নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে তৃতীয় দফা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ভোরে চলমান কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা বিরতি রাখে দলটি। আগের সপ্তাহে তিন দিন এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কর্মদিবসে অবরোধের দ্বিতীয় দিন সোমবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দ্বিতীয় দফা অবরোধে দুই দিনে ২২ গাড়িতে আগুন: বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফার অবরোধে দেশজুড়ে ২২টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে আগুন দেওয়া হয়েছে ১৩টি গাড়িতে, যেগুলোর মধ্যে ১১টিই বাস। আগের টানা তিন দিনের অবরোধের পর রোববার সকাল ৬টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর আন্দোলনে থাকা এ দলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও সমমান দলগুলোও পৃথকভাবে একই কর্মসূচি পালন করছে। দ্বিতীয় দফার এ অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই আবার দুই দিনের অবরোধ কমর্সূচির ঘোষণা এসেছে। মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চলবে তৃতীয় দফার নতুন অবরোধ।
৭ নভেম্বরকে বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে। এদিন অবরোধ থাকবে না বলে আগেই গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত এ দিনে কর্মসূচি রাখেনি দলটি। দ্বিতীয় দফার অবরোধে সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার খিলক্ষেতে আকাশ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ডিসি অফিস ও পুলিশ লাইনের কাছে একটি কভার্ডভ্যানে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে বিকেলে ঢাকার মিরপুরে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে এবং দুপুরে গুলিস্তানে বিকল্প পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম জানান, বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধে রোববার সকাল থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা মোট ২৩টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে যানবাহনে আগুন ২২টি। এসব ঘটনায় ১৬টি বাস, ২টি ট্রাক, একটি কভার্ড ভ্যান, একটি জিপ, একটি সিএনজি ও একটি লেগুনা পুড়ে যায়। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে ১৩টি যানবাহন পোড়ানো হয়। এর বাইরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে চারটি, চট্টগ্রাম বিভাগে চারটি ও বগুড়ায় একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে দিনের থেকে রাতের বেলা অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেশি। এই ২ দিনে মোট ২৩টি আগুনের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৮টি আগুনের ঘটনা ঘটে। বাকি পাঁচটি দিনের অন্যান্য সময়ে ঘটানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে, ২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১০টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এরমধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর একটি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি ও ৬ নভেম্বর ১০টি অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।