ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৭৫ শতাংশ

  • আপডেট সময় : ১১:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার প্রতিবেদন : সরকারি হিসেবে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার যেভাবেই দেওয়া হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝরে পড়ে। ১২ বছর শিক্ষা জীবনে টিকে থাকা শিক্ষার্থীর হার ২৫ শতাংশের বেশি হবে না বলে দাবি করা হয়েছে। গত সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মালালা ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন পিপলস্ ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার। তিনি জানান, শিক্ষায় বৈষম্যের শিকার হাওর, চরাঞ্চল ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার নারী ও শিশুরা। এসব অঞ্চলে জানুয়ারি থেকে দুই মাস ধান চাষ ও কাটার সময় থাকায় জীবিকা নির্বাহে শিক্ষার্থীরা মাঠে কর্মরত থাকে। ফলে শিক্ষাবর্ষের বিশাল একটি সময় তাদের নষ্ট হয়। শিক্ষাবর্ষের সময় পরিবর্তনের বিষয়ে সরকারকে বিভিন্ন সময় অবহিত করা হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ জানান, প্রাথমিকে ঝরে পড়ার পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির হার ৬০ শতাংশ, দশম শ্রেণি পর্যন্ত তা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আসতে পারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী। আবার এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা উত্তীর্ণ হয়ে ফেরেন তাদের শিক্ষার মান নিয়েও রয়েছে সংশয়। তিনি জানান, ২০১৫ সালে ২০৩০ সাল পর্যন্ত শিক্ষার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত অর্ধেক সময় চলে গেলেও অর্জন কাঙ্ক্ষিত লক্ষমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে। করোনার দুই বছরে এ লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা আরও পিছিয়ে পড়েছি।
করোনায় শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে সরকার পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করতে হলে প্রথমে আমাদের ঘাটতির কথা স্বীকার করতে হবে। এ ঘাটতি পূরণে কমপক্ষে দুই বছরের পরিকল্পনা করতে হবে। বিশ্বের সব দেশেই এই ঘাটতি হয়েছে। তারা তা স্বীকার করে পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সেই কাজ না করেই আবার নতুন কারিকুলাম নিয়ে কাজ করছি। শিক্ষা ব্যবস্থায় সামগ্রিক পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ জানান, এর আগে আমরা বারবার শিক্ষার সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছি। তবে বর্তমানে সংস্কার নয়, রূপান্তর প্রয়োজন। শিক্ষায় প্রথম বাধা অর্থায়ন, যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয় তা দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন কখনও সম্ভব নয়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং কারিগরি ও মাদরাসা এই তিন ভাগে বিভক্তিকরণকে শিক্ষার মানোন্নয়নের অন্যতম আরেকটি বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। মূল বক্তব্যে মালালা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ইনচার্জ মোশাররফ তানসেন জানান, বাংলাদেশে নারী শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকে ভর্তির হার ৫১ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫৪ শতাংশ। তবে ঝরে পড়ার হারও ৪২ শতাংশ। ভর্তির দিক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে। তবে ঝরে পড়ার হারও বেশি। নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে এ সময় মালালা ফাউন্ডেশন থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে। মেয়েদের মতামতের মূল্যায়ন। ন্যায্যতাভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক বৈশ্বিক কর্মপন্থা তৈরি করা। নেতাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং আফগানিস্তানের জন্য অবস্থান নেওয়া।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন আপদ ‘মব সন্ত্রাস’, আতঙ্কে সারা দেশ

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৭৫ শতাংশ

আপডেট সময় : ১১:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার প্রতিবেদন : সরকারি হিসেবে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার যেভাবেই দেওয়া হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝরে পড়ে। ১২ বছর শিক্ষা জীবনে টিকে থাকা শিক্ষার্থীর হার ২৫ শতাংশের বেশি হবে না বলে দাবি করা হয়েছে। গত সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মালালা ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন পিপলস্ ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার। তিনি জানান, শিক্ষায় বৈষম্যের শিকার হাওর, চরাঞ্চল ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার নারী ও শিশুরা। এসব অঞ্চলে জানুয়ারি থেকে দুই মাস ধান চাষ ও কাটার সময় থাকায় জীবিকা নির্বাহে শিক্ষার্থীরা মাঠে কর্মরত থাকে। ফলে শিক্ষাবর্ষের বিশাল একটি সময় তাদের নষ্ট হয়। শিক্ষাবর্ষের সময় পরিবর্তনের বিষয়ে সরকারকে বিভিন্ন সময় অবহিত করা হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ জানান, প্রাথমিকে ঝরে পড়ার পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির হার ৬০ শতাংশ, দশম শ্রেণি পর্যন্ত তা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আসতে পারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী। আবার এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা উত্তীর্ণ হয়ে ফেরেন তাদের শিক্ষার মান নিয়েও রয়েছে সংশয়। তিনি জানান, ২০১৫ সালে ২০৩০ সাল পর্যন্ত শিক্ষার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত অর্ধেক সময় চলে গেলেও অর্জন কাঙ্ক্ষিত লক্ষমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে। করোনার দুই বছরে এ লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা আরও পিছিয়ে পড়েছি।
করোনায় শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে সরকার পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করতে হলে প্রথমে আমাদের ঘাটতির কথা স্বীকার করতে হবে। এ ঘাটতি পূরণে কমপক্ষে দুই বছরের পরিকল্পনা করতে হবে। বিশ্বের সব দেশেই এই ঘাটতি হয়েছে। তারা তা স্বীকার করে পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সেই কাজ না করেই আবার নতুন কারিকুলাম নিয়ে কাজ করছি। শিক্ষা ব্যবস্থায় সামগ্রিক পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ জানান, এর আগে আমরা বারবার শিক্ষার সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছি। তবে বর্তমানে সংস্কার নয়, রূপান্তর প্রয়োজন। শিক্ষায় প্রথম বাধা অর্থায়ন, যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয় তা দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন কখনও সম্ভব নয়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং কারিগরি ও মাদরাসা এই তিন ভাগে বিভক্তিকরণকে শিক্ষার মানোন্নয়নের অন্যতম আরেকটি বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। মূল বক্তব্যে মালালা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ইনচার্জ মোশাররফ তানসেন জানান, বাংলাদেশে নারী শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকে ভর্তির হার ৫১ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫৪ শতাংশ। তবে ঝরে পড়ার হারও ৪২ শতাংশ। ভর্তির দিক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে। তবে ঝরে পড়ার হারও বেশি। নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে এ সময় মালালা ফাউন্ডেশন থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে। মেয়েদের মতামতের মূল্যায়ন। ন্যায্যতাভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক বৈশ্বিক কর্মপন্থা তৈরি করা। নেতাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং আফগানিস্তানের জন্য অবস্থান নেওয়া।