ক্রীড়া প্রতিবেদক : দুজনের আগের পারফরম্যান্স ছিল বিবর্ণ, দুজনই জ্বলে উঠলেন শেষ ম্যাচে। ৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে রুয়েল মিয়ার প্রাপ্তি ছিল ৫ উইকেট। এই বাঁহাতি পেসার এবার এক ম্যাচেই নিলেন ৫ উইকেট। ইয়াসিন আরাফাতও ঠিক ৮ ম্যাচে খেলে নিতে পেরেছিলেন কেবল ৪ উইকেট। এই এক ম্যাচেই তার শিকার ৪টি। দুই পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মোহামেডান লিগ শেষ করল জয়ে, শেষ হয়ে গেল প্রাইম দোলেশ্বরের রানার্স আপ হওয়ার আশা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির শেষ দিনে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ২৫ রানে হারাল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল শনিবার মোহামেডান ইনিংসের ২.৩ ওভার পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। পরে ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে তারা করতে পারে ১০৫ রান। প্রাইম দোলেশ্বর লক্ষ্য ঠিক হয় ১৩ ওভারে ১০৭। রুয়েল-ইয়াসিনের বোলিংয়ে তারা গুটিয়ে যায় ৮১ রানেই। ২১ রানে ৫ উইকেট নেন রুয়েল। এবারের লিগের দ্বিতীয় সেরা বোলিং পারফরম্যান্স এটি। তবে তিন উইকেটই নেন তিনি শেষ দিকে। টপ ও মিডল অর্ডারের চার উইকেট নিয়ে দোলেশ্বরের মেরুদ- ভেঙে দেন ইয়াসিন। এই ম্যাচ জিতলে দোলেশ্বরের রানার্স আপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকত প্রবল। হেরে গিয়ে এখন তারা শঙ্কায় চতুর্থ হওয়ার। মোহামেডান সুপার লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে জিতল শেষ ম্যাচ। তাদের অবস্থান অবশ্য বদলাচ্ছে না। লিগ শেষ করছে তারা ষষ্ঠ স্থানে থেকে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা মোহামেডানের ব্যাটিং ধুঁকেছে ইনিংসের বেশির ভাগটা জুড়ে। ওপেনিংয়ে পারভেজ হোসেন ইমন ২১ বলে ২৬ রান করলেও তার সঙ্গী অভিষেক মিত্র ৩ রান করতে খেলেন ১২ বল। লিগে প্রথমবার খেলতে নেমে শাকিল হোসেন ১৯ বলে করেন ১৮ রান। মিডল অর্ডারে ব্যর্থ ইরফান শুক্কুর, শামসুর রহমানরা।
এই ইনিংস নতুন মোড় নেয় শেষ ওভারে। লিগের সফলতম বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বি হারিয়ে ফেলেন লাইন-লেংথ, ফায়দা নেন শুভাগত হোম। টানা দুই বলে বাউন্ডারির পর কোমরের ওপর ফুল টস পেয়ে মারেন ছক্কা। ফ্রি হিটে আরেকটি ছক্কা। শেষ বলে মাহমুদুল হাসানের বাউন্ডারিতে ওভার থেকে আসে ২৭ রান! প্রাইম দোলেশ্বর রান তাড়ায় উইকেট হারায় প্রথম ওভারেই। রুয়েলকে দুটি বাউন্ডারি মারার পর ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন তৌফিক খান। ইমরান উজজামান ও সাইফ হাসান ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন বিপজ্জনক হওয়ার। বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হাসানকে টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন সাইফ, আবু হায়দারের এক ওভারে দুটি ছক্কা আসে ইমরানের ব্যাট থেকে। ইয়াসিন বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই ফেরান দুজনকে, দুজনই ধরা পড়েন মিড অনে শামসুর রহমানের হাতে। নিজের পরের দুই ওভারে ইয়াসিনের শিকার মার্শাল আইয়ুব ও ফরহাদ রেজা। ক্রমাগত বাড়তে থাকে রান রেটের চাপ। আগের ম্যাচ জেতানো শামীম হোসেনও পারেননি এ দিন ঝড় তুলতে। শেষ দিকে রুয়েল নিজের শেষ সাত বলের মধ্যে চার উইকেট তুলে নিয়ে শেষ করে দেন দোলেশ্বরকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
মোহামেডান : ১৩ ওভারে ১০৫/৫ (পারভেজ ২৬, অভিষেক ৩, শাকিল ১৮, শামসুর ৯, ইরফান ৭, শুভাগত ২৩, মাহমুদুল ৯; শফিকুল ২-০-১৪-০, শরিফউল্লাহ ৩-০-৬-১, কামরুল রাব্বি ৩-০-৪৫-০, এনামুল ২-০-১৩-২, ফরহাদ রেজা ৩-০-২৪-০)।
প্রাইম দোলেশ্বর : (লক্ষ্য ১৩ ওভারে ১০৭) ১১.৪ ওভারে ৮১ (ইমরান ১৫, তৌফিক ৮, সাইফ ১১, ফজলে মাহমুদ ১৬, মার্শাল ৫, ফরহাদ ৩, শামীম ৮, শরিফউল্লাহ ৪, শফিকুল ৫*, কামরুল রাব্বি ১, এনামুল জুনি. ২;রুয়েল ২.৩-০-২১-৫, আসিফ ২-০-১৭-১, আবু হায়দার ১-০-১৪-০, ইয়াসিন ৩-০-১১-৪ , শুভাগত ৩-০-১৭-০)।
ফল : মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ২৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ : রুয়েল মিয়া।
দোলেশ্বরকে হারিয়ে ডিপিএল শেষ করল মোহামেডান
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ