নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে টানা ১৮ দিন মৃতের সংখ্যা দুইশ’ ওপরে রয়েছে। গত ২৪ জুলাই ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়। এর পর থেকে প্রতিদিনই দুইশ’ ওপরে রোগী মারা গেছেন বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার ২৩৭ জন নিয়ে সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেলেন ২৩ হাজার ৩৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪২০ জন। তাদের নিয়ে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৩১৩ জন। এ নিয়ে মোট ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ৪৪ হাজার আটটি, আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৪৩০টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৭১টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৬১ লাখ ৪৫৭টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ লাখ ৫৬ হাজার ১৪টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যাওয়া ২৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩৪ জন এবং নারী ১০৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট পুরুষ মারা গেলেন ১৫ হাজার ৫১৮ জন এবং নারী মারা গেলেন সাত হাজার ৮৮০ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদেরে মধ্যে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে রয়েছেন দুই জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৮৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চার জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুই শিশু এবং শূন্য থেকে ১০ বছরের বয়সের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, মারা যাওয়া ২৩৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ১০ জন, খুলনা বিভাগের ২০ জন, বরিশাল বিভাগের আট জন, সিলেট বিভাগের ২৩ জন, রংপুর বিভাগের ছয় জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের রয়েছেন ১১ জন। ২৩৭ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ জন এবং বাড়িতে তিন জন।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ মজুত আছে: স্বাস্থ্য অধিদফতর : দেশে করোনাভাইরাসের টিকার যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজের টিকাও পর্যন্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। দেশে যারা ফাইজার এবং মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করেই টিকা কর্মসূচি চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তারা চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।’
অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন যারা গ্রহণ করেছেন তাদের অনুরোধ করতে চাই, আপনারা যথাসময়ে অর্থাৎ চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেবেন।’ তিনি বলেন, ‘এ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহীতা যে কেন্দ্রে এবং যে কোম্পানির নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজও সেই একই কেন্দ্রে এবং একই কোম্পানির টিকা নিতে পারবেন। অর্থাৎ যারা সিনোফার্মের ভ্যাকসিন পেয়েছেন, তারা সিনোফার্মের ভ্যাকসিনই পাবেন। যারা মডার্নার ভ্যাকসিন পেয়েছেন তারা মডার্নার ভ্যাকসিনই নেবেন। এ নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনও অবকাশ নেই।’
গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাসের মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আগামী ১২ আগস্ট থেকে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হবে। সেইসঙ্গে এই দিন এ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত দেশব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম বিষয়ক অতীব জরুরি দিকনির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে চিঠিতে বলা হয়, তবে যেসব স্থানে (টিকাদান কেন্দ্র) এ টিকার প্রথম ডোজ উদ্বৃত্ত রয়েছে, সেসব স্থানে দ্রুত প্রথম ডোজ সম্পন্ন করে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে হবে। চাহিদা মোতাবেক সারাদেশে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন শিগগিরই পাঠানো হবে বলেও চিঠিতে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, আগামী ১৪ আগস্ট থেকে সারাদেশে আবশ্যিকভাবে সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে হবে।