ঢাকা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

দুর্নীতির দায়ে সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপালের ৮ বছরের সাজা

  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরখাস্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিককে দুর্নীতির দায়ে দুটি ধারায় মোট আট বছরের কারাদ- দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম গতকাল রোববার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। অপরাধমূলক অসদাচারণ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি ধারায় পার্থ গোপাল বণিককে ৫ বছর ও ৩ বছরের কারাদ- দেওয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, যা না দিলে তাকে আরও ৩ মাস জেল খাটতে হবে। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তাকে সব মিলিয়ে সাজা খটতে হবে ৫ বছর। এর মধ্যে থেকে হাজতবাসকালীন সময় বাদ যাবে।
বরখাস্ত হওয়ার আগে পার্থ গোপাল বণিক ছিলেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি (প্রিজন্স)। ২০১৯ সালে তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের পর এই মামলা দায়ের করে দুদক। সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ‘ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ ওই অর্থ তিনি পকেটে ভরেছেন এবং নিজের বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল। তাকে অপরাধমূলক অসদাচারণ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করলেও মুদ্রাপাচার এবং ঘুষ নেওয়ার দুই অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
সাবেক এই কারা কর্মকর্তার বাসা থেকে জব্দ করা ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৬৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা ‘অবৈধ উপার্জন’ হিসাবে বিবেচনা করে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে রায়ে। বাকি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ‘বৈধ উপার্জন’ হিসেবে বিবেচনা করে পার্থকে তা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে পার্থ গোপালের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, যে দুই ধারায় সাজা দেওয়া হল, তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
বিচারক প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে রায় পড়ার সময় কাঠগড়ায় থাকা পার্থকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। রায়ের পর তিনিও আপিল করার কথা বলেছেন। পার্থর স্ত্রী চন্দ্রা বণিকও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। রায়ের পর পার্থর জন্য কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা (ডিভিশন) চেয়ে আবেদন করে তার আইনজীবী। শুনানি শেষে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেন।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ফেনসিডিলসহ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন থেকে গ্রেপ্তার হন চট্টগ্রামের তখনকার জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। সে সময় তিনি গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের ঘুষ বাণিজ্যের পেছনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সেখানকার তৎকালীন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিকের নাম বলেন।
ওই তথ্যের সূত্র ধরে দুদকের অনুসন্ধানী দল পার্থ গোপালকে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই তার ভূতেরগলির ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করার কথা জানায় দুদক।
দুদকের কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, উদ্ধার হওয়া টাকার মধ্যে পার্থের ফ্ল্যাটের দেয়াল কেবিনেটে গেঞ্জিতে মোড়ানো ছিল ৫০ লাখ টাকা। একটি স্কুল ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় বাকি ৩০ লাখ টাকা। আটকের সময় পার্থ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, এই ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা তার শাশুড়ি দিয়েছেন, বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারা জীবনের জমানো টাকা। ফ্ল্যাটের নিচে থাকা তার ব্যবহারের গাড়িটির মালিকও তিনি নন, তার বন্ধুর গাড়ি ব্যবহার করেন। যে ফ্ল্যাটে থাকেন তাও তার শাশুড়ির বলে দাবি করেছিলেন তিনি। পরদিন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। পার্থ গোপাল বণিককে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর ২০২০ সালের অগাস্ট মাসে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
সেখানে বলা হয়, “পার্থ গোপাল বণিক সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেন। এসব টাকা গোপন করে তার নামীয় কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পাচারের জন্য নিজ বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে দ-বিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।”
২০১৪ সালে পদোন্নতি পেয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক হওয়ার পর পার্থ গোপাল বণিকের বেতন স্কেল হয় ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তার বাসায় পাওয়া অর্থ ওই বেতন স্কেলের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। তিনি কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা তোলেননি, কখনও ওই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি। তবে পার্থর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী যুক্তিতর্ক শুনানিতে বলেছিলেন, “যে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের কথা বলা হচ্ছে, সেটা তার ও তার মায়ের নামের টাকা। তার টাকা ৫০ লাখ, অবশিষ্ট টাকা মায়ের। এটা বৈধভাবে উপার্জিত।
“জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের বিবরণের সঙ্গে জ্ঞাত আয় ও তার উৎস কী- এটা মামলার কাগজপত্রে থাকা উচিত । না থাকলে সেটা আইনসম্মত নয়।”
২০২০ সালের ৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে পার্থ গোপালের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। সে সময় পার্থ জামিনে থাকলেও পরে হাই কোর্টে তা বাতিল করে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে তিনি সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির দায়ে সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপালের ৮ বছরের সাজা

আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরখাস্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিককে দুর্নীতির দায়ে দুটি ধারায় মোট আট বছরের কারাদ- দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম গতকাল রোববার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। অপরাধমূলক অসদাচারণ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি ধারায় পার্থ গোপাল বণিককে ৫ বছর ও ৩ বছরের কারাদ- দেওয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, যা না দিলে তাকে আরও ৩ মাস জেল খাটতে হবে। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তাকে সব মিলিয়ে সাজা খটতে হবে ৫ বছর। এর মধ্যে থেকে হাজতবাসকালীন সময় বাদ যাবে।
বরখাস্ত হওয়ার আগে পার্থ গোপাল বণিক ছিলেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি (প্রিজন্স)। ২০১৯ সালে তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের পর এই মামলা দায়ের করে দুদক। সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ‘ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ ওই অর্থ তিনি পকেটে ভরেছেন এবং নিজের বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল। তাকে অপরাধমূলক অসদাচারণ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করলেও মুদ্রাপাচার এবং ঘুষ নেওয়ার দুই অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
সাবেক এই কারা কর্মকর্তার বাসা থেকে জব্দ করা ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৬৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা ‘অবৈধ উপার্জন’ হিসাবে বিবেচনা করে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে রায়ে। বাকি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ‘বৈধ উপার্জন’ হিসেবে বিবেচনা করে পার্থকে তা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে পার্থ গোপালের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, যে দুই ধারায় সাজা দেওয়া হল, তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
বিচারক প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে রায় পড়ার সময় কাঠগড়ায় থাকা পার্থকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। রায়ের পর তিনিও আপিল করার কথা বলেছেন। পার্থর স্ত্রী চন্দ্রা বণিকও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। রায়ের পর পার্থর জন্য কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা (ডিভিশন) চেয়ে আবেদন করে তার আইনজীবী। শুনানি শেষে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেন।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ফেনসিডিলসহ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন থেকে গ্রেপ্তার হন চট্টগ্রামের তখনকার জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। সে সময় তিনি গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের ঘুষ বাণিজ্যের পেছনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সেখানকার তৎকালীন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিকের নাম বলেন।
ওই তথ্যের সূত্র ধরে দুদকের অনুসন্ধানী দল পার্থ গোপালকে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই তার ভূতেরগলির ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করার কথা জানায় দুদক।
দুদকের কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, উদ্ধার হওয়া টাকার মধ্যে পার্থের ফ্ল্যাটের দেয়াল কেবিনেটে গেঞ্জিতে মোড়ানো ছিল ৫০ লাখ টাকা। একটি স্কুল ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় বাকি ৩০ লাখ টাকা। আটকের সময় পার্থ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, এই ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা তার শাশুড়ি দিয়েছেন, বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারা জীবনের জমানো টাকা। ফ্ল্যাটের নিচে থাকা তার ব্যবহারের গাড়িটির মালিকও তিনি নন, তার বন্ধুর গাড়ি ব্যবহার করেন। যে ফ্ল্যাটে থাকেন তাও তার শাশুড়ির বলে দাবি করেছিলেন তিনি। পরদিন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। পার্থ গোপাল বণিককে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর ২০২০ সালের অগাস্ট মাসে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
সেখানে বলা হয়, “পার্থ গোপাল বণিক সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেন। এসব টাকা গোপন করে তার নামীয় কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পাচারের জন্য নিজ বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে দ-বিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।”
২০১৪ সালে পদোন্নতি পেয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক হওয়ার পর পার্থ গোপাল বণিকের বেতন স্কেল হয় ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তার বাসায় পাওয়া অর্থ ওই বেতন স্কেলের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। তিনি কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা তোলেননি, কখনও ওই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি। তবে পার্থর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী যুক্তিতর্ক শুনানিতে বলেছিলেন, “যে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের কথা বলা হচ্ছে, সেটা তার ও তার মায়ের নামের টাকা। তার টাকা ৫০ লাখ, অবশিষ্ট টাকা মায়ের। এটা বৈধভাবে উপার্জিত।
“জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের বিবরণের সঙ্গে জ্ঞাত আয় ও তার উৎস কী- এটা মামলার কাগজপত্রে থাকা উচিত । না থাকলে সেটা আইনসম্মত নয়।”
২০২০ সালের ৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে পার্থ গোপালের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। সে সময় পার্থ জামিনে থাকলেও পরে হাই কোর্টে তা বাতিল করে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে তিনি সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।