নিজস্ব প্রতিবেদক: ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি ইসলামি শরিয়াহ বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বিএনপি।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান। ঢাকার পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যালয়ে ওই বৈঠক হয়।
ফখরুল বলেন, আজকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মাওলানা সৈয়দ রেজাউল করীম সাহেবের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। এই আলোচনায় আমরা মোটামুটি ১০টি বিষয়ে একমত হয়েছি।”
ঐকমত্যে পৌঁছানো ১০ বিষয় হচ্ছে-
১. আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা;
২. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচার;
৩. ভোটাধিকারসহ সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়া;
৪. ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ;
৫. দ্র্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ও সব অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিকীকরণ;
৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা;
৭. ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা;
৮. আগামীতে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেই ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকা;
৯. ইসলামি শরিয়াহ বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং ইসলাম বিরোধী কোনো কথা কেউ না বলা;
১০. প্রশাসনে বিদ্যমান ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা।
আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, দেশ, মানবতা এবং রাজনীতির ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব আপনাদের (গণমাধ্যমে) সামনে উপস্থাপন করেছেন। এগুলো নিয়ে আমাদেরও একই কথা।
নির্বাচনের সূচির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা আগের থেকেই বলেছি যে, দ্রুত সময়ে আমরা যে শব্দটা ব্যবহার করেছি যে- খুব বেশি সময় না নিয়ে যৌক্তিক…। সেই যৌক্তিক সময়টা আমরা বলেছি, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। এরকম একটা কথা আমরা বলেছি। আর ৬ মাস তো প্রায় চলেই গেল; আর এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সরকার- এটাই মূলত আমাদের কথা।
চরমোনাই পীর বলেন, আমাদের দুই দলের মধ্যে আলোচনা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু। আর ইসলামী আন্দোলনের আমিরের সঙ্গে ছিলেন- মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম ও সহকারী মহাসচিব ইমতিয়াজ আলম। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি বরিশালে চরমোনাই পীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।