ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন নাহিদরা

দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন নয়

  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আবরার ফাহাদের পথ ধরে লড়াই করেছি। আবার যদি কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো রাজনৈতিক পক্ষ সেই আধিপত্যবাদে সামিল হতে চায়, আমরা তার বিরুদ্ধে যাব। বাংলাদেশের মানুষ চায় সংস্কার হোক।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে কুষ্টিয়ার পাঁচরাস্তা মোড়ে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে আবরার ফাহাদ মাইলফলক ছিলেন। আবরারের মৃত্যু ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আবরারের মৃত্যু প্রতিবাদের মিছিলে ‘দিল্লি না ঢাকা’ স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই স্লোগানই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ে আবার দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশপন্থি পথ দেখিয়ে গেছেন আবরার ফাহাদ। সেই পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করছে। সেই পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাঈদ সব শহীদকে আমরা স্মরণ করি। তারা যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল, জুলাই পদযাত্রার মাধ্যমে আমরা সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।

দেশ গড়তে জাতীয় নাগরিক পার্টি জুলাই পদযাত্রার অষ্টম দিনে কুষ্টিয়ায় বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে শুরু হয় পদযাত্রা। এর আগে, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙা গ্রামে শহীদ আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কবর জিয়ারত শেষে কুষ্টিয়া বড়বাজার এলাকা থেকে পদযাত্রা পাঁচরাস্তা মোড় পর্যন্ত যায়। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। পথসভা শেষে পদযাত্রা মেহেরপুর জেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। গত ১ জুলাই রংপুর থেকে পদযাত্রা শুরু করে এনসিপি।

এর আগে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাইদ সকল শহীদদেরকে আমরা স্মরণ করি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের আন্দোলনের সময় গত ১৬ বছরে যারা গুম খুন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমরা সকল শহীদ ও নির্যাতিতদের ধারণ করি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছি। সেই শহীদরা যে স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখেছিল। যে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব মর্যাদার বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখেছিল। যে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতির উত্থান তারা করতে চেয়েছিল। আমরা সেই রাজনীতি করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আবরার ফাহাদ বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বুয়েটের হলে ছাত্রলীগ দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল তিনি দেশের জন্য, দেশের পক্ষে কথা বলেছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখেছিলেন। বাংলাদেশের সাথে ফেনী নদী চুক্তি করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে কথা বলেছিলেন বলে ভারতীয় তাঁবেদার সংগঠন, ফ্যাসিস্ট সংগঠন ছাত্রলীগ সারারাত নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে। আমাদের ভাই আবরার ফাহাদ শহীদ হন। ২০১৯ সালেই আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশে আমরা দিন দিন আধিপত্যবাদ বিরোধী এবং সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। সেই আন্দোলন আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম মাইলফলক।

নাহিদ আরো বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের পরে ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ হত্যা অনেক বড় ঘটনা ছিল আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে। আবরার ফাহাদের মৃত্যু এবং মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতের আধিপত্য বিরোধী আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়েছিল।

এ সময় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপি নেতা সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও পরিবারের ৫৭৬ কোটি টাকা ফ্রিজ

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন নাহিদরা

দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন নয়

আপডেট সময় : ০৯:১৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আবরার ফাহাদের পথ ধরে লড়াই করেছি। আবার যদি কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো রাজনৈতিক পক্ষ সেই আধিপত্যবাদে সামিল হতে চায়, আমরা তার বিরুদ্ধে যাব। বাংলাদেশের মানুষ চায় সংস্কার হোক।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে কুষ্টিয়ার পাঁচরাস্তা মোড়ে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে আবরার ফাহাদ মাইলফলক ছিলেন। আবরারের মৃত্যু ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আবরারের মৃত্যু প্রতিবাদের মিছিলে ‘দিল্লি না ঢাকা’ স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই স্লোগানই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ে আবার দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশপন্থি পথ দেখিয়ে গেছেন আবরার ফাহাদ। সেই পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করছে। সেই পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাঈদ সব শহীদকে আমরা স্মরণ করি। তারা যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল, জুলাই পদযাত্রার মাধ্যমে আমরা সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।

দেশ গড়তে জাতীয় নাগরিক পার্টি জুলাই পদযাত্রার অষ্টম দিনে কুষ্টিয়ায় বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে শুরু হয় পদযাত্রা। এর আগে, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙা গ্রামে শহীদ আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কবর জিয়ারত শেষে কুষ্টিয়া বড়বাজার এলাকা থেকে পদযাত্রা পাঁচরাস্তা মোড় পর্যন্ত যায়। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। পথসভা শেষে পদযাত্রা মেহেরপুর জেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। গত ১ জুলাই রংপুর থেকে পদযাত্রা শুরু করে এনসিপি।

এর আগে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাইদ সকল শহীদদেরকে আমরা স্মরণ করি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের আন্দোলনের সময় গত ১৬ বছরে যারা গুম খুন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমরা সকল শহীদ ও নির্যাতিতদের ধারণ করি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছি। সেই শহীদরা যে স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখেছিল। যে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব মর্যাদার বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখেছিল। যে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতির উত্থান তারা করতে চেয়েছিল। আমরা সেই রাজনীতি করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আবরার ফাহাদ বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বুয়েটের হলে ছাত্রলীগ দ্বারা নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল তিনি দেশের জন্য, দেশের পক্ষে কথা বলেছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখেছিলেন। বাংলাদেশের সাথে ফেনী নদী চুক্তি করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে কথা বলেছিলেন বলে ভারতীয় তাঁবেদার সংগঠন, ফ্যাসিস্ট সংগঠন ছাত্রলীগ সারারাত নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে। আমাদের ভাই আবরার ফাহাদ শহীদ হন। ২০১৯ সালেই আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশে আমরা দিন দিন আধিপত্যবাদ বিরোধী এবং সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। সেই আন্দোলন আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম মাইলফলক।

নাহিদ আরো বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের পরে ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ হত্যা অনেক বড় ঘটনা ছিল আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে। আবরার ফাহাদের মৃত্যু এবং মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতের আধিপত্য বিরোধী আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়েছিল।

এ সময় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপি নেতা সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।