ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দেশে এখন বিচারবহির্ভূত হত্যা নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:২৪:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা আগে হলেও এখন নেই বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে সরকার তা তদন্ত করবে।’
বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে তারা বলেনি। আমরা নিজে থেকে বলেছি। এরকম বলা হয়েছে যে, কিছু লোককে কিল করা হয়েছে। আমাদের এখানে আগে হতো ২০০০, ২০০৩ ওই সময়ে। বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পেলে তদন্ত করা হবে।’
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘কিছু কিছু লোক নাকি বলেছে যে, ৭৬ জন লোক গত ১০ বছরে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা বলেছে, সরকার নাকি নিখোঁজ করেছে। ৭৬ জনের মধ্যে আবার ১০ জনের দেখা পাওয়া গেছে। বাকিগুলো আমরা ঠিক জানি না। পরিবার কোনো তথ্য দেয় না। পরিবারকে বলা হয়, তারা ভয়ে আর কোনো তথ্য দেয় না। আমরা জানি না, তারা কোথায় গেছেন।’
আলোচনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি এসেছে জানিয়ে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের (জাতিসংঘ) ধারণা, বাংলাদেশে টেলিভিশন মিডিয়া এগুলোতে কোনো ফ্রিডম নেই। কেউ নিজের কথা বলতে পারে না। তাদের (গণমাধ্যম) সেন্সর করে। আমি বলেছি, আমার এমন কিছু জানা নেই। আমি তো দেখি, আমাদের মিডিয়া ভেরি স্ট্রং। প্রাইভেট টেলিভিশন একটা কথা বললে ধরে ফেলে। মিডিয়ার স্বাধীনতার প্রসঙ্গে বলেছি, আমরা এ সম্পর্কে জানি না। কিন্তু কেউ কেউ মনে হয়ত মনে করে। তারা মনে মনে চিন্তা করে। তাদেরকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেকগুলো মিডিয়া রেজিস্টার্ড হয়েছে। আমি বললাম, সারাদেশে ২ হাজার ৮০০ পত্রিকা বের হয়। সরকার এগুলোর সেন্সর করে বলে আমার জানা নেই। সরকারের এত ক্ষমতাও নেই।’
দেশে সিভিল সোসাইটির প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে, জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সিভিল সোসাইটি নাকি নেই। এটা আমরা জানি না। সিভিল সোসাইটি তো সব জায়গায় থাকে। এনজিও আমাদের দেশে শত শত, কয়েক হাজার। এখানে প্রাইভেট ভলান্টিয়ার অর্গানাইজেশন খুব বেশি নেই।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘ খুব উদ্বিগ্ন এবং এ সমস্যা সমাধানে তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট চার দিনের সফরে গতকাল রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে ঢাকায় এসেছেন।
‘আপনারা সবাই আমারে খায়া ফেললেন’ : ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’- কথা প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ কথা বলার পর সাংবাদিকরা তাকে বিপাকে ফেলেছেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মন্ত্রী হেসে ফেলেন। পরে তিনি বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদি) আমাকে ধরে ফেললেন। আই অ্যাম সরি। আমি তো বেহেশত কথার কথা বলেছি। কিন্তু আপনারা আমারে খায়া ফেললেন।’
তিনি বলেন, ‘গত পরশু আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল- আমাদের ইকোনমিক অবস্থা কেমন? আমি বলেছিলাম, আমরা তো ভালো করছি। এই কোভিডের সময় গত বছর জিডিপির গ্রোথ ছিল ৬ দশমিক ৯৪। তবে আমরা ভালো করার চেষ্টা করছি।’
মোমেন বলেন, ‘আমরা জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছি। সে কারণে আমাদের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। আমেরিকায় বাড়ছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে বেড়েছে, তুরস্কে বেড়েছে, পাকিস্তানে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, মিয়ানমারে বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। সেদিক থেকে আমরা তো অনেক ভালো আছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেকের চেয়ে ভালো আছি। বলতে পারেন বেহেশতে আছি। আর যায় কোথায়! সবাই আমারে এক্কেরে…। এই হলো বাংলাদেশের মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব।’ তিনি বলেন, ‘আমি কি মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব করেছি? আফটার অল আই অ্যাম আ পাবলিক ফিগার। নিশ্চয়ই আপনারা আমাকে ক্রিটিসাইজ করতে পারেন। আই ডোন্ট মাইন্ড। তবে আগামীতে সাবধান হইতে হবে। আমি খোলামেলা মানুষ। আমি শিক্ষক মানুষ। আমি যেটা মনে করি, সেটা খোলামেলা বলে ফেলি। আমার দলও আমাকে বলেছে, এই পজিশনে থেকে ভালো কথা বলা দরকার।’
এর আগে গত শুক্রবার (১২ আগস্ট) সিলেটে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’। এরপর সারাদেশে মন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন আপদ ‘মব সন্ত্রাস’, আতঙ্কে সারা দেশ

দেশে এখন বিচারবহির্ভূত হত্যা নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:২৪:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা আগে হলেও এখন নেই বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে সরকার তা তদন্ত করবে।’
বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে তারা বলেনি। আমরা নিজে থেকে বলেছি। এরকম বলা হয়েছে যে, কিছু লোককে কিল করা হয়েছে। আমাদের এখানে আগে হতো ২০০০, ২০০৩ ওই সময়ে। বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পেলে তদন্ত করা হবে।’
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘কিছু কিছু লোক নাকি বলেছে যে, ৭৬ জন লোক গত ১০ বছরে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা বলেছে, সরকার নাকি নিখোঁজ করেছে। ৭৬ জনের মধ্যে আবার ১০ জনের দেখা পাওয়া গেছে। বাকিগুলো আমরা ঠিক জানি না। পরিবার কোনো তথ্য দেয় না। পরিবারকে বলা হয়, তারা ভয়ে আর কোনো তথ্য দেয় না। আমরা জানি না, তারা কোথায় গেছেন।’
আলোচনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি এসেছে জানিয়ে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের (জাতিসংঘ) ধারণা, বাংলাদেশে টেলিভিশন মিডিয়া এগুলোতে কোনো ফ্রিডম নেই। কেউ নিজের কথা বলতে পারে না। তাদের (গণমাধ্যম) সেন্সর করে। আমি বলেছি, আমার এমন কিছু জানা নেই। আমি তো দেখি, আমাদের মিডিয়া ভেরি স্ট্রং। প্রাইভেট টেলিভিশন একটা কথা বললে ধরে ফেলে। মিডিয়ার স্বাধীনতার প্রসঙ্গে বলেছি, আমরা এ সম্পর্কে জানি না। কিন্তু কেউ কেউ মনে হয়ত মনে করে। তারা মনে মনে চিন্তা করে। তাদেরকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেকগুলো মিডিয়া রেজিস্টার্ড হয়েছে। আমি বললাম, সারাদেশে ২ হাজার ৮০০ পত্রিকা বের হয়। সরকার এগুলোর সেন্সর করে বলে আমার জানা নেই। সরকারের এত ক্ষমতাও নেই।’
দেশে সিভিল সোসাইটির প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে, জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সিভিল সোসাইটি নাকি নেই। এটা আমরা জানি না। সিভিল সোসাইটি তো সব জায়গায় থাকে। এনজিও আমাদের দেশে শত শত, কয়েক হাজার। এখানে প্রাইভেট ভলান্টিয়ার অর্গানাইজেশন খুব বেশি নেই।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘ খুব উদ্বিগ্ন এবং এ সমস্যা সমাধানে তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট চার দিনের সফরে গতকাল রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে ঢাকায় এসেছেন।
‘আপনারা সবাই আমারে খায়া ফেললেন’ : ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’- কথা প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ কথা বলার পর সাংবাদিকরা তাকে বিপাকে ফেলেছেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মন্ত্রী হেসে ফেলেন। পরে তিনি বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদি) আমাকে ধরে ফেললেন। আই অ্যাম সরি। আমি তো বেহেশত কথার কথা বলেছি। কিন্তু আপনারা আমারে খায়া ফেললেন।’
তিনি বলেন, ‘গত পরশু আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল- আমাদের ইকোনমিক অবস্থা কেমন? আমি বলেছিলাম, আমরা তো ভালো করছি। এই কোভিডের সময় গত বছর জিডিপির গ্রোথ ছিল ৬ দশমিক ৯৪। তবে আমরা ভালো করার চেষ্টা করছি।’
মোমেন বলেন, ‘আমরা জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছি। সে কারণে আমাদের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। আমেরিকায় বাড়ছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে বেড়েছে, তুরস্কে বেড়েছে, পাকিস্তানে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, মিয়ানমারে বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। সেদিক থেকে আমরা তো অনেক ভালো আছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেকের চেয়ে ভালো আছি। বলতে পারেন বেহেশতে আছি। আর যায় কোথায়! সবাই আমারে এক্কেরে…। এই হলো বাংলাদেশের মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব।’ তিনি বলেন, ‘আমি কি মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব করেছি? আফটার অল আই অ্যাম আ পাবলিক ফিগার। নিশ্চয়ই আপনারা আমাকে ক্রিটিসাইজ করতে পারেন। আই ডোন্ট মাইন্ড। তবে আগামীতে সাবধান হইতে হবে। আমি খোলামেলা মানুষ। আমি শিক্ষক মানুষ। আমি যেটা মনে করি, সেটা খোলামেলা বলে ফেলি। আমার দলও আমাকে বলেছে, এই পজিশনে থেকে ভালো কথা বলা দরকার।’
এর আগে গত শুক্রবার (১২ আগস্ট) সিলেটে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’। এরপর সারাদেশে মন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।