নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে গুলি করার অভিযোগে সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা সবাই শীর্ষসন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সহযোগী বলে গোয়েন্দা পুলিশের দাবি। “গ্রেপ্তাররা চিহ্নিত সন্ত্রাসী জিসানের ক্যাডার বলে স্বীকার করে এবং তদন্তে জিসানের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়,” বলেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার। গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোতে ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত। জিসান আহমেদ।২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা শীর্ষসন্ত্রাসীর তালিকায় থাকা জিসানকে গ্রেপ্তারে ২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকা-ে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর জিসান গা ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। ২০১৯ সালে দুবাইয়ে জিসান গ্রেপ্তার হন বলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তখন জিসানকে দেশে আনতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বললেও পরে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। জিসানের কোনো খবরও মেলেনি। এর দুই বছর পর জিসানের সহযোগী হিসেবে ঢাকায় গ্রেপ্তার হলেন- মো. নাসির, কাওছার আহমেদ ইমন, মোহাম্মদ জীবন হোসেন, মো. ওমর খৈয়াম নিরু, ফারহান মাসুদ সোহান, মো. আসলাম ও মো. মহিন উদ্দিন জালাল। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার ঢাকার রামপুরা থেকে প্রথমে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর বাড্ডা ও বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বাকিদের। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩ রাউন্ড গুলি এবং ছয় হাজার ইয়াবা উদ্ধারের কথাও জানানো হয়।
হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ব বাড্ডার আলিফ নগর এলাকার জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খান টুটুলকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে দুই-তিনজন ২১ নভেম্বর বিকালে টুটুলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঢুকে চাঁদার টাকা চায় এবং কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি করে চলে যায়। এরপর তারা আবারও ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। ওই ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা হলে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে। হাফিজ আক্তার বলেন, “দুবাইয়ে অবস্থানরত সন্ত্রাসী জিসান ও তার ভাই শামিম এবং কাশিমপুর কারাগারে থাকা ফাঁসির দ-প্রাপ্ত সন্ত্রাসী মামুনের ক্যাডার ইমন, জীবন এবং নিরুর টাকার প্রয়োজন হলে তারা এলাকার বড় ভাই মহিন উদ্দিন জালালের কাছে গিয়ে তাদেরকে একটি কাজ দেওয়ার জন্য বলে। এরপর মহিনউদ্দিন জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম টুটুলের খোঁজ দেয়। এরপর তারা তাকে টার্গেট করে চাঁদাবাজি করে।”
দুবাইয়ে থাকা শীর্ষসন্ত্রাসী জিসানের ৭ ‘সহযোগী’ দেশে গ্রেপ্তার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ