ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

দোকানের গুদামে পাওয়া গেল এক হাজার লিটার সয়াবিন তেল

  • আপডেট সময় : ০২:১০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২
  • ৯৮ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চারদিকে তেলের সংকট। অলিগলি থেকে বড় বাজার—কোথাও সয়াবিন তেল মিলছে, কোথাও বা মিলছে না। এমন সংকটে কেউ কেউ তেল মজুত করে বাড়তি দামে সেগুলো বিক্রি করছেন। এমনই একজন চট্টগ্রামের ২ নম্বর গেটের খাজা স্টোরের আবদুল হাকিম। তাঁর দোকানের নিচে গুদামঘর। সেখানে তিনি মজুত করেছিলেন ১ হাজার লিটার সয়াবিন তেল।
গতকাল রোববার বিকেলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানে মজুত করা এসব তেল বের হয়ে আসে। পরে ‘অবৈধভাবে’ গুদামে তেল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি রাখার দায়ে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় আবদুল হাকিমকে।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ওই দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি পাওয়া গেছে। পাশাপাশি দোকানমালিক বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য অবৈধভাবে মজুত করেছেন। এ দুই অপরাধে তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। আর তেলগুলো আশপাশের দোকানদারদের কাছে গায়ের দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তবে আবদুল হাকিম নিজেকে পাইকারি বিক্রেতা বলে দাবি করেছেন। আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও দোকানে তেল সরবরাহ করেন। এ কারণে তাঁর গুদামে তেল ছিল। আর রমজান মাসজুড়ে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তিনি তেল কিনেছেন। কিছু বিক্রি হয়েছে। কিছু বিক্রি হয়নি। অবিক্রীত তেলই গুদামে ছিল।
তবে অভিযান চলাকালে কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন, বোতলের গায়ের দামের চেয়ে বাড়তি টাকা নিয়েছে খাজা স্টোর। ফারুক উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, অভিযান শুরু হওয়ার আগে খাজা স্টোরে তিন লিটার তেলের জন্য যান তিনি। বোতলে দাম লেখা ছিল ৪৬০ টাকা। কিন্তু দোকানি ৫৯০ টাকা চেয়েছেন। এর মধ্যেই ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চলে আসে।
এদিকে রোববারও নগরের বড় বাজার ও অলিগলির অনেক দোকানে তেল পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকেরা বাজারগুলোতে তেল দেননি। আবার কেউ কেউ বাড়তি দামে পুরোনো তেল কিনেছেন। এমন একজন ফরহাদ আহমেদ। তিনি চট্টগ্রাম নগরের মোমেনবাগ আবাসিক এলাকায় থাকেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি স্থানীয় একটি মুদিদোকান থেকে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কেনেন। বোতলের গায়ে দাম ছিল ৭৬০ টাকা। কিন্তু দোকানি তাঁর কাছ থেকে নিয়েছেন ১ হাজার টাকা। বেশি নেওয়ার কারণ হিসেবে দোকানি তাঁকে বলেছেন, ‘বাজারে তেল নাই। নিলে নেন, না নিলে যান।’
শুধু ফরহাদ নন, তাঁর মতো এমন অনেক ক্রেতা বোতলের গায়ে থাকা দামের চেয়ে বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনেছেন। নগরের ২ নম্বর রেলগেট, প্রবর্তক মোড় ও মোমেনবাগ এলাকায় এ রকম তিনজনের সঙ্গে কথা হয়, যাঁরা বাড়তি দামে তেল কিনেছেন। অবশ্য এ তিন এলাকার পাঁচটি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। তিনটি দোকানে পাওয়া গেছে, তবে পরিমাণে কম। এমনকি বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার, ২ নম্বর কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের মতো বড় বাজারেও তেল নেই।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের শাহজালাল স্টোরের কর্ণধার আবদুল মান্নান বলেন, বাজারে আজও কোনো কোম্পানি তেল দেয়নি। ঈদের আগে পাওয়া তেলই বিক্রি করছেন বেশির ভাগ দোকানি। তবে বেশি নেই। হাতে গোনা কয়েক লিটার আছে। কয়েকটি দোকানে খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার। বোতলজাত সয়াবিনও বিক্রি হচ্ছে এই দামে। অর্থাৎ পুরোনো তেলই নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানে আলম বলেন, কোনো কোম্পানি এখনো তেল দেয়নি। বাজারে গাড়ি ঢোকেনি। সংকট আগের মতোই আছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

দোকানের গুদামে পাওয়া গেল এক হাজার লিটার সয়াবিন তেল

আপডেট সময় : ০২:১০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চারদিকে তেলের সংকট। অলিগলি থেকে বড় বাজার—কোথাও সয়াবিন তেল মিলছে, কোথাও বা মিলছে না। এমন সংকটে কেউ কেউ তেল মজুত করে বাড়তি দামে সেগুলো বিক্রি করছেন। এমনই একজন চট্টগ্রামের ২ নম্বর গেটের খাজা স্টোরের আবদুল হাকিম। তাঁর দোকানের নিচে গুদামঘর। সেখানে তিনি মজুত করেছিলেন ১ হাজার লিটার সয়াবিন তেল।
গতকাল রোববার বিকেলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানে মজুত করা এসব তেল বের হয়ে আসে। পরে ‘অবৈধভাবে’ গুদামে তেল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি রাখার দায়ে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় আবদুল হাকিমকে।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ওই দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি পাওয়া গেছে। পাশাপাশি দোকানমালিক বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য অবৈধভাবে মজুত করেছেন। এ দুই অপরাধে তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। আর তেলগুলো আশপাশের দোকানদারদের কাছে গায়ের দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তবে আবদুল হাকিম নিজেকে পাইকারি বিক্রেতা বলে দাবি করেছেন। আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও দোকানে তেল সরবরাহ করেন। এ কারণে তাঁর গুদামে তেল ছিল। আর রমজান মাসজুড়ে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তিনি তেল কিনেছেন। কিছু বিক্রি হয়েছে। কিছু বিক্রি হয়নি। অবিক্রীত তেলই গুদামে ছিল।
তবে অভিযান চলাকালে কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন, বোতলের গায়ের দামের চেয়ে বাড়তি টাকা নিয়েছে খাজা স্টোর। ফারুক উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, অভিযান শুরু হওয়ার আগে খাজা স্টোরে তিন লিটার তেলের জন্য যান তিনি। বোতলে দাম লেখা ছিল ৪৬০ টাকা। কিন্তু দোকানি ৫৯০ টাকা চেয়েছেন। এর মধ্যেই ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চলে আসে।
এদিকে রোববারও নগরের বড় বাজার ও অলিগলির অনেক দোকানে তেল পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকেরা বাজারগুলোতে তেল দেননি। আবার কেউ কেউ বাড়তি দামে পুরোনো তেল কিনেছেন। এমন একজন ফরহাদ আহমেদ। তিনি চট্টগ্রাম নগরের মোমেনবাগ আবাসিক এলাকায় থাকেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি স্থানীয় একটি মুদিদোকান থেকে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কেনেন। বোতলের গায়ে দাম ছিল ৭৬০ টাকা। কিন্তু দোকানি তাঁর কাছ থেকে নিয়েছেন ১ হাজার টাকা। বেশি নেওয়ার কারণ হিসেবে দোকানি তাঁকে বলেছেন, ‘বাজারে তেল নাই। নিলে নেন, না নিলে যান।’
শুধু ফরহাদ নন, তাঁর মতো এমন অনেক ক্রেতা বোতলের গায়ে থাকা দামের চেয়ে বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনেছেন। নগরের ২ নম্বর রেলগেট, প্রবর্তক মোড় ও মোমেনবাগ এলাকায় এ রকম তিনজনের সঙ্গে কথা হয়, যাঁরা বাড়তি দামে তেল কিনেছেন। অবশ্য এ তিন এলাকার পাঁচটি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। তিনটি দোকানে পাওয়া গেছে, তবে পরিমাণে কম। এমনকি বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার, ২ নম্বর কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের মতো বড় বাজারেও তেল নেই।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের শাহজালাল স্টোরের কর্ণধার আবদুল মান্নান বলেন, বাজারে আজও কোনো কোম্পানি তেল দেয়নি। ঈদের আগে পাওয়া তেলই বিক্রি করছেন বেশির ভাগ দোকানি। তবে বেশি নেই। হাতে গোনা কয়েক লিটার আছে। কয়েকটি দোকানে খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার। বোতলজাত সয়াবিনও বিক্রি হচ্ছে এই দামে। অর্থাৎ পুরোনো তেলই নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানে আলম বলেন, কোনো কোম্পানি এখনো তেল দেয়নি। বাজারে গাড়ি ঢোকেনি। সংকট আগের মতোই আছে।