নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১৯ জন, যা কিনা দেশে করোনা মহামারিকালে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। এর আগে চলতি বছরের গত ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১৯ জনসহ সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মারা গেছেন ১৪ হাজার ১৭২ জন। এর আগে গত শুক্রবার ( ২৫ জুন) ১০৮ জনের মৃত্যুর কথা জানায় অধিদফতর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে গত ১৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দৈনিক মৃত্যু একশ’ ছাড়িয়ে যায়। টানা তিন দিন একশ’র ওপরে মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়, যা কিনা রবিবারের (২৭ জুন) আগ পর্যন্ত ছিল সর্বোচ্চ। এরপরে গত ২৫ এপ্রিল ১০১ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ২৬৮ জন। তাদের নিয়ে সরকারি হিসাবে দেশে এপর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন আট লাখ ৮৮ হাজার ৪০৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ২৪৯ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হলেন আট লাখ চার হাজার ১০৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগ্রহীত হয়েছে ২৪ হাজার ৬২৮টি, আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৪ হাজার ৪০০টি। দেশে এখনও পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৫ লাখ ছয় হাজার ৭৮১টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ১৫৮টি, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৭ লাক ৫৯ হাজার ৬২৩টি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় রোগী শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, আর এখন পর্যন্ত মোট রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৫১ শতাংশ, আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৭৫ জন ও নারী ৪৪ জন। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ১০ হাজার ১১৮ জন, আর নারী মারা গেছেন চার হাজার ৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১৯ জনের মধ্যে বয়স বিবেচনায় ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৫৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আছেন ৩৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আছেন ৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে আছেন ২৪ জন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ২২ জন করে, খুলনা বিভাগে ৩২ জন, বরিশাল বিভাগে দুইজন, সিলেট বিভাগে পাঁচজন, রংপুর বিভাগে নয়জন আর ময়মনসিংহ বিভাগে আছেন তিনজন। মারা যাওয়া ১১৯ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৯৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৪ জন, বাড়িতে মারা গেছেন চারজন আর হাসপাতারে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে দুইজনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়া তিন হাজার ২৪৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে এক হাজার ১৯৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫১৫ জন, রংপুর বিভাগে ৯৬ জন, খুলনা বিভাগের ৪৯০ জন, বরিশাল বিভাগের ৩১ জন, রাজশাহী বিভাগের ৭৫৭ জন, সিলেট বিভাগের ৮২ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের আছেন ৭৯ জন।
ঢাকাসহ ৩৪ জেলায় করোনার উচ্চ সংক্রমণ : ঢাকাসহ ৩৪ জেলায় করোনার উচ্চ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এসব জেলায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেশি। আবার কিছু কিছু জেলায় একদিনের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা কমার ফলে শনাক্তও কমে গেছে। তা ছাড়া বেশ কিছু জেলায় কম নমুনা পরীক্ষার বিপরীতেও বেশি সংখ্যক করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগে এবং জেলা হিসেবে শনাক্তের হার বেশি ফরিদপুর, ফেনী, কুমিল্লা, মেহেরপুর এবং পিরোজপুরে। পাশাপাশি ঢাকা জেলায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। তবে শনাক্তের সংখ্যার দিক দিয়ে ঢাকা জেলা সবার ওপরে। মহানগরসহ জেলাটিতে ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৭৪৬টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ১৩২৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। শনিবার (২৬ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব জানা গেছে।
দেশে একদিনে ১১৯ মৃত্যুর রেকর্ড
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ