ঢাকা ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

দুর্যোগের পর ভবনে তল্লাশি চালাবে উড়ুক্কু রোবট

  • আপডেট সময় : ১২:১২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : দুর্যোগের পর পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে স্বয়ংক্রিয় এরিয়াল রোবটের অনুসন্ধান ও বিভিন্ন রোবটের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন গবেষকরা। যেটি প্রথম উদ্ধারকারীদের জন্য তথ্য সংগ্রহ ও দুর্যোগের পরে আরও ভালভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে পারে বলে দাবি গবেষকদের। প্রতি বছর গোটা বিশ্বে আনুমানিক একশটি ভূমিকম্প ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। এই ক্ষতির মধ্যে আছে ভবন ধসে পড়া, বৈদ্যুতিক লাইন উপড়ে পড়া ও আরও অনেক কিছু। শুরুতেই উদ্ধারকারীদের জন্য এ পরিস্থিতির সামাল দেওয়া ও উদ্ধার অভিযানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
“যে কোনো দুর্যোগ পরবর্তী অভিযানে অপ্রয়োজনীয় বিষয় এড়ানোই ছিল এ গবেষণার মূল লক্ষ্য,” বলেছেন ‘কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি’র ‘রোবোটিক্স ইনস্টিটিউট’-এর পিএইচডি শিক্ষার্থী সিউংচান কিম।

“যেহেতু এমন পরিস্থিতে অনেকগুলো রোবট একসঙ্গে কাজ করবে তাই এদের একে অপরের মধ্যে সমন্বয় ও যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এমন পদ্ধতি নকশা করেছি, যাতে প্রতিটি রোবট ভবনের বিভিন্ন ঘরে অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যেতে পারে। কার্যকার উপায়ে কাজটি করার জন্য রোবটের সঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যক ড্রোনও আছে।”
পরিত্যাক্ত ভবনের বিভিন্ন দরজা শনাক্ত করার উপর নজর দেবে এসব ড্রোন। কারণ, ভবনের করিডোরের পরিবর্তে ঘরের ভেতরেই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর থাকার সম্ভাবনা বেশি। এসব লক্ষ্যবস্তুর দিকে যাওয়ার পথ খুঁজে পেতে এক ধরনের ‘অনবোর্ড লিডার সেন্সর’ ব্যবহার করে আশপাশের বিভিন্ন জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগায় রোবটগুলো। ঘরের মেঝে থেকে প্রায় ছয় ফুট উচ্চতায় ধীরগতিতে ঘোরাফেরা করে ‘থ্রিডি লিডার পয়েন্ট ক্লাউড’ তথ্যকে ‘টুডি ট্রান্সফর্ম’ মানচিত্রে রূপান্তর করে এসব এরিয়াল রোবট। এ মানচিত্রটি কোষ বা পিক্সেল দিয়ে তৈরি ছবির মাধ্যমে ঘরের অবস্থানের নকশা দেয় রোবটকে। ফলে কাঠামোগত বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে রোবটগুলো বুঝতে পারে কোনটি দরজা ও কোনটি ভবনের কক্ষ। এখানে গবেষকরা ভবনের বিভিন্ন দরজাকে ‘স্যাডল পয়েন্ট’ হিসাবে মডেল করেন, যা রোবটটিকে বিভিন্ন পথ খুঁজে পেতে ও এর মধ্যে দিয়ে দ্রুত যেতে সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে রোবটটি বৃত্তাকার পথ অনুসরণ করবে। প্রধানত দুটি কারণে ক্যামেরার উপর একটি ‘লিডার সেন্সর’ বসিয়েছেন গবেষকরা, বলেন কিম। প্রথম কারণ, ক্যামেরার চেয়ে কম কম্পিউটিং শক্তি ব্যবহার করে সেন্সর। আরেকটি কারণ, ধসে পড়া ভবনের ভেতরে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ জায়গায় ধুলাবালি বা ধোঁয়া থাকতে পারে, যা প্রচলিত ক্যামেরার ‘দৃষ্টিসক্ষমতা’ নষ্ট করে দেয়। এসব রোবটকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না বরং প্রতিটি রোবট নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরিবেশ সম্পর্কে বোঝাপড়া ও অন্যান্য রোবটের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুকে বেছে নিতে পারে। ভবনের ভেতর শনাক্ত করা বিভিন্ন দরজা ও ঘরের তালিকার তথ্য একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করে নেয় এসব রোবট। এমনকি এরইমধ্যে খোঁজ মিলেছে এমন বিভিন্ন এলাকা আবার খুঁজে দেখার ঝামেলা এড়ানোর বেলায়ও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রোবটগুলো। এ গবেষণাটি উপস্থাপিত হয়েছে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ‘২০২৪ আইইইই ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন রোবোটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন’-এ। এতে অবদান রেখেছেন ‘কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি সিডনি’র গবেষকরা।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দুর্যোগের পর ভবনে তল্লাশি চালাবে উড়ুক্কু রোবট

আপডেট সময় : ১২:১২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : দুর্যোগের পর পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে স্বয়ংক্রিয় এরিয়াল রোবটের অনুসন্ধান ও বিভিন্ন রোবটের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন গবেষকরা। যেটি প্রথম উদ্ধারকারীদের জন্য তথ্য সংগ্রহ ও দুর্যোগের পরে আরও ভালভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে পারে বলে দাবি গবেষকদের। প্রতি বছর গোটা বিশ্বে আনুমানিক একশটি ভূমিকম্প ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। এই ক্ষতির মধ্যে আছে ভবন ধসে পড়া, বৈদ্যুতিক লাইন উপড়ে পড়া ও আরও অনেক কিছু। শুরুতেই উদ্ধারকারীদের জন্য এ পরিস্থিতির সামাল দেওয়া ও উদ্ধার অভিযানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
“যে কোনো দুর্যোগ পরবর্তী অভিযানে অপ্রয়োজনীয় বিষয় এড়ানোই ছিল এ গবেষণার মূল লক্ষ্য,” বলেছেন ‘কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি’র ‘রোবোটিক্স ইনস্টিটিউট’-এর পিএইচডি শিক্ষার্থী সিউংচান কিম।

“যেহেতু এমন পরিস্থিতে অনেকগুলো রোবট একসঙ্গে কাজ করবে তাই এদের একে অপরের মধ্যে সমন্বয় ও যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এমন পদ্ধতি নকশা করেছি, যাতে প্রতিটি রোবট ভবনের বিভিন্ন ঘরে অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যেতে পারে। কার্যকার উপায়ে কাজটি করার জন্য রোবটের সঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যক ড্রোনও আছে।”
পরিত্যাক্ত ভবনের বিভিন্ন দরজা শনাক্ত করার উপর নজর দেবে এসব ড্রোন। কারণ, ভবনের করিডোরের পরিবর্তে ঘরের ভেতরেই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর থাকার সম্ভাবনা বেশি। এসব লক্ষ্যবস্তুর দিকে যাওয়ার পথ খুঁজে পেতে এক ধরনের ‘অনবোর্ড লিডার সেন্সর’ ব্যবহার করে আশপাশের বিভিন্ন জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগায় রোবটগুলো। ঘরের মেঝে থেকে প্রায় ছয় ফুট উচ্চতায় ধীরগতিতে ঘোরাফেরা করে ‘থ্রিডি লিডার পয়েন্ট ক্লাউড’ তথ্যকে ‘টুডি ট্রান্সফর্ম’ মানচিত্রে রূপান্তর করে এসব এরিয়াল রোবট। এ মানচিত্রটি কোষ বা পিক্সেল দিয়ে তৈরি ছবির মাধ্যমে ঘরের অবস্থানের নকশা দেয় রোবটকে। ফলে কাঠামোগত বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে রোবটগুলো বুঝতে পারে কোনটি দরজা ও কোনটি ভবনের কক্ষ। এখানে গবেষকরা ভবনের বিভিন্ন দরজাকে ‘স্যাডল পয়েন্ট’ হিসাবে মডেল করেন, যা রোবটটিকে বিভিন্ন পথ খুঁজে পেতে ও এর মধ্যে দিয়ে দ্রুত যেতে সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে রোবটটি বৃত্তাকার পথ অনুসরণ করবে। প্রধানত দুটি কারণে ক্যামেরার উপর একটি ‘লিডার সেন্সর’ বসিয়েছেন গবেষকরা, বলেন কিম। প্রথম কারণ, ক্যামেরার চেয়ে কম কম্পিউটিং শক্তি ব্যবহার করে সেন্সর। আরেকটি কারণ, ধসে পড়া ভবনের ভেতরে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ জায়গায় ধুলাবালি বা ধোঁয়া থাকতে পারে, যা প্রচলিত ক্যামেরার ‘দৃষ্টিসক্ষমতা’ নষ্ট করে দেয়। এসব রোবটকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না বরং প্রতিটি রোবট নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরিবেশ সম্পর্কে বোঝাপড়া ও অন্যান্য রোবটের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুকে বেছে নিতে পারে। ভবনের ভেতর শনাক্ত করা বিভিন্ন দরজা ও ঘরের তালিকার তথ্য একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করে নেয় এসব রোবট। এমনকি এরইমধ্যে খোঁজ মিলেছে এমন বিভিন্ন এলাকা আবার খুঁজে দেখার ঝামেলা এড়ানোর বেলায়ও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রোবটগুলো। এ গবেষণাটি উপস্থাপিত হয়েছে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ‘২০২৪ আইইইই ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন রোবোটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন’-এ। এতে অবদান রেখেছেন ‘কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি সিডনি’র গবেষকরা।