ঢাকা ০৯:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

দেশে বায়ুদূষণ কমেছে, সাত বছরের তুলনায় নভেম্বরে ১৪ ভাগ কম

  • আপডেট সময় : ১১:৩৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে শুষ্ক আবহাওয়া থাকায় বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বায়ু দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। গত সাত বছরের মধ্যে এবারই প্রথম এই মাসে দেশের বায়ু দূষণ কমে এসেছিল। সাত বছরে নভেম্বর মাসের বায়ু দূষণের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবারই দূষণের মাত্রা ১৪ ভাগ কমেছে। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর তথ্য এবং বায়ুমান সূচক বা অছও এর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, গত সাত বছরের মধ্যে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১৭ দিনে বায়ুমান আগের বছর তুলনায় ভালো ছিল। ২০১৬ সালে বায়ুমান সূচক গড়ে ১৬৯ দশমিক ৪০, ২০১৯ সালে ১৫৯ এবং ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের ৩০ দিনে ১৬৩ দশমিক ২৭ ছিল। আবার ২০১৭ সালে ১৭ দিনে গড় বায়ুমান সূচক ১৭৮ দশমিক ৩৪, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের ৩০ দিনের বায়ুর মান সূচক বা অছও বেড়ে গিয়ে গড়ে ১৯৪ দশমিক ৮৩ তে এসে দাঁড়ায়। ২০২২ সালে নভেম্বরের ১৭ দিনে গড় বায়ু মান সূচক ছিল ১৬৭। আগের ছয় বছরের (২০১৬-২০২১) একই সময়ের গড় মানের (১৭৬ দশমিক ৯১) তুলনায় প্রায় পাঁচ দশমিক ৬০ ভাগ কম এবং ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় ১৪ দশমিক ২৮ ভাগ কম হয়েছে দূষণ। ক্যাপসের গবেষণা থেকে জানা যায়, গত সাত বছরে ২০২২, ২০২১, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭ এবং ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসের মোট ১৮৩ দিনের মধ্যে ঢাকার মানুষ ২০১৬ সালে এক দিন ভালো বায়ু সেবন করেন। অন্য বছরগুলোতে বায়ুমান মাঝারি (সাত দিন) এবং সংবেদনশীল গ্রুপের জন্য অস্বাস্থ্যকর (৩২ দিন) অবস্থায় অবস্থান করেছে। এই সাত বছরের ডাটা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২১ সালে ১১ দিন ঢাকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়ালের’ বায়ুমান সূচক (একিউআই) ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এই সময়ে যেখানে প্রায় দিনই ঢাকা থাকতো বায়ু দূষণের শীর্ষ অবস্থানে, সেখানে এবার এখন পর্যন্ত শীর্ষ অবস্থানে আসেনি। নভেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি দূষণ হয়েছে গত ১৩ নভেম্বর। এ দিন বায়ু দূষণে বিশ্বের প্রায় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে ঢাকা। একিউআই ইনডেক্সে ওই দিন সকাল থেকে প্রথম অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। ঢাকা ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। পরে আবার ভারতের রাজধানী দিল্লি সামনে চলে আসায় ঢাকার অবস্থান নেমে আসে তৃতীয় স্থানে। এছাড়া ২৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ তালিকায় বিশ্বে চতুর্থ স্থানে আবার উঠে আসে। একিউআই এ মাত্রা ছিল ১৬৯। এছাড়া পুরো মাসজুড়েই ঢাকার অবস্থান ছিল সাত থেকে ১৫ এর মধ্যে। এতে বোঝা যায় বায়ু মান গত বছরগুলোর তুলনায় বেশ ভালো ছিল। ‘এয়ার ভিজ্যুয়ালের’ বায়ুমান সূচক (একিউআই) ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার অবস্থান ছিল অস্টম। মাত্রা ১৫৩।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই দূষণ কমে যাওয়ার মূল কারণ দুটি। একটি হচ্ছে, মেট্রোরেলসহ বড় বেশ কিছু প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষদিকে। অনেক জায়গায় নিচের কাজ প্রায় শেষ। ফলে দূষণ হচ্ছে না। দুই নম্বর কারণ হচ্ছে, ইট ভাটার দূষণ কমে এসেছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে ধন্যবাদ দিতে হয়। তাদের নিয়মিত অভিযানের কারণে অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা কমে এসেছে। ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় ২০০ এই ধরনের ইটভাটা ছিল। যার বেশিরভাগই বন্ধ করতে পেরেছে পরিবেশ অধিদফতর।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

দেশে বায়ুদূষণ কমেছে, সাত বছরের তুলনায় নভেম্বরে ১৪ ভাগ কম

আপডেট সময় : ১১:৩৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে শুষ্ক আবহাওয়া থাকায় বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বায়ু দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। গত সাত বছরের মধ্যে এবারই প্রথম এই মাসে দেশের বায়ু দূষণ কমে এসেছিল। সাত বছরে নভেম্বর মাসের বায়ু দূষণের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবারই দূষণের মাত্রা ১৪ ভাগ কমেছে। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর তথ্য এবং বায়ুমান সূচক বা অছও এর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, গত সাত বছরের মধ্যে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১৭ দিনে বায়ুমান আগের বছর তুলনায় ভালো ছিল। ২০১৬ সালে বায়ুমান সূচক গড়ে ১৬৯ দশমিক ৪০, ২০১৯ সালে ১৫৯ এবং ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের ৩০ দিনে ১৬৩ দশমিক ২৭ ছিল। আবার ২০১৭ সালে ১৭ দিনে গড় বায়ুমান সূচক ১৭৮ দশমিক ৩৪, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের ৩০ দিনের বায়ুর মান সূচক বা অছও বেড়ে গিয়ে গড়ে ১৯৪ দশমিক ৮৩ তে এসে দাঁড়ায়। ২০২২ সালে নভেম্বরের ১৭ দিনে গড় বায়ু মান সূচক ছিল ১৬৭। আগের ছয় বছরের (২০১৬-২০২১) একই সময়ের গড় মানের (১৭৬ দশমিক ৯১) তুলনায় প্রায় পাঁচ দশমিক ৬০ ভাগ কম এবং ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় ১৪ দশমিক ২৮ ভাগ কম হয়েছে দূষণ। ক্যাপসের গবেষণা থেকে জানা যায়, গত সাত বছরে ২০২২, ২০২১, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭ এবং ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসের মোট ১৮৩ দিনের মধ্যে ঢাকার মানুষ ২০১৬ সালে এক দিন ভালো বায়ু সেবন করেন। অন্য বছরগুলোতে বায়ুমান মাঝারি (সাত দিন) এবং সংবেদনশীল গ্রুপের জন্য অস্বাস্থ্যকর (৩২ দিন) অবস্থায় অবস্থান করেছে। এই সাত বছরের ডাটা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২১ সালে ১১ দিন ঢাকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়ালের’ বায়ুমান সূচক (একিউআই) ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এই সময়ে যেখানে প্রায় দিনই ঢাকা থাকতো বায়ু দূষণের শীর্ষ অবস্থানে, সেখানে এবার এখন পর্যন্ত শীর্ষ অবস্থানে আসেনি। নভেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি দূষণ হয়েছে গত ১৩ নভেম্বর। এ দিন বায়ু দূষণে বিশ্বের প্রায় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে ঢাকা। একিউআই ইনডেক্সে ওই দিন সকাল থেকে প্রথম অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। ঢাকা ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। পরে আবার ভারতের রাজধানী দিল্লি সামনে চলে আসায় ঢাকার অবস্থান নেমে আসে তৃতীয় স্থানে। এছাড়া ২৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ তালিকায় বিশ্বে চতুর্থ স্থানে আবার উঠে আসে। একিউআই এ মাত্রা ছিল ১৬৯। এছাড়া পুরো মাসজুড়েই ঢাকার অবস্থান ছিল সাত থেকে ১৫ এর মধ্যে। এতে বোঝা যায় বায়ু মান গত বছরগুলোর তুলনায় বেশ ভালো ছিল। ‘এয়ার ভিজ্যুয়ালের’ বায়ুমান সূচক (একিউআই) ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার অবস্থান ছিল অস্টম। মাত্রা ১৫৩।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই দূষণ কমে যাওয়ার মূল কারণ দুটি। একটি হচ্ছে, মেট্রোরেলসহ বড় বেশ কিছু প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষদিকে। অনেক জায়গায় নিচের কাজ প্রায় শেষ। ফলে দূষণ হচ্ছে না। দুই নম্বর কারণ হচ্ছে, ইট ভাটার দূষণ কমে এসেছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে ধন্যবাদ দিতে হয়। তাদের নিয়মিত অভিযানের কারণে অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা কমে এসেছে। ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় ২০০ এই ধরনের ইটভাটা ছিল। যার বেশিরভাগই বন্ধ করতে পেরেছে পরিবেশ অধিদফতর।