালুকদারের ছেলে। মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা, পরে জামালপুরে আওয়ামী লীগের পদে বসেন।
আওয়ামী লীগের টিকেটে নবম সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে প্রথমবার এমপি হন মুরাদ। পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পান মুরাদ। ২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে জিতে প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু আড়াই বছরের মাথায় তাকে পদ হারাতে হয় নারীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের অডিও ফাঁস হওয়ার জেরে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেশও ত্যাগ করেছেন মুরাদ, গেছেন কানাডায়; সেখানে তার কোনো সম্পদ আছে কি না, তার কোনো উল্লেখ কোনো নথিতে নেই।
আয় বেড়ে ৩ গুণ : দুই নির্বাচনের হলফনামাতেই মুরাদ নিজের পেশার ঘরে লিখেছেন ‘চিকিৎসা’। ২০০৮ সালে তিনি আয় দেখিয়েছিলেন ৩,০৯,৬০০ টাকা, যার পুরোটাই ‘চাকরি থেকে’ থেকে আসত। আর কোনো খাত থেকে কোনো আয় তার ছিল না।
২০০৮ সালের হলফনামায় মুরাদের বার্ষিক আয় বেড়ে হয় ১৩ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৩ টাকা। পেশার ঘরে কোনো পরিবর্তন না এলেও চাকরি থেকে আয়ের ঘর দেখা যায় ফাঁকা। তার বদলে ব্যবসা থেকে বছরে ১২ লাখ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৩ টাকা এবং কৃষি থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয় সেখানে।
বেড়েছে টাকা, গয়না : ২০০৮ সালের হলফনামা বলছে, সে সময় মুরাদ হাসানের হাতে নগদ ২ লাখ ২২ হাজার ২১৩ টাকা ছিল। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগে ছিল ৫৪ হাজার ৯২১ টাকা। দশ বছর পর তিনি যখন আবার নির্বাচন করতে গেলেন, তখন তার হাতে নগদ টাকার কোনো হিসাব তিনি দেননি। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫ টাকা সঞ্চয়, শেয়ারে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৩১ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন। আগেরবার মুরাদ কোনো গয়নার মালিক ছিলেন না। তবে ২০১৮ সালের হলফনামায় তার নামে ২৫ ভরি সোনা থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে, এর দাম দেখানো হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।
পুরনো গাড়ির সঙ্গে দামী আরেকটি : হলফনামার তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে মুরাদের ৮ লাখ টাকা দামের একটি টয়োটা মাইক্রোবাস ছিল। ১০ বছর পর সেই গাড়ির সঙ্গে যোগ হয় ৭০ লাখ টাকার একটি নতুন কার। প্রথমবার এমপি হওয়ার আগে তার বাসায় ছিল ৪০ হাজার টাকার টিভি ও ফ্রিজ। কম্পিউটার ও ওভেন ছিল আরও ৪০ হাজার টাকার। খাট, সোফা, ডাইনিং সেট, চেয়াল টেবিল যা বাসায় ছিল, তার দাম দেখানো হয়েছিল ১ লাখ টাকা। আর দশ বছর পর প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সময় তার বাসায় ৮০ হাজার টাকা দামের টিভি ও ফ্রিজ এবং লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ ছিল। আসবাবপত্র ছিল আড়াই লাখ টাকার। এর বাইরে ৩ লাখ টাকার পিস্তল ও শটগানেরও মালিক তিনি তখন, যা দশ বছর আগে ছিল না। এ ছাড়া জমি বিক্রি থেকে ২০ লাখ টাকা; পুঁজি হিসেবে ৬ লাখ টাকা এবং ঋণ হিসেবে দেওয়া ১৫ লাখ টাকার হিসাবও তিনি ২০১৮ সালের হলফনামায় দিয়েছেন।
জমি, বাড়ি বাড়-বাড়ন্ত : মুরাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের নির্বাচন করার সময় তিনি ছিলেন ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৭.৩০ শতাংশ অকৃষি জমির মালিক। কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট তার সে সময় ছিল না।
২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি নিজের নামে সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে ১০ বিঘা কৃষি জমি এবং ২ কাঠা ও ১.২ বিঘা অকৃষি জমি দেখিয়েছেন, যা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি থাকার তথ্যও দিয়েছেন, যার দাম ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা।
স্ত্রীর সম্পদ আরও বেশি : ২০০৮ সালের নির্বাচনে মুরাদের হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদের ঘটগুলো ছিল শূন্য। স্ত্রীর নামে সে সময় কেবল ‘বিয়েতে উপহার’ হিসেবে পাওয়া ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের কথা লেখা হয়েছিল, দাম লেখা হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরের দশ বছরে মুরাদ হাসানের নিজের সম্পদ যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের সম্পদের পরিমাণ। ২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ তার স্ত্রীর নামে ১৫০ ভরি গয়নার তথ্য দিয়েছেন, এবার উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন ‘পৈত্রিক ও বিয়ে সূত্রে’।
২০০৮ সালে জাহানারা এহসানের কোনো সঞ্চয় বা বিনিয়োগ ছিল না। ২০১৮ সালে হলফনামার ওই ঘরে ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য। প্রথম দফায় পাঁচ বছর এমপি থেকে এবং পরের পাঁচ বছর ব্যবসা-বাণিজ্য করে একটি বাড়ির মালিকও হতে পারেননি মুরাদ। তবে এই সময়ে তার স্ত্রীর নামে পুরানা পল্টনে ছয় তলা একটি বাড়ি হয়েছে। বেইলী হাইটসে (নওশান হাইটস কলোনী) একটি ফ্ল্যাটও হয়েছে তার। এ ছাড়া মুরাদের ওপর ‘নির্ভরশীলদের’ একজন শান্তিনগরের কনকর্ড টুইন টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এর সবগুলোই দান থেকে পাওয়া বলে মুরাদের ভাষ্য।
মুরাদ এখন কোথায়? অডিও কেলেঙ্কারির পর প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় পদ খোয়ানো পর দেশ ছেড়ে কানাডার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু দেশটিতে ঢুকতে পারেননি তিনি। টরন্টোর পিয়ারসনস বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তিনি সবশেষ কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার স্থানীয় একটি পত্রিকার তথ্যমতে, তাকে টরন্টোর পিয়ারসনস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরব আমিরাতের একটি বিমানে তুলে দেয়া হয়। অন্য আরেক সূত্রে যানা যাচ্ছে, কানাডার টরন্টোতে ঢুকতে না পেরে তিনি মন্ট্রিয়লে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন। সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, কানাডা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিমানে তুলে দেওয়ার পর তিনি আরব আমিরাতের দুবাই নামেন। এমন একাধিক তথ্যের কোনোটিই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলে প্রশ্ন উঠেছে ডা. মুরাদ এখন কোথায়? বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার একটি ছবি পাওয়া গেলেও এরপর থেকে তার আর কোনো ছবি মেলেনি কোথাও।
একটি সূত্র বলছে, কানাডায় প্রবেশ করতে না পারলেও অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন মুরাদ হাসান। ঢাকার কানাডীয় হাইকমিশনার গণমাধ্যমকে জানান, করোনাকালীন কানাডা ভ্রমণের যথাযথ অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকায় দেশটিতে প্রবেশাধিকার পাননি মুরাদ। তাকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে একমাত্র এখতিয়ার দেশটির ইমিগ্রেশন ও বর্ডার এজেন্সির।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডীয় হাইকমিশনার বেনোই প্রেফনটেইন একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে জানান, মুরাদ হাসানের বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তবে করোনাকালীন ভ্রমণের বিষয়ে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আছে, যা দেশটিতে ভ্যালিড (বৈধ) ভিসা থাকা সব ভ্রমণকারীর জন্য প্রযোজ্য। তবে কোনো ব্যক্তির ভিসা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে দেশটির ইমিগ্রেশন ও বর্ডার এজেন্সি। এর আগে কানাডা থেকে প্রকাশিত ‘নতুন দেশ’ নামের একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমের খবর বলা হয়, বিমানবন্দরে নামার পর ডা. মুরাদকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর দেশটির প্রবেশের অনুমিত না দিয়ে মধ্যপ্রচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে মুরাদকে কানাডায় ঢুকতে দিতে আপত্তি জানিয়ে কানাডায় বসবাসকারী কিছু বাংলাদেশির একটি চিঠি বিমানবন্দরে তাকে আটকানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলেও জানা গেছে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশের একটি বিমানে উঠিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও মুরাদ হাসান বর্তমানে মন্ট্রিয়লে অবস্থান করছেন। মন্ট্রিয়ল কানাডার কুইবেক প্রদেশের বৃহত্তম এবং উত্তর আমেরিকার নবম বৃহত্তম শহর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে অশালীন বক্তব্য, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনায় পড়েন ডা. মুরাদ। বিএনপির পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে অডিও কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়, যেখানে ডা. মুরাদ তাকে হোটেল সোনারগাঁয়ে ডাকেন। যেতে না চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া এবং ধর্ষণের হুমকি দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। এরপর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাকে।
তুমুল সমালোচনা শুরুর পর গত সোমবার থেকে অনেকটা আত্মগোপনে চলে যান মুরাদ হাসান। ওই দিন চট্টগ্রামের একটি পাঁচতারকা হোটেলে অবস্থান নেন তিনি। পরদিন ভোররাতে ঢাকায় ফিরে আসেন।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চুপিসারে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তিনি। রাত ১টা ২১ মিনিট নাগাদ সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৮৫৮৫ ফ্লাইটে করে দুবাই যান। সেখান থেকে তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা হন। নতুন দেশের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমিরেটসের ফ্লাইটে ডা. মুরাদ দেশটির স্থানীয় সময় ১টা ৩১ মিনিটে টরেন্টো পিয়ারসন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। বিপুল সংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলে তাকে জানানো হয়। দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুরাদ হাসানকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গণমাধ্যমে খবর ছাড়া ডা. মুরাদের বিষয় কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। এদিকে করোনা মহামারির কারণে যেকোনো ভিসায় কানাডা ভ্রমণের আগে বিশেষ অনুমতি নেওয়ার নিয়ম চালু আছে দেশটিতে। যেখানে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্টসহ, বেশ কিছু অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। অডিও ও বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী চাপে থাকা মুরাদ হাসান স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশ থেকে করোনা পরীক্ষা করে যেতে পেরেছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।