ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

দুর্ঘটনার চেয়ে গুলিতে বেশি মরছে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা

  • আপডেট সময় : ১১:১৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২
  • ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে বন্দুকের গুলি।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালে কোভিড মহামারীর শুরুর বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ হাজার ৩০০ শিশুর মৃত্যু ঘটে বন্দুক হামলা সংক্রান্ত কারণে।
আইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সুযোগ প্রায় অবাধ বলে যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কোটি নাগরিকের হাতে ৩৯ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি বিভিন্ন সময়ে উঠলেও অস্ত্র নির্মাতাদের চাপে তাতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর মহামারীর মধ্যে বন্দুক সহিংসতা বেড়ে যায়।
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে আ্গ্েনয়াস্ত্রের কারণে ১ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু আগের বছরের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
বিগত বছরগুলোতে তরুণ আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা, এরপরে ছিল বন্দুকজনিত মৃত্যু।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমেছে, ২০২০ সাথে ১৯ বছররে নিচে আনুমানিক ৩ হাজার ৯০০ আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে।
২০২০ সালে বন্দুক সহিসংসতায় মোট মিলিয়ে ৪৫ হাজার ২২২ জন আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। দুই দশক আগের তুলনায় গত কয়েক বছরে এই মৃত্যু ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
সিডিসির গবেষণা অনুযায়ী, শিশু-কিশোরদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সার্বিক প্রাণহানির হার ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে হত্যার পাশাপাশি রয়েছে আত্মহত্যা, অবহেলাজনিত ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু।
এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে গুলিতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “যে মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়, সেই মৃত্যু থেকে আমরা আমাদের শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছি।”
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে এবং জাতিগত জনসংখ্যা জুড়ে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে বন্দুকজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে। কালো আমেরিকানদের মধ্যে এই হার বেশি বেড়েছে।
অল্পবয়সীদের মৃত্যু হার বেড়ে যাওয়ার আরও দুটো কারণ হল অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক সেবন এবং বিষক্রিয়া; এই দুই কারণে মৃত্যু বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
চলতি বছরে এপ্রিলের শুরুতে আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব কারণে ২০১৯ সালে ৪৯২ জন তরুণের মৃত্যু হয়, এর পরের বছরই এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫৪ জনে।
আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ স্পষ্ট না হলেও গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, “অনুমান করা যায় যে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যু আগামীতে প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসবে।”
ফেব্রুয়ারিতে অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত পৃথক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক (যা জনসংখ্যার ৩ শতাংশেরও কম) প্রথমবারের মতো আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক হয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে ৫০ লাখ শিশুসহ ১ কোটি ১০ লাখ মানুষকে বাড়ির ভেতরেই আগ্নেয়াস্ত্রের মুখোমুখি করেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

দুর্ঘটনার চেয়ে গুলিতে বেশি মরছে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা

আপডেট সময় : ১১:১৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে বন্দুকের গুলি।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালে কোভিড মহামারীর শুরুর বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ হাজার ৩০০ শিশুর মৃত্যু ঘটে বন্দুক হামলা সংক্রান্ত কারণে।
আইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সুযোগ প্রায় অবাধ বলে যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কোটি নাগরিকের হাতে ৩৯ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি বিভিন্ন সময়ে উঠলেও অস্ত্র নির্মাতাদের চাপে তাতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর মহামারীর মধ্যে বন্দুক সহিংসতা বেড়ে যায়।
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে আ্গ্েনয়াস্ত্রের কারণে ১ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু আগের বছরের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
বিগত বছরগুলোতে তরুণ আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা, এরপরে ছিল বন্দুকজনিত মৃত্যু।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমেছে, ২০২০ সাথে ১৯ বছররে নিচে আনুমানিক ৩ হাজার ৯০০ আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে।
২০২০ সালে বন্দুক সহিসংসতায় মোট মিলিয়ে ৪৫ হাজার ২২২ জন আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। দুই দশক আগের তুলনায় গত কয়েক বছরে এই মৃত্যু ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
সিডিসির গবেষণা অনুযায়ী, শিশু-কিশোরদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সার্বিক প্রাণহানির হার ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে হত্যার পাশাপাশি রয়েছে আত্মহত্যা, অবহেলাজনিত ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু।
এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে গুলিতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “যে মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়, সেই মৃত্যু থেকে আমরা আমাদের শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছি।”
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে এবং জাতিগত জনসংখ্যা জুড়ে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে বন্দুকজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে। কালো আমেরিকানদের মধ্যে এই হার বেশি বেড়েছে।
অল্পবয়সীদের মৃত্যু হার বেড়ে যাওয়ার আরও দুটো কারণ হল অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক সেবন এবং বিষক্রিয়া; এই দুই কারণে মৃত্যু বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
চলতি বছরে এপ্রিলের শুরুতে আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব কারণে ২০১৯ সালে ৪৯২ জন তরুণের মৃত্যু হয়, এর পরের বছরই এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫৪ জনে।
আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ স্পষ্ট না হলেও গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, “অনুমান করা যায় যে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যু আগামীতে প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসবে।”
ফেব্রুয়ারিতে অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত পৃথক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক (যা জনসংখ্যার ৩ শতাংশেরও কম) প্রথমবারের মতো আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক হয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে ৫০ লাখ শিশুসহ ১ কোটি ১০ লাখ মানুষকে বাড়ির ভেতরেই আগ্নেয়াস্ত্রের মুখোমুখি করেছে।