ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

দ্বিগুণ লবণ গ্রহণে বাড়ছে হৃদরোগ-স্ট্রোক

  • আপডেট সময় : ০২:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৪০ হাজারের অধিক মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এমনকি দেশে বর্তমানে প্রায় ২ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতার প্রধানতম কারণ অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ। যা খাবারে লবণ গ্রহণের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে খুব সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব।
গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর হলিডে ইন হোটেলে আয়োজিত ‘এনগেজিং স্টেকহোল্ডারস ইন ইম্প্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ থ্রো সোডিয়াম রিডাকশন’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রাম লবণ গ্রহণ করে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত ৫ গ্রামের প্রায় দ্বিগুণ। এই লবণের একটি বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবার থেকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ প্যাকেটজাত প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিমাত্রায় লবণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা হৃদরোগসহ অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে প্যাকেটজাত খাবারে এ ধরনের অতিরিক্ত লবণ প্রতিরোধে প্যাকেজের সামনে সতর্কতা লেবেল এবং কোনো খাবারে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ লবণ ব্যবহার করা যাবে সেই সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি। এসময় কার্ডিওভাসকুলার হেলথ বিষয়ক বৈশ্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন রিজলভ টু সেভ লাইভসের (আরটিএসএল) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ডা. টম ফ্রিইডেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে বিশ্বে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর চারটিই ঘটে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। টম ফ্রিইডেন বলেন, শুধু খাবারে সোডিয়ামের মাত্রা হ্রাসের মাধ্যমে হৃদরোগসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতাসমূহ বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ এবং বহু অকালমৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে সরকারের স্বাস্থ্যখাতের ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সামনে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ৩০% সোডিয়াম গ্রহণ হ্রাসের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আদর্শ সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সরকার খাবারে সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর এবং এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি জাতীয় কৌশল ও রোডম্যাপ প্রণয়নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সাধনা ভগওয়াত, রিজলভ টু সেইভ লাইভসের প্রতিনিধি লিন্ডসে স্টিল, ও নোরা আব্দেল গাওয়াদ বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল অব পাবলিক হেলথের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল) যৌথভাবে এই কর্মশালাটির আয়োজন করে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দ্বিগুণ লবণ গ্রহণে বাড়ছে হৃদরোগ-স্ট্রোক

আপডেট সময় : ০২:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৪০ হাজারের অধিক মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এমনকি দেশে বর্তমানে প্রায় ২ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতার প্রধানতম কারণ অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ। যা খাবারে লবণ গ্রহণের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে খুব সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব।
গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর হলিডে ইন হোটেলে আয়োজিত ‘এনগেজিং স্টেকহোল্ডারস ইন ইম্প্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ থ্রো সোডিয়াম রিডাকশন’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রাম লবণ গ্রহণ করে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত ৫ গ্রামের প্রায় দ্বিগুণ। এই লবণের একটি বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবার থেকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ প্যাকেটজাত প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিমাত্রায় লবণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা হৃদরোগসহ অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে প্যাকেটজাত খাবারে এ ধরনের অতিরিক্ত লবণ প্রতিরোধে প্যাকেজের সামনে সতর্কতা লেবেল এবং কোনো খাবারে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ লবণ ব্যবহার করা যাবে সেই সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি। এসময় কার্ডিওভাসকুলার হেলথ বিষয়ক বৈশ্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন রিজলভ টু সেভ লাইভসের (আরটিএসএল) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ডা. টম ফ্রিইডেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে বিশ্বে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর চারটিই ঘটে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। টম ফ্রিইডেন বলেন, শুধু খাবারে সোডিয়ামের মাত্রা হ্রাসের মাধ্যমে হৃদরোগসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতাসমূহ বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ এবং বহু অকালমৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে সরকারের স্বাস্থ্যখাতের ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সামনে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ৩০% সোডিয়াম গ্রহণ হ্রাসের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আদর্শ সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সরকার খাবারে সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর এবং এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি জাতীয় কৌশল ও রোডম্যাপ প্রণয়নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সাধনা ভগওয়াত, রিজলভ টু সেইভ লাইভসের প্রতিনিধি লিন্ডসে স্টিল, ও নোরা আব্দেল গাওয়াদ বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল অব পাবলিক হেলথের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল) যৌথভাবে এই কর্মশালাটির আয়োজন করে।