ঢাকা ০১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে ভারতে গেলো সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

  • আপডেট সময় : ১১:১৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

বেনাপোল সংবাদদাতা: এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানের ইলিশ আমদানি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল।

অপর দিকে বাংলাদেশ থেকে ৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং।

জানা যায়, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে মোট ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে এ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশের পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।

জানা যায়, গত বছর ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রপ্তানি হয় এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ। যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রপ্তানি আদেশের ৪৪ ভাগ। অনেক প্রতিষ্ঠান মাছ না পেয়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবারও মাছ সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে সব মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হবে না বলে জানান মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস।

এ বিষয়ে ভারতের ফিস্ ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ইলিশের পরিমাণটা একটু বাড়বে। তবে বাংলাদেশেও ইলিশের উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। হয়ত সে কারণেই ইলিশের পরিমাণ কম আসছে।

তিনি আরো বলেন, যাই হোক পূজার আগে ভারতের বাঙালিরা পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে। এজন্য এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশ সরকারের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মাছ প্রেমীদের জন্য একটি সুস্বাদু খাবার।

এদিকে প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুর্গোৎসবে ভারতের বাঙালিদের এই মাছের স্বাদ দিতে বিশেষ বিবেচনায় গত বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি ছিল ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ মেট্রিক টন। ২০২৩ সালে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে ৩৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের অনুকূলে বেনাপোল দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ দশমিক ২৪ টন। ২০২২ সালে ৫৯ প্রতিষ্ঠানকে ২৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১৩০০ টন। ২০২১ সালে ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দেয় সরকার। রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৬৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ। ২০২০ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক হাজার ৪৫০ টন এবং ২০১৯ সালে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। ওই বছর রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৬ মেট্রিক টন ইলিশ।

এসি/আপ্র/১৭/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সংসদ নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে গণভোট করার পরামর্শ

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে ভারতে গেলো সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

আপডেট সময় : ১১:১৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বেনাপোল সংবাদদাতা: এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানের ইলিশ আমদানি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল।

অপর দিকে বাংলাদেশ থেকে ৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং।

জানা যায়, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে মোট ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে এ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশের পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।

জানা যায়, গত বছর ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রপ্তানি হয় এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ। যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রপ্তানি আদেশের ৪৪ ভাগ। অনেক প্রতিষ্ঠান মাছ না পেয়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবারও মাছ সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে সব মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হবে না বলে জানান মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস।

এ বিষয়ে ভারতের ফিস্ ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ইলিশের পরিমাণটা একটু বাড়বে। তবে বাংলাদেশেও ইলিশের উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। হয়ত সে কারণেই ইলিশের পরিমাণ কম আসছে।

তিনি আরো বলেন, যাই হোক পূজার আগে ভারতের বাঙালিরা পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে। এজন্য এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশ সরকারের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মাছ প্রেমীদের জন্য একটি সুস্বাদু খাবার।

এদিকে প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুর্গোৎসবে ভারতের বাঙালিদের এই মাছের স্বাদ দিতে বিশেষ বিবেচনায় গত বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি ছিল ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ মেট্রিক টন। ২০২৩ সালে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে ৩৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের অনুকূলে বেনাপোল দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ দশমিক ২৪ টন। ২০২২ সালে ৫৯ প্রতিষ্ঠানকে ২৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১৩০০ টন। ২০২১ সালে ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দেয় সরকার। রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৬৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ। ২০২০ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক হাজার ৪৫০ টন এবং ২০১৯ সালে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। ওই বছর রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৬ মেট্রিক টন ইলিশ।

এসি/আপ্র/১৭/০৯/২০২৫