ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : মালয়েশিয়াবেশির ভাগ শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার গন্তব্য ইউরোপীয় দেশগুলো হলেও আজকাল অনেকেই মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ১৩২ দেশের প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন।
শিক্ষাব্যবস্থা ঃ মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা ৪টি কোর্সে ভাগ করা। ডিপ্লোমা কোর্সের মেয়াদ ২-৩ বছর, আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স ৩-৫ বছরমেয়াদি, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রির জন্য প্রয়োজন দেড় থেকে ২ বছর এবং ডক্টরাল ডিগ্রি ৩-৫ বছরের হয়ে থাকে। শিক্ষাবর্ষ সাধারণত জানুয়ারি-এপ্রিল, মে-আগস্ট, সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর–এ ৩টি সেমিস্টারে বিভক্ত।
এখানকার উল্লেখযোগ্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় হলো: ইউনিভার্সিটি অব মালয়া, ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি পুত্রা, লিমককউইং ইউনিভার্সিটি, মাশা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিবিএস, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, রসায়ন, আইন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হয়।
টিউশন ফি ঃ মালয়েশিয়ায় টিউশন ফি সাধারণত প্রতি সেমিস্টারে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত হয়ে থাকে। অফেরতযোগ্য ১ হাজার রিঙ্গিত বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হবে। এ ছাড়া ইনস্যুরেন্স ফি ৫০০ থেকে ৮৫০ রিঙ্গিত, মেডিকেল ফি ২৫০ রিঙ্গিত দিতে হবে।
বৃত্তি কথা ঃ এখানে বৃত্তি পেতে হলে অবশ্যই একাডেমিক রেজাল্ট ভালো হতে হবে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৃত্তি হলো: মালয়েশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ফান্ড।
ভর্তির যোগ্যতা ঃ ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য ন্যূনতম এইচএসসির সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সের জন্য ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক সমমানের শিক্ষা থাকা প্রয়োজন। ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী হলে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রির জন্য আবেদন করা যাবে ৷ ডক্টরাল কোর্সের জন্য পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি এবং ব্যাপক গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সুযোগ-সুবিধা ঃ মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার মান খুবই উন্নত। মালয়েশিয়া থেকে লেখাপড়া করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে চাকরি অথবা পরবর্তী পর্যায়ের পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগও রয়েছে। এখানে পড়াশোনা, থাকা-খাওয়ার খরচ খুব কম। আপনি যদি স্থায়ী পিআর চান, সে ক্ষেত্রে আপনাকে এখানে একটানা ৫ বছর থাকতে হবে। এখানে পড়াশোনা করা অবস্থায় একজন বিদেশি শিক্ষার্থী তাঁর পড়াশোনা শুরু করার পর কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারেন। একজন শিক্ষার্থী সেমিস্টার-পরবর্তী ছুটিতে অথবা ৭ দিনের অতিরিক্ত মেয়াদের কোনো ছুটিতে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি পেয়ে থাকেন। কাজ করতে আগ্রহী একজন শিক্ষার্থীর অবশ্যই স্টুডেন্ট পাস থাকতে হবে। এখানে একজন বিদেশি শিক্ষার্থীর জীবনযাত্রার বার্ষিক ব্যয় ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার মার্কিন ডলারের মধ্যেই হয়ে যাবে।
ভর্তির প্রক্রিয়া ঃ সরকারি ও উচ্চমানের কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া মালয়েশিয়ার প্রায় বেশির ভাগ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সহজেই ভর্তি হওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে সব জায়গায় আইইএলটিএসও প্রয়োজন হয় না। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৬.০ স্কোর ও নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর চায়।
যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করতে চান, সরাসরি সেখানকার ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয় একটি অফার লেটার ইস্যু করে আর সেটা পাঠিয়ে দেয় মালয়েশিয়ার শিক্ষা অধিদপ্তরে। সেখান থেকে ইস্যু করা হয় আপনার অ্যাপ্রুভাল লেটার। এই অ্যাপ্রুভাল লেটার ও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষ হলে আপনাকে ৩ মাসের ভিসা দেওয়া হবে।