নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সব নদীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও প্রতিটি বিভাগে নদী দখলদারদের তালিকা আগামী ছয় মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গতকাল রোববার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মে. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সকল জেলা প্রশাসককে ছয় মাসের মধ্যে নদীর তালিকা ও নদী দখলকারীদের তালিকা জমাদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এর আগে দেশের সব নদীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা, তুরাগ নদীর সীমানা পুনরুদ্ধার ও প্রতিটি বিভাগে নদী দখলকারীদের তথ্য জানার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করে পরিবেশবাদী আইনজীবীদের সংগঠন বেলা। রিটে থাকা তথ্যে বলা হয়েছে, নদীর সংখ্যা নিয়ে একেকটি পক্ষের একেক হিসাব রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দেশে নদীর সংখ্যা ৪০৫টি। নদী রক্ষা কমিশনের হিসাবে ৭০৭টি নদী আছে বাংলাদেশে। আর বেসরকারি গবেষণায় ১ হাজার ১৮২টি নদীর কথা বলা হয়েছে। তাই নদীর সঠিক তালিকা ও অন্যান্য নির্দেশনা চেয়ে বেলা এই রিট দায়ের করে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রুল : আদেশের পরেও সাভারের বংশী নদী দূষণ ও অবৈধ দখলদারদের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল না করায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি), সাভারের সহকারী ভূমি কমিশনার এবং সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধেও এমন রুল জারি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাকির হোসাইন।
আইনজীবী বাকির জানান, ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘দখল-দূষণে শেষ বংশী নদী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৬৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গিলে খাচ্ছে রাজধানীর উপকণ্ঠের সাভারের বংশী নদী। এ নদীর বিরাট এলাকা প্রভাবশালীদের দখলে থাকলেও উদ্ধারের উদ্যোগ নেই। নদীর মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে দেদারছে। এসব কারণে ভালো নেই সাভার উপজেলার ৪০ থেকে ৪২ লাখ বাসিন্দা।’পরে এ প্রতিবেদনটি যুক্ত করে জনস্বার্থে রিট করেন সাভারের বাসিন্দা ব্যারিস্টার মো. বাকির হোসেন।
শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে বংশী নদীর দূষণ বন্ধ এবং ৩০ দিনের মধ্যে দূষণ ও দখলদারদের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), রাজউক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি), সাভারের নির্বাহী কর্মকর্তা, সাভারের ভূমি কর্মকর্তা, ঢাকা জেলার এসপি ও সাভার থানার ওসিকে ওই প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত। দীর্ঘ দুই বছরেও ওই প্রতিবেদন না দেওয়ায় বিষয়টি রবিবার আদালতের নজরে আনেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী বাকির হোসেন।
দেশের সব নদী ও দখলদারদের তালিকা ছয় মাসের মধ্যে চেয়েছেন হাইকোর্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ