নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সরকার গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে। মানতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। এর বিপরীতে বাড়ানো হয়েছে ভাড়া। তবে অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। যাত্রীদের মাস্ক পরা কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো ঢিলেঢালা ভাব বজায় রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সায়েদাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাসে ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। তবে যাত্রী ছিল কম।
সিলেটে যেতে আল-মোবারাকা বাসের টিকিট কেটেছেন মিনা আক্তার। তিনি বলেন, আগে একই বাসে ৩৫০ টাকায় সায়েদাবাদ থেকে সিলেট যেতাম। আজ ৫৫০ টাকা নিয়েছে। সিলেটগামী ননএসি বাসের জনপ্রতি ভাড়া ৪৭০ টাকার পরিবর্তে ৭৫০ টাকা করে নিচ্ছে হানিফ পরিবহন। কুমিল্লাগামী তিশা এক্সক্লুসিভ বাসের যাত্রী আবুল কালাম বলেন, ১৫০ টাকার ভাড়া ২৫০ টাকা নিয়েছে। কুমিল্লার লাকসামের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছিল তিশা পরিবহন। বাসের যাত্রী আব্দুর রহিম বলেন, বাসে যাত্রী ছিল অর্ধেক। আগে জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া ছিল। আজ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা।
তিশা বাসের সহকারী মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন বাস বন্ধ থাকায় যাত্রী কমে গেছে। ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়েও লোকসান গুণতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অনেক যাত্রী বাড়ি যেত। অথচ আজ যাত্রী অনেক কম। আগে দুই যাত্রীর কাছ থেকে পেতাম ৪০০ টাকা। এখন দুই সিটে এক যাত্রী দিচ্ছে ৩২০ টাকা। তিশা বাসের যাত্রী রোকসানা বলেন, মাস্ক পরে ছিলাম। এখন মাথাব্যথা করছে। তাই খুলে রেখেছি।
নোয়াখালীর যাত্রী রাকিব বলেন, সায়েদাবাদ থেকে লাল-সবুজ পরিবহনে (এসি বাস) বাড়ি যাচ্ছি। করোনার আগে জনপ্রতি ৪০০ টাকা ভাড়া ছিল। এখন ৬৪০ টাকা নেওয়া হয়েছে। একই কোম্পানির ননএসি বাসে ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৩০০ টাকা। এখন বেড়ে হয়েছে ৪৮০ টাকা।
হানিফ পরিবহনের যাত্রী আবুল বকর রোমান বলছিলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম নন এসি বাসের ভাড়া ছিল ৪৮০ টাকা। এখন তা বেড়ে ৭৪০ টাকা হয়েছে। এসি বাসের ভাড়া বিজনেস ক্লাসে ৭০০ টাকা ছিল। এখন ১১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
হানিফ পরিবহনের হেলপার নোমান হোসেন বলেন, লকডাউনে বাস বন্ধ থাকায় এক মাসের বেশি সময় খুব কষ্ট করেছি। বাস বন্ধ থাকায় ৪০ হাজার টাকা ঋণ করতে হয়েছে। বাস চলায় প্রতিদিন ৪০০ টাকা পাচ্ছি। ৬০ শতাংশ ভাড়ার কারণে যাত্রী কম। হানিফ পরিবহনের সায়েদাবাদ কাউন্টারের ম্যানেজার আবুল কাশেম বলেন, যাত্রী কম। ভাড়া বাড়ায় মানুষ বাড়তি টাকা দিতে চাচ্ছে না। এই বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এসআই রহমান বলেন, আমরা মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলে দিচ্ছি। যারা মানছে না তাদের সচেতন করতে মাস্ক দিচ্ছি।
দ্বিগুণ ভাড়ায় যাত্রী কম, মাস্ক পরায় অনীহা
ট্যাগস :
দ্বিগুণ ভাড়ায় যাত্রী কম
জনপ্রিয় সংবাদ