নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হারও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১ হাজার ৯৭০ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে এই সময়ে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ৪১ দিনের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ শনাক্তের হার। গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬৭৬ জনের।
দেশে এ পর্যন্ত মোট করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৯৬০ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৮৬৯ জনের। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৫৩ হাজার ২৪০ জন। গত বছর মার্চে বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর ধাপে ধাপে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা, শনাক্তের হার এবং এতে মৃত্যু বাড়ে। গত বছর অগাস্টে শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে উঠেছিল। এরপর শনাক্তের হার ধীরে ধীরে কমে গত ৮ ফেব্রুয়ারি নেমেছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশে। তবে এ বছর মার্চের মাঝামাঝিতে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে। দৈনিক শনাক্তের হার ৭ এপ্রিল পৌঁছে যায় ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশে। সেই সঙ্গে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যু বাড়ে। গত ১৯ এপ্রিল আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়, যা দেশে একদিনে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা। এপ্রিলের শুরুর দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজারের ঘরে পৌঁছে যায়। এর মধ্যে গত ৫ এপ্রিল থেকে করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার, যা এখনো বহাল রয়েছে। এই বিধিনিষেধের কারণে দেশে করোনা সংক্রমণের প্রবণতা আবার নি¤œমুখী হয়। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড় হাজারের নিচে নেমে আসে। সেই সঙ্গে করোনায় মৃত্যু এবং শনাক্তের হারও কমে। গত ১৬ মে শনাক্তের হার নেমে আসে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশে। তবে ঈদুল ফিতর ঘিরে মে মাসের মাঝামাঝিতে শহর থেকে লাখ লাখ মানুষের গ্রামে ফেরা এবং গ্রাম থেকে আবার শহরে আসা, মার্কেটে মার্কেটে জনসমাগম করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি করে। এরমধ্যে ভারতের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলায় করোনার অতি সংক্রামক ধরন ছড়িয়ে পড়ে। গত কয়েক দিন ধরে আবার করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। গত ২ জুন দেশে ১৯৮৮ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়, যা ছিল এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল ২১৭৭ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানানো হয়েছিল।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় যে শনাক্তের হার হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল গত ২৭ এপ্রিলের বুলেটিনে। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদ- অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা অন্তত দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।
দেশে শনাক্ত ও হার দুটোই বাড়ছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ