প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তান সত্যিই যুদ্ধে জড়াবে কি না- তার আভাসের জন্য আগামী দু’তিন দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ। দেশবাসীকে এ ইস্যুতে মানসিকভাবে ‘প্রস্তুত’ থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তা এক সময় যুদ্ধে পর্যবসিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন ভারত-পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফও এমন আশঙ্কা করছেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন’ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
তার এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পর পাকিস্তানের দু’টি সংবাদমাধ্যম সামা টিভি ও জিও নিউজ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ইস্যুতে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে চায়। জিও নিউজকে তিনি বলেন, আগামী দু’-তিন দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সত্যিই কিছু ঘটে কিংবা শুরু হয়, তাহলে আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যে তা হবে; আর যদি এই সময়সীমার মধ্যে কিছু না ঘটে- তাহলে বুঝে নিতে হবে যে একটি বড় বিপদ আমরা এড়াতে পেরেছি।
আর সামা টিভিকে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে একটি যুদ্ধের আশঙ্কা দানা বাঁধছে এবং আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের সবারই এখন মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন।
গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলাকারীরা অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের গুলিতে আরো বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। ভয়াবহ এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত এবং তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সিন্ধু নদের পানিবন্টন চুক্তি স্থগিতসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও। এছাড়া কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গত তিন দিন ধরে গুলি বিনিময় চলছে। বেশ কয়েকজন ইতোমধ্যে নিহতও হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই রোববার রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন খাজা আসিফ এবং ‘ভারতের সামরিক হামলা আসন্ন’ বলে মন্তব্য করেন। সূত্র: ডন
ভারতের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের: পাকিস্তানের সেনাবাহিনী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর দেশটির আকাশসীমা লঙ্ঘনের কারণে ভারতের একটি কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ভিম্বার জেলার মানাওয়ার সেক্টরে ওই কোয়াডকপ্টার ভূপাতিত করা হয়েছে বলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের দাবি, কোয়াডকপ্টারটি সীমান্তের ওপার থেকে নজরদারি চালানোর চেষ্টা করছিল। তখনই পাকিস্তানি সেনারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সেটিকে গুলি করে নামিয়ে আনে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাবি করেন, যথা সময়ে নেওয়া পদক্ষেপের ফলে ভারতের গুপ্তচরচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির প্রমাণ। কর্মকর্তারা বলেন, সীমান্তে যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে।