ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

দেড় হাজার ছিনতাই, অর্ধশতাধিক নারীর শ্লীলতাহানি করেছেন রুবেল

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শ্যামলী থেকে দিনে-দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রটিকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। চক্রটির হোতা শাকিল আহমেদ রুবেল অর্ধশতাধিক নারীর শ্লীলতাহানি করেছেন এবং এই চক্রটি গত কয়েক বছরে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ৬টি ডাকাতির মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
গতকাল রোববার গতকাল রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। হারুন অর রশিদ বলেন, ছিনতাইয়ের পাশাপাশি সে নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করতো। রুবেলের মূল টার্গেট ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের মেয়ে শিক্ষার্থীরা। ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ের আগে সে গত ১২ আগস্ট উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। সেই মোটরসাইকেল পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ীতে নিয়ে ছিনতাই করে। রুবেলের বাড়ি গাজীপুর। তবে আরও ২টি ঠিকানা পাওয়া গেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। তিনি বলেন, রুবেল ঢাকায় কোনো বাসা ভাড়া নেয়নি। সে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতো। তারপর মোটরসাইকেল ছিনতাই কিংবা ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিংবা কলেজের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এসব ঘটনা ঘটাতো।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে এখন পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে ১ হাজার ৫০০টির অধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে ছিনতাইয়ের পর ৫০ জন মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। ছিনতাইয়ের জন্য নির্জন স্থান বেছে নিতো রুবেল। মেয়েদের মোটরসাইকেল উঠিয়ে রাজধানীর ৩০০ ফিট, দিয়াবাড়ী ও পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে যেতো। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের ৬টি মামলা বিভিন্ন থানায় রয়েছে। তাকে এবং তার সহযোগীদের রিমান্ডে এনে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করব। ডিবি প্রধান বলেন, আমরা অনুরোধ করবো কেউ পুলিশ পরিচয় দিলে যেন তার মোটরসাইকেলে কেউ উঠে না যায়। তাকে যেন চ্যালেঞ্জ করে এবং তার পরিচয় জানার চেষ্টা করে। কোনো পুলিশ মোটরসাইকেল করে কখনো আসামি নিয়ে যায় না। তাহলে রুবেলের মতো মানুষকে আটকানো যাবে। আসলে তার হাতে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও গাড়িতে পুলিশের স্টিকার দেখে হয়তো ওই শিক্ষার্থী তাকে পুলিশ ভেবে নেয়। তবে সে যদি আশপাশের লোকজনকে ডেকে তাকে চ্যালেঞ্জ করতো তাহলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না।
পুলিশ জানায়, ছিনতাই রুবেলের পেশা ও নেশা। সে পুলিশের ছদ্মবেশে এই কাজ করে আসছিল। সে সারাদেশে ১ হাজার ৫০০টির মতো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। রুবেল একাধিকবার জেলে গেছে। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলাও রয়েছে। তার চার সহযোগী রুবেলকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে সহযোগিতা করতো। কেউ মোটরসাইকেল ভাড়া করে এনে দিতে আবার কেউ অন্যভাবে সহযোগিতা করতো। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিবি প্রধান বলেন, রুবেল ওয়াকিটকি, পিস্তল ও ডিএমপির লোগো কিভাবে পেল রিমান্ডে এনে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। এসব ঘটনায় অনেকে মামলা করতে থানায় যায় না। মামলা করলে এসব বিষয়ের শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মামলা না হলে তো আমরা এসব বিষয় জানতে পারি না। তার পেছনে সত্যিকারের কোনো পুলিশ সদস্য আছে কিনা তদন্তের পর জানা যাবে। এর আগে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রুবেল ও তার সহযোগী মো. আকাশ শেখ (২২), দেলোয়ার হোসেন (৫৫) ও মো. হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি ওয়ারলেস সেট, ২টি পুলিশ স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল ও ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দেড় হাজার ছিনতাই, অর্ধশতাধিক নারীর শ্লীলতাহানি করেছেন রুবেল

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শ্যামলী থেকে দিনে-দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রটিকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। চক্রটির হোতা শাকিল আহমেদ রুবেল অর্ধশতাধিক নারীর শ্লীলতাহানি করেছেন এবং এই চক্রটি গত কয়েক বছরে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ৬টি ডাকাতির মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
গতকাল রোববার গতকাল রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। হারুন অর রশিদ বলেন, ছিনতাইয়ের পাশাপাশি সে নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করতো। রুবেলের মূল টার্গেট ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের মেয়ে শিক্ষার্থীরা। ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ের আগে সে গত ১২ আগস্ট উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। সেই মোটরসাইকেল পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ীতে নিয়ে ছিনতাই করে। রুবেলের বাড়ি গাজীপুর। তবে আরও ২টি ঠিকানা পাওয়া গেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। তিনি বলেন, রুবেল ঢাকায় কোনো বাসা ভাড়া নেয়নি। সে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতো। তারপর মোটরসাইকেল ছিনতাই কিংবা ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিংবা কলেজের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এসব ঘটনা ঘটাতো।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে এখন পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে ১ হাজার ৫০০টির অধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে ছিনতাইয়ের পর ৫০ জন মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। ছিনতাইয়ের জন্য নির্জন স্থান বেছে নিতো রুবেল। মেয়েদের মোটরসাইকেল উঠিয়ে রাজধানীর ৩০০ ফিট, দিয়াবাড়ী ও পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে যেতো। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের ৬টি মামলা বিভিন্ন থানায় রয়েছে। তাকে এবং তার সহযোগীদের রিমান্ডে এনে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করব। ডিবি প্রধান বলেন, আমরা অনুরোধ করবো কেউ পুলিশ পরিচয় দিলে যেন তার মোটরসাইকেলে কেউ উঠে না যায়। তাকে যেন চ্যালেঞ্জ করে এবং তার পরিচয় জানার চেষ্টা করে। কোনো পুলিশ মোটরসাইকেল করে কখনো আসামি নিয়ে যায় না। তাহলে রুবেলের মতো মানুষকে আটকানো যাবে। আসলে তার হাতে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও গাড়িতে পুলিশের স্টিকার দেখে হয়তো ওই শিক্ষার্থী তাকে পুলিশ ভেবে নেয়। তবে সে যদি আশপাশের লোকজনকে ডেকে তাকে চ্যালেঞ্জ করতো তাহলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না।
পুলিশ জানায়, ছিনতাই রুবেলের পেশা ও নেশা। সে পুলিশের ছদ্মবেশে এই কাজ করে আসছিল। সে সারাদেশে ১ হাজার ৫০০টির মতো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। রুবেল একাধিকবার জেলে গেছে। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলাও রয়েছে। তার চার সহযোগী রুবেলকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে সহযোগিতা করতো। কেউ মোটরসাইকেল ভাড়া করে এনে দিতে আবার কেউ অন্যভাবে সহযোগিতা করতো। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিবি প্রধান বলেন, রুবেল ওয়াকিটকি, পিস্তল ও ডিএমপির লোগো কিভাবে পেল রিমান্ডে এনে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। এসব ঘটনায় অনেকে মামলা করতে থানায় যায় না। মামলা করলে এসব বিষয়ের শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মামলা না হলে তো আমরা এসব বিষয় জানতে পারি না। তার পেছনে সত্যিকারের কোনো পুলিশ সদস্য আছে কিনা তদন্তের পর জানা যাবে। এর আগে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রুবেল ও তার সহযোগী মো. আকাশ শেখ (২২), দেলোয়ার হোসেন (৫৫) ও মো. হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি ওয়ারলেস সেট, ২টি পুলিশ স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল ও ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।