ঢাকা ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

দেশের সবাইকে ইলিশের স্বাদ দেওয়ার পর রপ্তানি

  • আপডেট সময় : ০২:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইলিশ দেশের সব মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, দেশের সব মানুষকে ইলিশের স্বাদ দেওয়ার পরই এ মাছ রপ্তানি করা হবে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় মন্ত্রী বলেন, মৎস্যজীবী, ইলিশ ব্যবসায়ী, আড়তদার, ভোক্তাসহ সব শ্রেণির জনগণের মধ্যে জাটকা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছরও ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২২ উদ্যাপন করা হচ্ছে। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’। এ বছর দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২-এর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
মৎস্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। আর এর অন্যতম প্রচেষ্টা হিসেবে তিনি মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ ও বিকশিত করতে চেয়েছিলেন। এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছিলেন, মাছ হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খাত। এ জন্য সমুদ্রসীমা আইন প্রণয়ন, বিদেশ থেকে মাছ আহরণে ট্রলার আনাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় দেশের মৎস্য খাত একটি বিকশিত স্থানে পৌঁছেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাফছা বেগমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয় এ দেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। এ কারণে বাংলাদেশের ইলিশ দেশের জিআই পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। দেশের প্রায় ৬ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ মানুষ ইলিশ পরিবহন, বিক্রয়, জাল-নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত। ইলিশের সঙ্গে দেশের বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠী সম্পৃক্ত।
মন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লোক ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা, মৎস্যজীবীদের সহায়তা এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রতিকূলতা কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকা নিধন বলে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলে ২০২২ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৭টি জেলায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২২’ পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৩০ দিনে মোট ৮৮৪টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৫৪৬টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান সরকার জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্যসহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৬টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৬ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে, যা বিগত বছর থেকে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। এ বছর প্রথম ধাপে মার্চ-এপ্রিল মাসের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার ৭০০টি জেলে পরিবারের জন্য ৪০ কেজি হারে মোট ৩১ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, যা বিগত বছরের চেয়ে বেশি। মন্ত্রী বলেন, ইলিশের পর্যাপ্ত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের সবাই যখন ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে, তারপর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইলিশ রপ্তানির চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে। দেশের ইলিশ সম্পদ, তথা মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

দেশের সবাইকে ইলিশের স্বাদ দেওয়ার পর রপ্তানি

আপডেট সময় : ০২:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইলিশ দেশের সব মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, দেশের সব মানুষকে ইলিশের স্বাদ দেওয়ার পরই এ মাছ রপ্তানি করা হবে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় মন্ত্রী বলেন, মৎস্যজীবী, ইলিশ ব্যবসায়ী, আড়তদার, ভোক্তাসহ সব শ্রেণির জনগণের মধ্যে জাটকা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছরও ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২২ উদ্যাপন করা হচ্ছে। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’। এ বছর দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২-এর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
মৎস্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। আর এর অন্যতম প্রচেষ্টা হিসেবে তিনি মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ ও বিকশিত করতে চেয়েছিলেন। এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছিলেন, মাছ হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খাত। এ জন্য সমুদ্রসীমা আইন প্রণয়ন, বিদেশ থেকে মাছ আহরণে ট্রলার আনাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় দেশের মৎস্য খাত একটি বিকশিত স্থানে পৌঁছেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাফছা বেগমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয় এ দেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। এ কারণে বাংলাদেশের ইলিশ দেশের জিআই পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। দেশের প্রায় ৬ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ মানুষ ইলিশ পরিবহন, বিক্রয়, জাল-নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত। ইলিশের সঙ্গে দেশের বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠী সম্পৃক্ত।
মন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লোক ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা, মৎস্যজীবীদের সহায়তা এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রতিকূলতা কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকা নিধন বলে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলে ২০২২ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৭টি জেলায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২২’ পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৩০ দিনে মোট ৮৮৪টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৫৪৬টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান সরকার জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্যসহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৬টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৬ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে, যা বিগত বছর থেকে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। এ বছর প্রথম ধাপে মার্চ-এপ্রিল মাসের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার ৭০০টি জেলে পরিবারের জন্য ৪০ কেজি হারে মোট ৩১ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, যা বিগত বছরের চেয়ে বেশি। মন্ত্রী বলেন, ইলিশের পর্যাপ্ত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের সবাই যখন ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে, তারপর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইলিশ রপ্তানির চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে। দেশের ইলিশ সম্পদ, তথা মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।